আরও এক লাখের বেশি দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করবে স্কিলফো
Published: 28th, June 2025 GMT
দেশে বেকারত্ব সমস্যা সমাধানে ২০২৩ সালে ‘স্কুলবহির্ভূত কিশোর-কিশোরীদের জন্য দক্ষতাকেন্দ্রিক সাক্ষরতা’ বা স্কিলফো নামের একটি পাইলট প্রকল্প চালু করেছিল সরকার। ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীদের কর্মক্ষম করে তুলতে প্রকল্পটি নেওয়া হয়। এর আওতায় এখন পর্যন্ত ৬ হাজার ৮০৫ জন প্রশিক্ষণ নিয়েছে। এর মাধ্যমে আরও এক লাখের বেশি কিশোর-কিশোরীকে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ তথ্যগুলো তুলে ধরা হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ইউনিসেফের সহযোগিতায় প্রকল্পটি পরিচালনা করছে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো। সহপরিচালনা করেছে গ্লোবাল পার্টনারশিপ ফর এডুকেশন (জিপিই)।
প্রকল্পের আওতায় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, বিউটি কেয়ার, দরজির কাজ, মোবাইল সার্ভিসিং, গৃহপরিচর্যা, অটোমেকানিকস, অ্যালুমিনিয়াম ফেব্রিকেশন, ফুড অ্যান্ড বেভারেজ সার্ভিসসহ ১৩টি কারিগরি শিক্ষা বিষয়ে বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। গত দুই বছরে কক্সবাজারের নয়টি উপজেলায় প্রকল্পটি কার্যকর করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এখন পর্যন্ত যারা প্রশিক্ষণ নিয়েছে, তাদের ৫৫ শতাংশই কিশোরী। তাদেরই একজন আসমা সামস (১৮)। সপ্তম শ্রেণির পর আর স্কুলে যেতে পারেননি। পাঁচ বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। ২০২৪ সালে বাবা অসুস্থ হয়ে পড়লে আয়ের পথ খুঁজছিলেন আসমা। তখন স্কিলফোর বিষয়ে জানতে পারেন। ছয় মাসের প্রশিক্ষণ শেষে এখন নিজেই প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন।
প্রশিক্ষণ নিয়ে আসমার মতো অনেকেই এখন দক্ষ নাগরিক হয়ে উঠেছেন। প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের প্রায় ৮৫ শতাংশই আয় করছেন।
স্কিলফোর কাজ এবং প্রাপ্তি নিয়ে গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুবাইয়াত মোরশেদ। তিনি বলেন, সমাজ ও পরিবার যাদের বোঝা মনে করত, প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর খুব অল্প সময়েই তাদের অর্থনৈতিক এমনকি মানসিক অবস্থার পরিবর্তন করেছে। তারা আয় করতে পারছে। সবার কাছে যথাযথ সম্মান পাচ্ছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন। তিনি বলেন, ‘বেকারত্ব কমাতে স্কিলফো প্রকল্পটি প্রশংসনীয় কাজ করছে। এটি কারিগরি শিক্ষার প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে সাহায্য করবে। চলতি মাসে প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হলেও দেশের ৬৪টি জেলায় নতুন করে সীমিত পরিসরে প্রশিক্ষণ চালু করা হবে। এর মাধ্যমে এক লাখের বেশি স্কুলবহির্ভূত কিশোর-কিশোরীকে প্রশিক্ষণের আওতায় এনে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলা হবে।’
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, বাংলাদেশের প্রায় ৪০ শতাংশ শিশু মাধ্যমিকের পর পড়াশোনা ছেড়ে দেয়। এই শিশুদের কর্মক্ষম করে তোলা অত্যন্ত জরুরি। স্কিলফো এটা প্রমাণ করে যে এই স্কুলবহির্ভূতদের সঠিক প্রশিক্ষণ, সহায়তা এবং সুযোগ দেওয়ার মাধ্যমে তাদের ক্ষমতায়ন করা যেতে পারে। কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে বাংলাদেশের জনসংখ্যাকে শক্তিতে রূপান্তর করার এটাই সুযোগ।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব (কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ) কে এম কবিরুল ইসলাম। সমাপনী বক্তব্য দেন প্রাথমিক এবং গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আরও এক লাখের বেশি দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করবে স্কিলফো
