‘উৎসব’ নির্মাতারা কেন ‘ইনসাফ’ নির্মাতা সঞ্জয়কে ধন্যবাদ দিলেন
Published: 28th, June 2025 GMT
গত পবিত্র ঈদুল আজহায় মুক্তি পেয়েছে তানিম নূরের ‘উৎসব’ আর সঞ্জয় সমাদ্দারের ‘ইনসাফ’। তবে গতকাল শুক্রবার হঠাৎই ‘উৎসব’ সিনেমার অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে ধন্যবাদ জানানো হয় ‘ইনসাফ’ নির্মাতা সঞ্জয় সমাদ্দারকে। কিন্তু কেন?
‘উৎসব’ সিনেমার ফেসবুক পেজ থেকে লেখা হয়, ‘সিনেমাটা আপনারা এই ঈদে সিনেমা হলে দেখতে পারতেন না, যদি পরিচালক সঞ্জয় সমাদ্দার না থাকতেন। ঠিক তা–ই; হয়তো শুনে অবাক লাগছে আপনাদের। সঞ্জয় সমাদ্দার তো “উৎসব” টিমের কোনো কিছুতেই জড়িত ছিলেন না, সে ক্ষেত্রে তিনি না থাকলে “উৎসব” সিনেমা হলে দেখতে না পারার সম্পর্কটা কোথায়?’
দীর্ঘ পোস্টে দেওয়া হয়েছে এর ব্যাখ্যাও। ‘সিনেমার পোস্টপ্রোডাকশনের জন্য এখনো বাংলাদেশের বেশির ভাগ সিনেমাকে যেতে হয় পাশের দেশ ভারতে। এডিটফিক্স নামের প্রতিষ্ঠানে বেশির ভাগ সিনেমার পোস্টপ্রোডাকশনের কাজ চলে। “উৎসব” ও “ইনসাফ”—দুটো সিনেমারই পোস্টপ্রোডাকশনের কাজ সেখানেই চলছিল। “উৎসব” সিনেমার ফাইনাল ভার্সন রেডি হলে ঈদের কয়েক দিন আগে পরিচালক তানিম নূর ও প্রযোজক কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের কলকাতায় যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ভিসাসংক্রান্ত জটিলতায় তারা কলকাতায় যেতে পারলেন না। পুরো “উৎসব” টিমের মাথায় হাত! এখন উপায়? তখনই জানা যায়, সেই মুহূর্তে পরিচালক সঞ্জয় সমাদ্দার কলকাতায় অবস্থান করছেন তাঁর সিনেমা “ইনসাফ”-এর চূড়ান্ত সংস্করণ দেশে আনার জন্য। তাঁকে অনুরোধ করতেই তিনি সানন্দে রাজি হয়ে যান আর “উৎসব”-এর হার্ডড্রাইভটি সঙ্গে করে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন।’ লিখেছে ‘উৎসব’ টিম।
‘উৎসব’ সিনেমার পোস্টার। নির্মাতার সৌজন্যে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইনস ফ
এছাড়াও পড়ুন:
নিষেধাজ্ঞায় থাকা ‘অন্যদিন’ সর্বসাধারণের জন্য মুক্তি জুলাইয়ে
মুক্তি পাচ্ছে নির্মাতা কামার আহমেদ সাইমনের কাঙ্ক্ষিত সিনেমা ‘অন্যদিন’। গত রেজিমের এক দশকে ভেসে বেড়ানো একটি দেশের গল্প নিয়ে নির্মিত ছবিটি সর্বসাধারণের জন্য জু্লাইতে মুক্তি পেতে যাচ্ছে।
সিনেমাটির মুক্তি উপলক্ষে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর সীমান্ত সম্ভারের স্টার সিনেপ্লেক্সে ছবিটির একটি বিশেষ প্রদর্শনী হয়। প্রদর্শনী শেষে অতিথিরা ‘অন্যদিন’ সিনেমার প্রশংসা করেন এবং এতদিন ছবিটি কেন আটকে ছিল সেই প্রশ্নটি যেন ঘুরেফিরে বারবার আসতে থাকে।
