একটা সময় ছিল, যখন অভিভাবকের সঙ্গে সন্তানের সম্পর্কটা ছিল ভয়ের, বিশেষ করে বাবার সঙ্গে। তবে সেই সময় বেশির ভাগ শিশু বেড়ে উঠত এক বৃহৎ পারিবারিক পরিসরে। সময় বদলেছে। এ যুগের শিশু অনেকটাই ‘একা’। বাড়ির বাইরে শিশুকে স্বাধীনভাবে খেলতে দিতেও অনেক অভিভাবক অনিরাপদ বোধ করেন। শিশুর নিরাপদ আশ্রয় কেবল তার পরিবার। ভরসার জায়গা কেবল তার মা-বাবা আর নিকটাত্মীয়রাই।
সন্তানপালনে প্রচলিত কিছু ভুল এবং তা সংশোধন সম্পর্কে জানালেন শিশু-কিশোর ও পারিবারিক মনোরোগবিদ্যার সহকারী অধ্যাপক এবং যুক্তরাজ্যের সিনিয়র ক্লিনিক্যাল ফেলো ডা.

টুম্পা ইন্দ্রানী ঘোষ

১. সবকিছুর চেয়ে শিশুর গুরুত্ব বেশি

আপনার সন্তান নিঃসন্দেহেই আপনার কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তবে তার মানে এই নয় যে তাকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে আপনি নিজেকে নিঃশেষ করে ফেলবেন। নিজের সুস্থতার প্রতিও গুরুত্ব দিতে হবে। কিছুটা সময় রাখুন নিজের জন্যও।

২. কোনো বিষয় না জানলে স্বীকার করা যাবে না

একটা মানুষ সব বিষয় জানবেন না, এটাই স্বাভাবিক। শিশুর সামনে তা স্বীকার করাও দোষের নয়। এতে আপনি তার চোখে ‘ছোট’ হয়ে যাবেন, এমন ভাবনা ভুল। বরং আপনি কিছু না জানলে তাকে বলুন যে আপনি তা জেনে নিয়ে পরে জানাবেন। শিশুকেও বিষয়টি জানার চেষ্টা করতে বলতে পারেন। জানার পর সে যাতে আপনার সঙ্গে বিষয়টি ভাগ করে নেয়, সে ব্যাপারেও তাকে উৎসাহ দিন।

৩. সব সময় শিশুর প্রশংসা করা উচিত

শিশুকে উৎসাহ দিতে প্রশংসা করতে হবে, এটা ঠিক। কিন্তু শিশুর ভুলগুলোও আপনাকেই ধরিয়ে দিতে হবে। নইলে সে অনেক কিছুই শিখতে পারবে না। ধরা যাক, শিশু ডাইনিংয়ে বাড়ির সবার সঙ্গে বসে খাচ্ছে। হয়তো সে খাবার ফেলে-ছড়িয়েই খাচ্ছে। প্রাথমিক অবস্থায় এটা মেনে নেওয়াই ভালো। তবে একটা বয়সে গিয়ে তাকে খাবার টেবিলের আদবকেতাও শেখাতে হবে, বলতে হবে টেবিল গোছানোর মতো টুকটাক কাজে সাহায্য করতেও। এসব শেখানোর পরও যদি সে না করে, তখন কিন্তু আপনাকে তার ভুল ধরিয়ে দিতেই হবে।

আরও পড়ুনশিশুর কান্না ট্যানট্রাম নাকি মেল্টডাউন? দুটির পার্থক্য জেনে রাখা এত জরুরি কেন২৬ জুন ২০২৫৪. শিশুকে দুঃখ বুঝতে দেওয়া যাবে না

দুঃখ তো জীবনেরই অংশ। নশ্বর এই পৃথিবীতে সবদিক থেকে সুখী হওয়া প্রায় অসম্ভব। অভাব, দুঃখ, কষ্ট—জীবনের বাস্তবতা থেকে শিশুকে আড়ালে রাখার প্রয়োজন নেই সব সময়। শিশুর সব চাওয়া পূরণ না করলে কোনো ক্ষতি নেই। বরং বাস্তবতা বুঝেই বড় হোক সে। আর্থিক অসংগতি থাকলে শিশুর বয়স বুঝে তা জানানো যেতে পারে। তবে এ নিয়ে তাকে হতাশাগ্রস্ত করে ফেলবেন না। সহজভাবে বুঝিয়ে বলুন। এমনভাবে বলুন, যাতে নিজের পরিবারের কারণে সে নিজেকে দুর্ভাগা মনে না করে, অন্যদের হিংসাও না করে।