দেশে বেকারত্ব সমস্যা সমাধানে ২০২৩ সালে ‘স্কুলবহির্ভূত কিশোর-কিশোরীদের জন্য দক্ষতাকেন্দ্রিক সাক্ষরতা’ বা স্কিলফো নামের একটি পাইলট প্রকল্প চালু করেছিল সরকার। ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীদের কর্মক্ষম করে তুলতে প্রকল্পটি নেওয়া হয়। এর আওতায় এখন পর্যন্ত ৬ হাজার ৮০৫ জন প্রশিক্ষণ নিয়েছে। এর মাধ্যমে আরও এক লাখের বেশি কিশোর-কিশোরীকে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ তথ্যগুলো তুলে ধরা হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ইউনিসেফের সহযোগিতায় প্রকল্পটি পরিচালনা করছে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো। সহপরিচালনা করেছে গ্লোবাল পার্টনারশিপ ফর এডুকেশন (জিপিই)।
প্রকল্পের আওতায় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, বিউটি কেয়ার, দরজির কাজ, মোবাইল সার্ভিসিং, গৃহপরিচর্যা, অটোমেকানিকস, অ্যালুমিনিয়াম ফেব্রিকেশন, ফুড অ্যান্ড বেভারেজ সার্ভিসসহ ১৩টি কারিগরি শিক্ষা বিষয়ে বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। গত দুই বছরে কক্সবাজারের নয়টি উপজেলায় প্রকল্পটি কার্যকর করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এখন পর্যন্ত যারা প্রশিক্ষণ নিয়েছে, তাদের ৫৫ শতাংশই কিশোরী। তাদেরই একজন আসমা সামস (১৮)। সপ্তম শ্রেণির পর আর স্কুলে যেতে পারেননি। পাঁচ বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। ২০২৪ সালে বাবা অসুস্থ হয়ে পড়লে আয়ের পথ খুঁজছিলেন আসমা। তখন স্কিলফোর বিষয়ে জানতে পারেন। ছয় মাসের প্রশিক্ষণ শেষে এখন নিজেই প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন।
প্রশিক্ষণ নিয়ে আসমার মতো অনেকেই এখন দক্ষ নাগরিক হয়ে উঠেছেন। প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের প্রায় ৮৫ শতাংশই আয় করছেন।
স্কিলফোর কাজ এবং প্রাপ্তি নিয়ে গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুবাইয়াত মোরশেদ। তিনি বলেন, সমাজ ও পরিবার যাদের বোঝা মনে করত, প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর খুব অল্প সময়েই তাদের অর্থনৈতিক এমনকি মানসিক অবস্থার পরিবর্তন করেছে। তারা আয় করতে পারছে। সবার কাছে যথাযথ সম্মান পাচ্ছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন। তিনি বলেন, ‘বেকারত্ব কমাতে স্কিলফো প্রকল্পটি প্রশংসনীয় কাজ করছে। এটি কারিগরি শিক্ষার প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে সাহায্য করবে। চলতি মাসে প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হলেও দেশের ৬৪টি জেলায় নতুন করে সীমিত পরিসরে প্রশিক্ষণ চালু করা হবে। এর মাধ্যমে এক লাখের বেশি স্কুলবহির্ভূত কিশোর-কিশোরীকে প্রশিক্ষণের আওতায় এনে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলা হবে।’
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, বাংলাদেশের প্রায় ৪০ শতাংশ শিশু মাধ্যমিকের পর পড়াশোনা ছেড়ে দেয়। এই শিশুদের কর্মক্ষম করে তোলা অত্যন্ত জরুরি। স্কিলফো এটা প্রমাণ করে যে এই স্কুলবহির্ভূতদের সঠিক প্রশিক্ষণ, সহায়তা এবং সুযোগ দেওয়ার মাধ্যমে তাদের ক্ষমতায়ন করা যেতে পারে। কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে বাংলাদেশের জনসংখ্যাকে শক্তিতে রূপান্তর করার এটাই সুযোগ।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব (কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ) কে এম কবিরুল ইসলাম। সমাপনী বক্তব্য দেন প্রাথমিক এবং গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সাখাওয়াত হোসাইন।