Samakal:
2025-06-29@13:51:30 GMT

‘এক অধিনায়ক’ এখন কোথাও নেই

Published: 29th, June 2025 GMT

‘এক অধিনায়ক’ এখন কোথাও নেই

অভিমানের মেঘ জমতে জমতে যে আষাঢ়ের আকাশ হয়ে আছে, তা বোঝা গিয়েছিল গল টেস্টের পরপরই। কলম্বো টেস্টের আগের দিন সাংবাদিক সম্মেলনে গুঞ্জনটা চাপা দিয়ে রেখেছিলেন মাত্র, টেস্টটি শেষ হতেই বজ্রসহ বৃষ্টি নাজমুল হোসেন শান্তর। ‘আই হেভ সামথিং টু টেল...; বলে চেয়ার ছেড়ে উঠতে যাওয়া সাংবাদিকদের সামনে সংযত ও আত্মমগ্ন অধিনায়ক বলতে থাকলেন। ‘এটা ব্যক্তিগত কোনো কিছু নয়। পুরোপুরি দলের ভালোর জন্যই আমি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই ড্রেসিংরুমে কয়েক বছর ধরে, লম্বা সময় ধরে আমার থাকার সুযোগ হয়েছে। এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত যে তিন জন অধিনায়ক দলের জন্য সমস্যা হতে পারে। দলের ভালোর জন্য এখান থেকে সরে আসছি।’ 

সাকিব-উত্তর ক্রিকেট সাম্রাজ্যে তিন ফরম্যাটে অধিনায়কত্বের যে মুকুট পরেছিলেন বিসিবির বিশ্বাসের ওপর ভর করে, সেটা নিজেই খুলে রাখলেন ভারী মনে করে! একটুও কি ভাবলেন না মেঘের আড়ালে নীল আকাশের কথা। তিনিই তো নেতৃত্ব নিয়ে পাকিস্তানে দুটি টেস্ট জিতে সূর্যের হাসি দেখিয়েছিলেন, তাঁর হাতেই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্রের চাবি দেওয়া হয়েছিল। শুধু ওয়ানডে ফরম্যাটের নেতৃত্ব কেড়ে নেওয়ার জন্যই কি এত তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখাতে হবে? তাও আবার শ্রীলঙ্কায় সিরিজ চলার মাঝে? সামনে ওয়ানডে সিরিজ। এটা কি পেশাদারিত্বের সঙ্গে যায়?

অবশ্য পেশাদারিত্বের ব্যাপারটি দুই পক্ষের মধ্যেই থাকতে হয়। সম্পর্কের ভিতই হলো বিশ্বাস। যেদিন তাঁকে না জানিয়ে ওয়ানডে ফরম্যাটে মেহেদী হাসান মিরাজকে অধিনায়কত্ব করা হলো, সেদিনই বিশ্বাসের জায়গাটি টালমাটাল হয়ে সম্পর্কের ভিত নড়ে যায়। টেস্টে ভালো কিছু করে ‘ছেড়ে দেওয়ার’ মোক্ষম জবাবটাই হয়তো খুঁজছিলেন শান্ত। গল তাঁকে সেই সুযোগ করে দেয়, কিন্তু কলম্বো? যেখানে গতকাল লঙ্কান অধিনায়ককে সাংবাদিক সম্মেলনে তাদের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্টের হিসাব নিয়ে কাটাছেঁড়া করতে দেখা যায়, সেদিন কিনা শান্তর ‘তিন অধিনায়ক’ তত্ত্বের বিরোধিতায় চাপা পড়ে যায় ইনিংস হারের ব্যর্থতা! 

শান্ত বলেছেন, তিনি দলের ভালোর জন্যই এমনটি করেছেন, কিন্তু এটা কী ব্যক্তিসংঘাত নয়? তাঁর জায়গায় অন্য কাউকে নেতৃত্ব দেওয়ায় তিনি যে প্রতিক্রিয়া দেখালেন, তাতে সেই অধিনায়কের মনে কি পাল্টা প্রতিক্রিয়া হবে না? তিনি তো টেস্টে সাকিবের সহ-অধিনায়ক ছিলেন না, তাঁকে যখন সরাসরি অধিনায়ক করা হলো, তখন কি তিনি বিসিবির কাছে প্রক্রিয়া মেনে হয়েছে কিনা জানতে চেয়েছিলেন? কিংবা সেই সহ-অধিনায়কের সঙ্গে কথা বলেছিলেন? 
 