৫. শাস্তি না দিলে শোধরাবে না

এমনও অভিভাবক আছেন, যাঁরা ভাবেন, শাস্তি না দিলে সন্তানের ভুল শোধরাবে না। এই ভাবনাও ভুল। প্রয়োজন হলে শিশুকে আপনি অবশ্যই শাসন করবেন। কিন্তু খেয়াল রাখবেন, তা করতে গিয়ে যেন আপনার সঙ্গে তার সম্পর্কের ভিতটা দুর্বল হয়ে না পড়ে। শিশুকে মারবেন না। কটু কথা বলবেন না। রেগে ভয়ংকরদর্শন একজন মানুষ হয়ে উঠবেন না। বরং শিশুর কোন কাজটা ভুল হয়েছে, কেন ভুল হয়েছে, তা বুঝিয়ে বলুন।

আরও পড়ুনসন্তান মানুষ করার চাপ যেভাবে সামলাবেন২১ মে ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

‘এটা তো চাপের খেলা’—বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে ভারত কোচ

বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ ঘিরে উত্তাপ, উত্তেজনা নতুন নয়। তবে এবারের লড়াইটা ভারতের জন্য বাড়তি চাপেরও। প্রতিপক্ষের মাঠ, গ্যালারিভর্তি দর্শক আর হামজা-শমিতে উজ্জীবিত বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স—সব মিলিয়ে হয়তো কঠিন পরীক্ষাতেই পড়তে হবে সফরকারীদের। আজ ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে ভারতের কোচের কণ্ঠেও ফুটে উঠল তেমনটাই।

আগামীকাল জাতীয় স্টেডিয়ামে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-ভারত। তার আগে আজ একটি হোটেলে ভারতীয় দলের কোচ খালিদ জামিল বলেন, ‘এটা তো চাপের খেলা’।

এশিয়ান কাপ বাছাইপর্ব থেকে বাংলাদেশ ও ভারত দুই দলেরই বিদায় আগেই নিশ্চিত হয়েছে। তবু বাংলাদেশের দর্শকদের মধ্যে ভারত ম্যাচ নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ। যার বড় প্রমাণ অনলাইনে টিকিট ছাড়ার ৬ মিনিটের মধ্যে সব বিক্রি হয়ে যাওয়া।

এর পাশাপাশি প্রতিপক্ষের মাঠে খেলাটা যে সব সময়ই কঠিন, সেই বাস্তবতা জানেন জামিলও। তাঁর দলের ওপর চাপ আছে কি না প্রশ্নে ভারত কোচ বলেন, ‘হ্যাঁ, চাপ আছে। আমাদের তা মানতে হবে। সবাই জানে এটি একটি চাপের ম্যাচ। তবে সে জন্য আমাদের একটি ইতিবাচক ফলের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।’

গত ২৫ মার্চ শিলংয়ে দুই দলের প্রথম লেগ গোলশূন্য ড্র হয়েছিল। সেই ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক হয়েছিল হামজা চৌধুরীর। ইংলিশ ক্লাব লেস্টার সিটিতে খেলা ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার বাংলাদেশের হয়ে এখন পর্যন্ত ৬ ম্যাচে করেছেন ৪ গোল, যার মধ্যে দুটি করেছেন বৃহস্পতিবার নেপালের বিপক্ষে।

ভারত কোচ অবশ্য একক কোনো খেলোয়াড়কে নিয়ে ভাবতে নারাজ, ‘আমরা শুধু একজন খেলোয়াড়কে বিবেচনায় নিচ্ছি না। বাংলাদেশ দলে অনেক ভালো খেলোয়াড় আছে। এটা খুব সিরিয়াস গেম।’

১৯৭৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৩২ বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-ভারত। এর মধ্যে ভারত জিতেছে ১৬টিতে, বাংলাদেশ ২টিতে। ড্র বাকি ১৪টি (২০০৩ সাফে বাংলাদেশের গোল্ডেন গোলে জয়ের ম্যাচসহ)।

সম্পর্কিত নিবন্ধ