‘অন্যদিন’ কামার আহমাদ সাইমন নির্মিতব্য জলত্রয়ীর দ্বিতীয় সিনেমা; যার প্রথম সিনেমা ছিল ‘শুনতে কি পাও’! এই সিনেমা দিয়ে আলোচনায় আসেন কামার। ছবিটির জন্য প্যারিসের জর্জ পম্পিদ্যু সেন্টারে সিনেমা দ্যু রিলে শ্রেষ্ঠ ছবির জন্য গ্রাঁ প্রি এবং মুম্বাই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে স্বর্ণশঙ্খসহ জয় করেন আরও অনেক আন্তর্জাতিক সম্মাননা। এছাড়াও ছবিটি পেয়েছিল জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
প্রদর্শনী শেষে কামার ‘অন্যদিন’ মুক্তির ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘‘একটা ছবিকে গায়েব করা মানে, একজন নির্মাতাকে গুম করে দেওয়া। ২০২৪ সালের জুলাইয়ের আগে ‘অন্যদিন’ দেখানোয় নিষেধাজ্ঞা ছিল। সেই কারণে ঠিক করেছিলাম আর কোনো ছবিই বানাবো না। কিন্তু জুলাই এসে সব ওলট-পালট করে দিল। কাক এবং কবিরা কিন্তু ভূমিকম্প আগে টের পায়, যেকোনো শিল্প মাধ্যমের ক্ষেত্রেই কথাটা খাটে, যদি না শিল্পীরা তাদের আত্মসত্তা বিক্রি করে না দেন। বিগত রেজিমের জন্য ছবিটি প্রফেটিক হয়ে যাওয়ায় তারা আটকে দিয়েছিল ‘অন্যদিন’ অথচ এখন আবার জুলাই এলো বলেই ‘অন্যদিন’ দেখানো যাচ্ছে। সেই জন্য আমরা ঠিক করেছি জুলাইকে উৎসর্গ করে এই জুলাইতেই মুক্তি দিব ‘অন্যদিন।’’
সিনেমার প্রযোজক সারা আফরীন জানান, ‘অন্যদিন’ নিয়ে কান, লোকার্নো, ক্যামডেনের মতো প্রথম সারির অনেক উৎসবপ্রাপ্তি থাকলেও দেশে ছবিটা দেখানোর ব্যাপারে এতদিন নিষেধাজ্ঞা ছিল।
বিশেষ প্রদর্শনী অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ফরিদা আখতার, অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার, মানবাধিকারকর্মী হামিদা হোসেন ও শিরীন হক, কবি ফরহাদ মজহার, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, নাট্যজন জামিল আহমেদ, ব্যারিস্টার সারা হোসেন, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম, অধ্যাপক ড. গীতিআরা নাসরীন, প্রযোজক রেদওয়ান রনি, অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন, অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, মানস চৌধুরী ও সৈয়দ নিজার হোসেইন, স্থপতি শামসুল ওয়ারেস ও জালাল আহমেদ, সাংবাদিক বিধান রিবেরু, এহসান মাহমুদসহ রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতি অঙ্গনের ব্যক্তিবর্গ এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিবৃন্দ।
উল্লেখ্য, ‘অন্যদিন’ ছিল ২০১৭ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসবের অফিসিয়াল সিলেকশন সিনফন্দেশিওনের ছবি। এই ‘অন্যদিন’ ছবির জন্যই ২০১৬ সালে লোকার্নোর পিয়াতজা গ্রান্দায় বাংলাদেশের প্রথম কোনো নির্মাতা হিসেবে ‘ফিচারড ডিরেক্টর’-এর সম্মাননা পেয়েছিলেন কামার আহমাদ সাইমন, সেই সঙ্গে ফ্রান্স থেকে আর্তে ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ। এ ছাড়াও ২০১৪তে সানড্যান্স থেকে গ্রান্ট এওয়ার্ড জয় করে ‘অন্যদিন’।