শান্ত কি জানেন না এই মুহূর্তে টেস্টখেলুড়ে কোনো দেশেই ‘এক অধিনায়ক’ নেই। ভারত ও পাকিস্তানে তিন ফরম্যাটে তিন অধিনায়ক। এটা মেনেই যেন তাদের ড্রেসিংরুমের পরিবেশ ফুল বিছানো নয়। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা এমনকি আয়ারল্যান্ডের মতো দলেও সাদা এবং লাল বলের জন্য আলাদা অধিনায়ক। 
এতে পরিশ্রমের পাশাপাশি নির্দিষ্ট ফরম্যাটে গভীর মনোনিবেশের ব্যাপারটিও জড়িয়ে থাকে। তা ছাড়া একক নেতৃত্বের জন্য যে ধরনের লিডারশিপ দরকার মাঠ ও মাঠের বাইরে, তেমন ব্যক্তিত্বের অভাবের কারণেও অনেক সময় দলগুলো ভিন্ন ফরম্যাটে ভিন্ন অধিনায়ক বেছে নেয়। শান্ত নিজেই জানিয়েছিলেন টি২০ অধিনায়কত্ব তিনি ছেড়ে দিয়েছিলেন ব্যাটিংয়ে আরও মনোনিবেশ করার জন্য। তাহলে দুই অধিনায়কে নিশ্চয়ই আপত্তি ছিল না তাঁর, সমস্যাটা কি শুধু তিন অধিনায়কে? 

বিসিবি এবং বাংলাদেশ দল একটা পরিবারের মতোই, সেখানে অভিমান-অভিযোগ থাকতে পারে, দলের স্বার্থে রাগ-অনুরাগ অনেক কিছুরই বিসর্জন দিতে হয়। চ্যালেঞ্জ নিতে হয় সত্যিকারের স্পোর্টস ম্যানের মতোই। সব ছেড়েছুড়ে নীরব থাকা ভালো কি, তাতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ক্ষত তৈরি হয়– একটা সময় রক্তক্ষরণ হয় অবিরত।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ল র জন য ফরম য ট

এছাড়াও পড়ুন:

বন্দরে বিএনপি নেতা মুকুলকে মারধর, অভিযোগের তীর ডন বজলুর দিকে

টেন্ডার নিয়ে বিরোধের জেরে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও বন্দর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুলকে (৬৮) সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি বজলুর রহমান ওরফে ডান বজলু বাহিনী মারধর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

মারধরের এক পর্যায়ে তাকে দিগম্বর করে ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয়।  বজলুর রহমান সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিমের অনুসারী বলে জানা গেছে। রোববার বেলা পৌনে ১টায় বন্দরের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের হরিপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের সামনে মুকুলকে মারধরের এ ঘটনা ঘটে।

আহত সাবেক চেয়ারম্যান মুকুল অভিযোগ করে বলেন, ‘বন্দরের হরিপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের শ্রমিক সরবরাহের একটি টেন্ডার আমরা পেয়েছি। আজকে এই কাজের ওয়ার্ক অর্ডার সিগনেচার করার শেষদিন ছিল। এখানে ঝামেলা হতে পারে এই চিন্তা করে আগেই থানায় জিডি করে রাখি ও সঙ্গে চারজন পুলিশ নিয়ে হরিপুর আসি। 

গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গেই সোনারগাঁয়ের বিএনপি নেতা বজলু ও তার ৪০-৫০ জন লোক আমার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। তারা মারধর করে আমার জামা-কাপড় ছিঁড়ে ফেলে। সেখানে থাকা দুই পুলিশ সদস্যকেও তারা মারধর করে।’

তিনি আরও বলেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ পাওয়ার পর থেকে ডন বজলু ১৫ লাখ টাকা দাবিতে হুমকি দমকি প্রদান করেছিল। এ ঘটনায় বন্দর থানা ও সেনা ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।

অভিযোগের ব্যাপারে সোনারগাঁ থানা বিএনপির সহসভাপতি বজলুর রহমান বলেন, ‘২৭ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের দোসর আলাউদ্দিন একটি ঠিকাদারি নিয়েছে। তার পক্ষ নিয়ে মুকুল এসেছে কাজ করতে। এতে বিক্ষুব্ধ জনতা তাকে হেনস্তা করেছে। আমার এ বিষয়ে কিছু জানা নেই।’

বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, ‘বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি কাজ নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধ থেকে তার (মুকুল) ওপর হামলা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ ছিল, কিন্তু পুলিশ সদস্যদের মারধরের খবর পাইনি। ভুক্তভোগী হাসপাতালে আছেন, সেখান থেকে ফিরে মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন।’

এ বিষয়ে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) তারেক আল মেহেদী বলেন, ‘কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি। এছাড়া তার বিরুদ্ধে কোন মামলা আছে কিনা সে বিষয়টিও আমরা খতিয়ে দেখব। যদি কোন মামলা থাকে তবে সে অনুযায়ী আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব।'
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