এনবিআর ‘শাটডাউনে’ আখাউড়া স্থলবন্দরে স্থবিরতা
Published: 29th, June 2025 GMT
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কমপ্লিট ‘শাটডাউন’ কর্মসূচির কারণে ব্রহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। আজ রোববার সকাল থেকে বন্দর দিয়ে ভারতে কোনো পণ্য রপ্তানি হয়নি৷ এছড়া বন্ধ রয়েছে পণ্য আমদানিও। তবে শাটডাউন কর্মসূচির আওতামুক্ত রয়েছে যাত্রী পারাপার কার্যক্রম।
স্থল শুল্কস্টেশন সূত্রে জানা গেছে, কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচির কারণে গতকাল শনিবার থেকে পণ্য আমদানি-রপ্তানির জন্য বিল অব এক্সপোর্ট ও বিল অব এন্ট্রি করতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। এর ফলে বন্ধ রয়েছে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্ক্রম। যদিও আগেরদিন বিল অব এক্সপোর্ট করে করে রাখার কারণে গতকাল শনিবার বন্দর দিয়ে ৩ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হয়। এছাড়া গত ২১ জুন থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত বন্দর দিয়ে ভারতে রপ্তানি হয় প্রায় ৮ কোটি টাকার পণ্য। তবে এ সময়ে ভারত থেকে কোনো পণ্য আমদানি হয়নি।
আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জানান, যাত্রী পারাপার কার্যক্রম কর্মবিরতি কর্মসূচির আওতামুক্ত। তবে যেহেতু বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি অনিয়মিত সেজন্য আমদানি বাণিজ্যে কোনো প্রভাব পড়ছে না। এছাড়া রোববার ভারতে সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় এদিন বন্দর দিয়ে খুব বেশি পণ্য রপ্তানি হয় না৷ তাই, আজকে বন্দরে রপ্তানির কোনো পণ্যবাহী ট্রাক আসেনি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এনব আর
এছাড়াও পড়ুন:
হিলিতে ৫ কোটি টাকার খাদ্যশস্য অবৈধভাবে মজুতের অভিযোগে মামলা, তিনটি গুদাম সিলগালা
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানি করার পর মেয়াদোত্তীর্ণ চাল, মসুর ডাল ও ধানসহ ৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা মূল্যের খাদ্যশস্য অবৈধভাবে মজুতের অভিযোগে গুদাম মালিক ও ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (অতিরিক্ত) সোহেল আহমেদ বাদী হয়ে থানায় মামলাটি করেন।
মামলার আসামিরা হলেন হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স মাইক্রো গ্রেইন এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আবদুল হাকিম মণ্ডল (৬২) ও প্রতিষ্ঠানটির খাদ্যগুদামের ব্যবস্থাপক হুমায়ুন কবির। তাঁদের মধ্যে হাকিম জয়পুরহাটের পাঁচবিবি পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের গোপালপুর মহল্লার বাসিন্দা এবং হুমায়ুন হাকিমপুর পৌরসভার উত্তর বাসুদেবপুর মহল্লার বাসিন্দা।
এর আগে গত বুধবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিত রায় ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সোহেল আহমেদের উপস্থিতিতে ওই ব্যবসায়ীর খাদ্যগুদাম থেকে ২ হাজার ২৫১ টন চাল, মসুর ডাল ও ধান জব্দ করা হয়েছিল। তবে বৃহস্পতিবার থানায় করা মামলায় জব্দের পরিমাণে ৯১৩ টনের গরমিল পাওয়া যায়।
মামলার এজাহার ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ২৫ জুন সকালে হাকিমপুর পৌরশহরের উত্তর বাসুদেবপুর এলাকায় মেসার্স মাইক্রো গ্রিন এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ব্যবসায়িক খাদ্যগুদামে অবৈধভাবে মেয়াদোত্তীর্ণ চাল, মসুর ডাল ও ধান মজুত আছে, এমন তথ্য পায় উপজেলা প্রশাসন। পরে ওই দিন বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ইউএনও অমিত রায় ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সোহেল আহমেদ থানা-পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে তিনটি খাদ্যগুদামে অভিযান চালান। এ সময় ভারত থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানির পর অবৈধভাবে মজুদ রাখা মেয়াদোত্তীর্ণ সেদ্ধ চাল, মসুর ডাল ও ধান মজুতের সত্যতা পাওয়া যায়। পরে খাদ্যগুদাম থেকে ৫ হাজার ২৫৮ বস্তায় ১৪৯ দশমিক ৭৭৬ টন সেদ্ধ চাল, ৬৭০টি বস্তায় ৩২ দশমিক ৮৩০ টন মসুর ডাল এবং ১৮ হাজার ১৯৪টি বস্তায় ১ হাজার ১৫৫ দশমিক ৭৭৯ টন ধান জব্দ করা হয়। জব্দ করা খাদ্যশস্যের মোট মূল্য ৫ কোটি ৩৩ লাখ ৭ হাজার ২৪৮ টাকা টাকা বলে উপজেলা খাদ্য দপ্তর সূত্রে জানা যায়। ব্যবসায়িক গুদামে অবৈধভাবে মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্যশস্য মজুতের অভিযোগে তিনটি গুদাম সিলগালা করে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় বাদী হয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সোহেল আহমেদ গতকাল বৃহস্পতিবার হাকিমপুর থানায় খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) আইন ২০২৩ এর ৪ ধারায় একটি মামলা করেন।
খাদ্যশস্য জব্দের হিসাবে গরমিলের বিষয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সোহেল আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, অবৈধভাবে মজুতের অভিযোগে ওই দিন তাৎক্ষণিক যে গণনা করা হয়েছিল, সেটি ত্রুটিপূর্ণ ছিল। পরে আবার গণনার জন্য ইউএনওর কাছে আবেদন করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে থানার ওসি, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনের লোকজনের উপস্থিতিতে গুদামের সিলগালা খুলে আবার গণনা করা হয় এবং সংখ্যা আবার নির্ধারণ করা হয়।
হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল হক প্রথম আলোকে বলেন, হিলিতে একটি ব্যবসায়িক খাদ্যগুদামে অবৈধভাবে চাল, মসুর ডাল ও ধান মজুতের অভিযোগে হাকিমপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সোহেল আহমেদ থানায় একটি মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।