চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে গোসল করানোর সময় মায়ের হাত ফসকে পুকুরে পড়ে যায় সাত বছর বয়সী শিশু জাহিদ। পানিতে ডুবে যাওয়ার প্রায় এক ঘণ্টা পর তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আজ রোববার উপজেলার গাছুয়া ইউনিয়নের নূর আলম মেম্বারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে।

শিশু জাহিদ ওই বাড়ির জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ দুপুর দেড়টার দিকে পুকুরপাড়ে শিশুটিকে গোসল করাচ্ছিলেন তার মা। এ সময় শিশুটি তার মায়ের হাত থেকে ছুটে পানিতে তলিয়ে যায়। তৎক্ষণাৎ চেষ্টা করেও মা আর নাগাল পাননি ছেলের। এর মধ্যেই তাঁর চিৎকারে ছুটে আসেন বাড়ির বাসিন্দা ও প্রতিবেশীরা। কলাগাছ আর চৌকি দিয়ে ভেলা ভাসিয়ে ঝাঁকি জাল নিয়ে পুকুরে নেমে পড়েন তাঁরা। খবর পেয়ে ছুটে আসে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও। বেলা আড়াইটার দিকে শিশুটিকে উদ্ধার করতে সমর্থ হন স্থানীয় উদ্ধারকারী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। দ্রুত শিশুটিকে সন্দ্বীপ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়া নূর আলম মেম্বারের বাড়ির এক বাসিন্দা প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুকুরটি অনেক খাড়া আর গভীর। ভরা বর্ষায় এখন পুকুর ভরা পানি। আমরা ডুব দিয়ে পুকুরের তলা স্পর্শ করতে পারছিলাম না। মার হাত থেকে ছুটে ডুবন্ত শিশুটি ক্রমেই পুকুরের অনেক গভীরে চলে গিয়েছিল।’

সন্দ্বীপ ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন অফিসার মো.

মঈন উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুকুরটি প্রায় ২০ ফুট গভীর। পেশাদার ডুবুরি দল ছাড়া এত গভীরতায় আমাদের পক্ষেও উদ্ধারকাজ করা কষ্টসাধ্য। আমরা দ্রুত উদ্ধারকাজ শুরু করে শিশুটিকে উদ্ধার করেছি।’

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বন্দরে রঞ্জু বাহিনীর সদস্য শহীদা ফের বেপরোয়া, ছাড় পায়নি ৭০ বছরের বৃদ্ধও

কখনো সুমি, কখনো শহীদা,কখনো চুমকি কখনো বা খাইরুন নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন জনকে ব্ল্যাকমেইলিংয়ের মাধ্যমে সর্বশান্ত করে চলেছে ছলনাময়ী এক নারী। সম্প্রতি এমন বিরল এক অভিযোগ মিলেছে নারায়ণগঞ্জ বন্দরের রুস্তমপুর এলাকায়।

শহীদা মূলতঃ নারায়ণগঞ্জের দুর্ধর্ষ ব্ল্যাকমেইল চক্র রঞ্জু ওরফে গালপোড়া রঞ্জু বাহিনীর সদস্য। বিগত ৪বছর আগে র‌্যাব-পুলিশের বিশেষ অভিযানে এই চক্রের প্রায় দুই ডজন সদস্যকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনলেও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছেন রুস্তমপুরের এই ভয়ংকর নারী শহীদা।

শহীদা একাধিক বিয়ের কণে। সে মূলতঃ বিভিন্ন জনের অর্থ-সম্পদের তথ্য জেনে এসব ব্ল্যাকমেইলিং কর্মকান্ড করে থাকে। নিরীহ পুরুষকে সে কৌশলে বশে এনে প্রথমে তার টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেয় পরে সম্পত্তি দখল করে। এরপর কেউ তার বিপক্ষে গেলে তার বিরুদ্ধে বিয়ের ভূয়া কাবিন তৈরি করে আদালতে মামলা ঠুকে দেয়।

এইভাবে সে অগণিত লোকজনকে সর্বশান্ত করেছে। শহিদার কবলে পড়ে সর্বশান্ত হওয়া ওই এলাকার ব্যবসায়ী আব্দুর রশীদ ওরফে গ্লোব রশীদ নামে এক ব্যক্তির খরিদা সম্পত্তি দখলের জন্য ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভূয়া কাবিন বানিয়ে আদালতে ভূয়া মামলা দায়ের করে তাকে জেল খাটায়।

পরবর্তীতে মামলাটি আদালতে শেষ পর্যায়ে গেলে শহীদার প্রকৃত চরিত্র ফুটে ওঠে। ওই মামলায় সে নিজের নাম সুমি আক্তার এবং পিতার সম্রাট মিয়া ও মায়ের নাম দেয়া স্বপ্না বেগম দেয়। সেই সাথে ঠিকানাও ব্যবহার করা হয় পশ্চিম দেওভোগ। ভুক্তভোগী রশীদ মিয়া জানান,শহীদা একজন চরিত্রহীণ। নিজেকে ৩২ বছর সাজিয়ে আমার মতো ৭০ বছরের একজন মানুষকে ধর্ষণ মামলা দেয়।

এ পর্যন্ত তার কমপক্ষে প্রায় অর্ধডজন বিয়ে হয়েছে। তার বর্তমান স্বামী শাহাদাৎ হোসেনকে একই কায়দায় ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে। বেশ কয়েক বছর ধরে সে আমাকে নানাভাবে হয়রানি করে আসছে। কিছুদিন আগে এই শহীদা তার বাহিনী দিয়ে আমার বসত ৫টি ঘর ও ঘরের আসবাবপত্র ভেঙ্গে টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালংকার লুটসহ প্রায় ৬০ লাখ টাকার ক্ষতিসাধণ করে।

আব্দুর রশীদ আরো জানান,শহীদা এই পর্যন্ত ৭টি বিয়ে করে সর্বশান্ত করেছে। বর্তমানে সে ৭ নম্বার স্বামী শাহাদাৎ এবং ৩নম্বর স্বামী আব্বাস মিয়ার পুত্র আলীকে নিয়ে সংসার পেতেছেন। এছাড়াও বন্দর কলাবাগ এলাকার মৃত আঃ সামাদ সরকারের ছেলে মামুন সরকারকে বিয়ে করে ব্ল্যাকমেইল করে।

পরে মোটা অংকের বানিজ্য করে তার সঙ্গে ছাড়াছাড়ি করে। এভাবেই শহীদা একের পর এক মানুষকে সর্বশান্ত করে পথে বসানোর জাল বিছিয়ে চলেছে।

তার বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া উচিত। অন্যথায় তার বাহিনী কর্তৃক ভবিষ্যতে অগণিত নিরীহ মানুষ সর্বশান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