মায়ের হাত ফসকে পুকুরে তলিয়ে গেল শিশু জাহিদ, এক ঘণ্টা পর মরদেহ উদ্ধার
Published: 29th, June 2025 GMT
চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে গোসল করানোর সময় মায়ের হাত ফসকে পুকুরে পড়ে যায় সাত বছর বয়সী শিশু জাহিদ। পানিতে ডুবে যাওয়ার প্রায় এক ঘণ্টা পর তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আজ রোববার উপজেলার গাছুয়া ইউনিয়নের নূর আলম মেম্বারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে।
শিশু জাহিদ ওই বাড়ির জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ দুপুর দেড়টার দিকে পুকুরপাড়ে শিশুটিকে গোসল করাচ্ছিলেন তার মা। এ সময় শিশুটি তার মায়ের হাত থেকে ছুটে পানিতে তলিয়ে যায়। তৎক্ষণাৎ চেষ্টা করেও মা আর নাগাল পাননি ছেলের। এর মধ্যেই তাঁর চিৎকারে ছুটে আসেন বাড়ির বাসিন্দা ও প্রতিবেশীরা। কলাগাছ আর চৌকি দিয়ে ভেলা ভাসিয়ে ঝাঁকি জাল নিয়ে পুকুরে নেমে পড়েন তাঁরা। খবর পেয়ে ছুটে আসে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও। বেলা আড়াইটার দিকে শিশুটিকে উদ্ধার করতে সমর্থ হন স্থানীয় উদ্ধারকারী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। দ্রুত শিশুটিকে সন্দ্বীপ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়া নূর আলম মেম্বারের বাড়ির এক বাসিন্দা প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুকুরটি অনেক খাড়া আর গভীর। ভরা বর্ষায় এখন পুকুর ভরা পানি। আমরা ডুব দিয়ে পুকুরের তলা স্পর্শ করতে পারছিলাম না। মার হাত থেকে ছুটে ডুবন্ত শিশুটি ক্রমেই পুকুরের অনেক গভীরে চলে গিয়েছিল।’
সন্দ্বীপ ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন অফিসার মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সুরা নাস: বাংলা অর্থসহ এবং সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা
সুরা নাস কুরআনের ১১৪তম এবং শেষ সুরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ বলে মাক্কী সুরা নামে পরিচিত। এতে মোট ৬টি আয়াত রয়েছে। এই সুরাটি মানুষকে শয়তানের প্রতারণা ও মন্দ প্রভাব থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করতে শেখায়। এটি ‘মু’আওয়িযাতাইন’ (দুটি আশ্রয়প্রার্থী সুরা: সুরা ফালাক ও সুরা নাস)–এর একটি।
সুরা নাসের বাংলা উচ্চারণ, অর্থ এবং সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা আলোচনা করা হলো।
বাংলা উচ্চারণ ও অর্থউচ্চারণ: কুল আউজু বিরাব্বিন নাস। মালিকিন নাস। ইলাহিন নাস। মিন শাররিল ওয়াসওয়াসিল খান্নাস। আল্লাজি ইউওয়াসউইসু ফি সুদুরিন নাস। মিনাল জিন্নাতি ওয়ান নাস।
অর্থ: বলো, আমি আশ্রয় প্রার্থনা করি মানুষের রবের কাছে। মানুষের অধিপতির কাছে। মানুষের উপাস্যের কাছে। মন্দ প্রবৃত্তির কুমন্ত্রণা থেকে, যে পিছনে লুকায়। যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে। জিন ও মানুষের মধ্য থেকে।
আরও পড়ুনসুরা ফাতিহার বাংলা উচ্চারণ অর্থ ও ফজিলত২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪সুরা নাসের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাসুরা নাস মানুষকে শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করতে শিক্ষা দেয়। এই সুরায় আল্লাহকে তিনটি গুণে সম্বোধন করা হয়েছে:
রব্বিন নাস (মানুষের রব): আল্লাহ মানুষের সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্তা।
মালিকিন নাস (মানুষের অধিপতি): তিনি মানুষের উপর সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী।
ইলাহিন নাস (মানুষের উপাস্য): তিনিই একমাত্র উপাসনার যোগ্য।
সুরাটি শয়তানের মন্দ প্রভাব থেকে সুরক্ষা প্রার্থনায় জোর দেয়। কেননা, শয়তান ‘ওয়াসওয়াস’ (কুমন্ত্রণা) দেয় এবং ‘খান্নাস’ (পিছনে লুকিয়ে থাকে)। এই কুমন্ত্রণা জিন ও মানুষ উভয়ের থেকে আসতে পারে, যা মানুষের অন্তরে মন্দ চিন্তা ও পাপের প্রতি প্ররোচিত করে।
হাদিসে আছে, মহানবী (সা.) প্রতি রাতে ঘুমানোর আগে সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক এবং সুরা নাস পড়তেন, হাতে ফুঁ দিয়ে শরীরে মুছে নিতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫০১৭)
বোঝা যায়, সুরা নাস পড়া শয়তানের প্রভাব ও অন্যান্য ক্ষতি থেকে সুরক্ষা দেয়।
আরও পড়ুনসুরা কাহাফের ৪ কাহিনিতে সফলতার ৪ শিক্ষা২০ জুলাই ২০২৫সুরা নাসের ফজিলতসুরা নাসের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে বর্ণিত আছে, নবীজি (সা.)–কে যখন জাদু করা হয়, তখন সুরা ফালাক ও সুরা নাস নাজিল হয় এবং তিনি এই দুই সুরা পড়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন এবং আরোগ্য লাভ করেন। (সুনান নাসাঈ, হাদিস: ৫৪৩৭)
এই সুরা পড়া শয়তানের কুমন্ত্রণা, জাদু, হিংসা এবং অন্যান্য ক্ষতি থেকে সুরক্ষা প্রদান করে। তাফসিরে ইবনে কাসিরে বলা হয়েছে, “সুরা নাস মানুষকে শয়তানের মানসিক ও আধ্যাত্মিক আক্রমণ থেকে রক্ষা করে।” (তাফসির ইবনে কাসির, পৃষ্ঠা: ৮/৫৩৬, দারুস সালাম প্রকাশনী, ২০০০)।
সুরা নাস একটি সংক্ষিপ্ত কিন্তু অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ সুরা, যা মানুষকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনার মাধ্যমে শয়তানের মন্দ প্রভাব থেকে রক্ষা করে। আধুনিক জীবনে, যখন আমরা প্রতিনিয়ত নানা প্রলোভন ও মানসিক চাপের মুখোমুখি হই, তখন এই সুরা আমাদের ঈমানকে দৃঢ় করতে পারে। এই সুরা নিয়মিত পাঠ, বিশেষ করে সকাল-সন্ধ্যায় এবং ঘুমানোর আগে, মুমিনের জীবনে শান্তি ও সুরক্ষা নিয়ে আসে।
আরও পড়ুনসুরা আর-রহমান: সারকথা ও ফজিলত০৮ আগস্ট ২০২৫