স্বার্থসিদ্ধির জন্য মুরাদনগরে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন একজন উপদেষ্টা: ফখরুল
Published: 29th, June 2025 GMT
একজন উপদেষ্টা মুরাদনগরে নিজের স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে ক্রমাগত ক্ষমতার অপব্যবহার করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, “ওই উপদেষ্টার আশ্রয়ে দুর্বৃত্তরা সমাজবিরোধী অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে।”
রবিবার (২৯ জুন) এক বিবৃতিতে তিনি এই অভিযোগ করেন।
আরো পড়ুন:
সময় এসেছে ধ্বংস হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন করে গড়ে তোলার: ফখরুল
প্রধান উপদেষ্টা অনেক বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন: ফখরুল
বিবৃতিতে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নে হিন্দু ধর্মাবলম্বী এক প্রবাসীর স্ত্রীকে শ্লীলতাহানি ও নির্যাতনের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, “আমরা উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি, হিন্দু ধর্মাবলম্বী এক নারীকে শ্লীলতাহানি ও নির্যাতন একটি নির্মম, কলঙ্কজনক ও ঘৃণ্য ঘটনা। এই বর্বরোচিত ঘটনা দেশের মানুষের হৃদয়কে ব্যথিত করেছে।”
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, “একটি কুচক্রি মহল এই কাপুরুষোচিত ঘটনাকে রাজনৈতিকভাবে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার গভীর চক্রান্তে লিপ্ত। ফ্যাসিবাদী আমলের মতো এখনো সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি দখল ও নির্যাতন করে তার দায় বিএনপির ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে।”
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব দাবি করেন, “ওই এলাকার একজন উপদেষ্টা ব্যক্তি নিজ স্বার্থসিদ্ধির জন্য মুরাদনগরে লাগাতার ক্ষমতার অপব্যবহার করে যাচ্ছেন। তিনি জনসেবার চেয়ে আত্মসেবায় ব্যস্ত। আওয়ামী এমপিদের মতো করে তিনি এলাকাজুড়ে প্রভাব বিস্তারে মনোযোগী হয়েছেন।”
মির্জা ফখরুলের মতে, “এই পরিস্থিতিতে দুর্বৃত্তরা আশকারা পেয়ে নানা সমাজবিরোধী কাজে লিপ্ত হচ্ছে এবং দেশ-বিদেশ থেকে মদত পাচ্ছে।”
তিনি বলেন, “মুরাদনগরে এই সংখ্যালঘু নারী নির্যাতনের ঘটনা মনুষ্যত্বহীন, অমানবিক ও পাশবিক। এটি একটি মহল বিশেষের রাজনৈতিক লক্ষ্য পূরণের অভিসন্ধিমূলক প্রয়াস। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার পুরনো কৌশল এখানেও দেখা যাচ্ছে।”
তিনি আরো বলেন, “হাসিনার পতনের পরও আমাদের চিরচেনা সম্প্রীতির ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে না এনে বরং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তা বিনষ্ট করা হচ্ছে। স্বৈরাচার ও দুর্বৃত্তদের দোসররা অর্থবিত্তে সজ্জিত হয়ে নারী নির্যাতন ও সহিংসতা চালিয়ে তা বিএনপির ওপর চাপিয়ে দেওয়ার গোপন অপচেষ্টায় মেতে উঠেছে।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “ধর্ম, জাতি ও গোষ্ঠী নির্বিশেষে সব মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই পাষণ্ডদের প্রতিহত করতে হবে সুস্থ সমাজ ও নিরাপদ রাষ্ট্র গঠনের স্বার্থে। নারী নির্যাতনকারী অপরাধীদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় থাকতে পারে না। তারা মানবসভ্যতার শত্রু।”
বিএনপি মহাসচিব অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
ঢাকা/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম র জ ফখর ল ইসল ম আলমগ র ব এনপ উপদ ষ ট ন উপদ ষ ট ম র দনগর র জন ত ক ব এনপ ফখর ল
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রামের চেরাগী পাহাড়ে বিক্ষোভ সমাবেশে দোষীদের বিচার দাবি
