ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার কয়েকটি হেলিকপ্টার ও আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের দাবি ইউক্রেনের
Published: 29th, June 2025 GMT
রাশিয়ার ক্রিমিয়া অঞ্চলে অবস্থিত কিরোভস্কে বিমানঘাঁটিতে রাতে হামলা চালানোর দাবি করেছে ইউক্রেন। তারা বলছে, এতে রাশিয়ার কয়েকটি হেলিকপ্টার ও একটি আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে।
ইউক্রেনের নিরাপত্তা সংস্থা এসবিইউর বিবৃতিতে বলা হয়, ওই ঘাঁটিতে রাশিয়ার উড়োজাহাজ পরিচালনাকারী ইউনিট, গোলাবারুদের গুদাম ও ড্রোন ছিল। এগুলো ড্রোন হামলার নিশানা করা হয়েছে। এ ছাড়া হামলায় এমআই-৮, এমআই-২৬ ও এমআই-২৮ নামের হেলিকপ্টার এবং পান্তসির-এস১ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও কামানব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে।
এসবিইউর দাবি, ড্রোন হামলার পর সারা রাত ক্রিমিয়ার ওই বিমানঘাঁটিতে একের পর এক বিস্ফোরণ হয়েছে। রাশিয়ার বিমান হামলার প্রস্তুতি বন্ধ করতেই এ হামলা চালানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শত্রুপক্ষকে বুঝতে হবে দামি সামরিক সরঞ্জাম বা গোলাবারুদ কোথাও নিরাপদ নয়—না যুদ্ধক্ষেত্রে, না ক্রিমিয়াতে, এমনকি একেবারে পেছনের ঘাঁটিতেও নয়।’
এদিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত ক্রিমিয়ার আকাশে ৪০টির বেশি ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করেছে তারা।
ইউক্রেনের ওদেসা অঞ্চলের গভর্নর ওলেগ কিপার বলেন, একটি আবাসিক ভবনে ড্রোন হামলায় কয়েকজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ১৪ জন। এর মধ্যে ৩টি শিশু রয়েছে।
ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় খেরসনের গভর্নর ওলেক্সান্দর প্রোকুদিন বলেন, ২৪ ঘণ্টায় রাশিয়ার হামলায় সেখানে একজন নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন। তিনি বলেন, রুশ সেনারা এলাকার গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো, জনসাধারণের ব্যবহারের জায়গা ও বাসাবাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছেন।
আরও পড়ুনইউক্রেনের শহর দখলে লক্ষাধিক রুশ সেনার সমাবেশ: কিয়েভ ১১ ঘণ্টা আগেরুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, তারা পূর্ব ইউক্রেনের দোনেৎস্ক অঞ্চলের চেরভোনা জিরকা নামের একটি গ্রাম দখলে নিয়েছে। ২০২২ সালের এক বিতর্কিত নির্বাচনের পর থেকে মস্কো এ এলাকাকে নিজের বলে দাবি করে আসছে।
এদিকে চলতি মাসে তুরস্কে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সরাসরি শান্তি আলোচনার চেষ্টা করা হলেও কোনো সমঝোতা হয়নি।
আরও পড়ুনপুতিন কি পুরো ইউক্রেনকে রাশিয়ার অংশ করতে চান১৯ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউক র ন র
এছাড়াও পড়ুন:
গাজা নগরীর পথে ইসরায়েলি ট্যাংক, পালাচ্ছেন বাসিন্দারা
ফিলিস্তিনের গাজায় অভিযানের পরিসর আরও বাড়িয়েছে ইসরায়েল। এবার গাজা নগরী দখলে নিতে স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে এই নগরীর ১০ লাখ বাসিন্দার জীবন ঝুঁকিতে পড়েছে। ইতিমধ্যে গাজা নগরীর পূর্বাঞ্চল থেকে বাসিন্দারা বাড়িঘর ছাড়তে শুরু করেছেন। বিমান হামলার শব্দ শোনা যাচ্ছে, তাল আল-হাওয়ার দক্ষিণাঞ্চল দিয়ে এগিয়ে আসছে ট্যাংক।
এদিকে ইসরায়েলের হামলায় ২৪ ঘণ্টায় আরও ১২৩ জন নিহত হয়েছেন বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বুধবার জানিয়েছে। তাঁদের মধ্যে ত্রাণ নিতে যাওয়া ২১ ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিও রয়েছেন।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বুধবার বলেছে, তারা গাজা উপত্যকায় নতুন অভিযানের রূপরেখা অনুমোদন দিয়েছে। গাজার সবচেয়ে বড় নগরী দখলে নিতে ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার আহ্বান জানানোর কয়েক দিন পর সামরিক বাহিনী নতুন এ অভিযান অনুমোদন করল।
সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর আভিযানিক পরিকল্পনার মূল রূপরেখা অনুমোদন দিয়েছেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আইয়াল জামির।
কবে নাগাদ ইসরায়েলি সেনারা গাজা নগরীতে প্রবেশ করবেন, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা জানায়নি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সরকার। তবে গাজার গণমাধ্যম দপ্তরের মহাপরিচালক ইসমাইল আল-ছাওয়াবতা বুধবার বলেন, গাজা নগরীতে আগ্রাসী অনুপ্রবেশ অব্যাহত রেখেছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী।
২২ মাস ধরে গাজায় আগ্রাসন চালিয়ে আসছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে সেখানকার বেশির ভাগ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। গাজার ২২ লাখ বাসিন্দার বেশির ভাগই দফায় দফায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। প্রায় অর্ধেক বাসিন্দা আশ্রয় নিয়েছেন গাজা নগরীতে।
স্থল অভিযানের বিষয়ে গাজার গণমাধ্যম দপ্তরের মহাপরিচালক আরও বলেন, এসব হামলা পোড়া মাটি নীতি এবং বেসামরিক স্থাপনা পুরোপুরি ধ্বংসের মাধ্যমে নতুন পরিস্থিতি তৈরির মারাত্মক উসকানিরই অংশ।
গাজা নগরীর তাল আল-হাওয়া এলাকার বাসিন্দা সাবাহ ফাতোম (৫১) ওই এলাকায় ব্যাপক বিস্ফোরণ শুনতে পাওয়ার কথা টেলিফোনে বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান। এই নারী বলেন, অনেক বিমান হামলার শব্দ শোনা যাচ্ছে। তাল আল-হাওয়ার দক্ষিণাঞ্চল দিয়ে ট্যাংক এগিয়ে আসছে। আকাশে ড্রোন উড়ছে। বহু মানুষ বাড়িঘর ও তাঁবু ছেড়ে শহরের পশ্চিম দিকে ছুটছেন।
এদিকে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ২৪ ঘণ্টায় আরও ১২৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে বুধবার জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ত্রাণ নিতে যাওয়া ২১ ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিও রয়েছেন। এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টায় আহত হয়েছেন ৪৩৭ জন।
ইসরায়েলি অবরোধের কারণে খাবার না পেয়ে একই সময়ে অনাহারে মারা গেছেন আট ফিলিস্তিনি, তাঁদের মধ্যে তিনজন শিশু। এ নিয়ে অনাহারে ২৩৫ ফিলিস্তিনি মারা গেলেন, যাঁদের মধ্যে ১০৬টি শিশু। এ ছাড়া ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় ৬১ হাজার ৭২২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন দেড় লাখের বেশি।
আরও পড়ুনইসরায়েলি সেনাপ্রধানই কি নেতানিয়াহুর লাগাম টেনে ধরবেন৭ ঘণ্টা আগে