কুমিল্লার মুরাদনগরে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে এক নারীকে ‘ধর্ষণ’ ও তাঁর ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাকে মধ্যযুগীয় বর্বরতা আখ্যা দিয়ে দ্রুত দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন সনাতন সম্প্রদায়ের ছাত্রছাত্রী ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতা–কর্মীরা।
আজ রোববার বিকেল পাঁচটায় চট্টগ্রামের চেরাগী পাহাড়ে অনুষ্ঠিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা এ দাবি জানান। কুমিল্লার মুরাদনগরে নারী ধর্ষণ ও খিলক্ষেতে দুর্গামন্দির ভাঙচুরসহ বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সনাতন সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মসূচির উদ্যোক্তাদের একজন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ছাত্র ঐক্য পরিষদের মহানগরের সাধারণ সম্পাদক সীমান্ত দত্ত প্রথম আলোকে বলেন, কুমিল্লার ঘটনার প্রতিবাদে সর্বস্তরের ছাত্রছাত্রীরা এ কর্মসূচির ডাক দেন। এখানে কারও একক ব্যানার নেই। তবে সমাবেশে বাংলাদেশ হিন্দু ছাত্র পরিষদ ও বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ছাত্র মহাজোটের ব্যানার দেখা গেছে। সমাবেশে বক্তব্য দেন সীমান্ত দত্ত, অভিজিৎ দেব, মিনু রানী দেবী, জনি দত্ত, রুবেল দে প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় এ দেশের হিন্দুরা প্রাণ দিয়েছেন। সম্ভ্রম হারিয়েছেন সনাতনী নারীরাও। কিন্তু এখনো যেন সেই স্বাধীনতা ভোগ করতে পারছেন না।
বক্তারা আরও বলেন, প্রতিবার সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এ দেশে হিন্দুধর্মাবলম্বী মানুষজন নির্যাতনের শিকার হন। এখনো হামলা–নির্যাতন চলছে।
আরও পড়ুনমুরাদনগরে দরজা ভেঙে নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে প্রধান আসামিসহ গ্রেপ্তার ৫১১ ঘণ্টা আগেবক্তারা আরও বলেন, ‘মুরাদনগরের ঘটনায় আমরা স্তম্ভিত। এর আগে ঢাকায় মন্দির ভাঙচুর করা হয়। লালমনিরহাটে কথিত ধর্ম অবমাননার অভিযোগে বাবা–ছেলেকে মারধর করে গ্রেপ্তার করা হয়। আমরা এসব ঘটনার বিচার চাই।’
সমাবেশে ‘আমি কে তুমি কে, সনাতনী সনাতনী,’ ‘প্রশাসন তুমি কার, ধর্ষক না ধর্ষিতার,’ ‘আমার মন্দির ভাঙল কেন, প্রশাসন জবাব চাই,’ বলে ইত্যাদি স্লোগান দেওয়া হয়। পরে এ সমাবেশ থেকে মিছিল বের করা হয়।
আরও পড়ুনমুরাদনগরে দরজা ভেঙে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ, থানায় মামলা১৯ ঘণ্টা আগেপ্রসঙ্গত, কুমিল্লার মুরাদনগরের একটি গ্রামে বসতঘরের দরজা ভেঙে এক নারীকে (২৫) ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গত শুক্রবার দুপুরে মুরাদনগর থানায় মামলা করেছেন ওই নারী। ওই নারী বলেন, প্রায় ১৫ দিন আগে স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে সন্তানদের নিয়ে বেড়াতে আসেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ফজর আলী (৩৮) নামের এক ব্যক্তি তাঁর বাবার বাড়ি গিয়ে ঘরের দরজা খুলতে বলেন। এ সময় তিনি দরজা খুলতে অস্বীকৃতি জানান। একপর্যায়ে ওই ব্যক্তি ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তাঁকে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় আজ সকালে অভিযুক্ত ফজর আলীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে কুমিল্লার পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান জানান। মূল অভিযুক্ত ফজর আলীকে আজ ভোর পাঁচটার দিকে ঢাকার সায়েদাবাদ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে ওই নারীকে নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে। তাঁরা হলেন মো. সুমন, রমজান আলী, মো. আরিফ ও মো. অনিক। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বাড়ি মুরাদনগর উপজেলায়।
আরও পড়ুনওই নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত ও অনলাইন থেকে ভিডিও-ছবি সরানোর নির্দেশ২ ঘণ্টা আগে