ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা সুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুুর রশিদ ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

রবিবার (২৯ জুন) সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা পুলিশ শহরের মেড্ডা এলাকা থেকে গোপন সূত্রের ভিত্তিতে তাকে আটক করে। 

আবদুুর রশিদ সুহিলপুর গ্রামের মৃত আব্দুর নূর ভূইয়ার ছেলে। তিনি সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।  

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোজাফ্ফর আহমেদ জানান, সুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুর রশিদ ভূইয়ার বিরুদ্ধে নাশকতা ও হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন।

ঢাকা/পলাশ/টিপু 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব র হ মণব ড় য়

এছাড়াও পড়ুন:

জাবিতে নারী শিক্ষার্থী হেনস্তা ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা আহত নিয়ে যা জানা গেল

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) অধ্যয়নরত এক নারী শিক্ষার্থীকে ক্রমাগত হেনস্তার অভিযোগে রবিবার (২৯ জুন) দুপুরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষার্থীকে আটক করেন ভুক্তভোগীর সহপাঠীরা।

পরে সন্ধ্যায় অভিযুক্ত ওই যুবককে নিরাপত্তা অফিস থেকে বের করতে গেলে মারতে উদ্যত হন ভুক্তভোগীর কয়েকজন সহপাঠী। এ সময় অভিযুক্ত যুবককে বাঁচাতে গেলে আহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা জেফরুল হাসান চৌধুরী।  

জানা গেছে, অভিযুক্ত যুবক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০১৮-১৯ সেশনের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীৃ সোহেল রানা। ভুক্তভোগী নারীর একই এলাকার বাসিন্দা ছিলেন তিনি। তবে তার বাসা সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি থানায়। বর্তমানে চাকরি খুজতে ঢাকার লালবাগে অবস্থান করছেন। তার পিতার নাম মো. হানিফ মোড়ল।

আরো পড়ুন:

বেরোবিতে নোটিশ ছাড়াই ভর্তি ফি দ্বিগুণ, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা

যবিপ্রবিতে মলিকিউলার লাইফ সায়েন্সে উদ্ভাবন নিয়ে সম্মেলন

হেনস্তার বিষয়ে অর্থনীতি বিভাগের ৫২তম আবর্তনের ওই ছাত্রী প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগপত্র দিয়েছেন। অভিযোগপত্রে বলেন, “রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ সেশনের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র সোহেল রানা আমাকে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে নানাভাবে হেনস্তা করে আসছে। তার সঙ্গে আমি যোগাযোগ না রাখতে চাইলেও নানাভাবে আমাকে ব্লাকমেইল করে যোগাযোগ রাখতে বাধ্য করেছে। ইতোপূর্বে তিনি গুণ্ডা ভাড়া করে আমার বাবাকে মারধর পর্যন্ত করেছে। গত কয়েকমাস যাবত তার হেনস্তার মাত্রা আমার সহ্যসীমা অতিক্রম করেছে।”

তিনি বলেন, “আজ (রবিবার) তিনি আমার ক্যাম্পাসে এসে আমাকে জোরপূর্বক একা দেখা করতে বাধ্য করেছে এবং সঙ্গে কাউকে নিয়ে গেলে মারধরের হুমকি দিয়েছে। দেখা না করলে ‘দেখে নিব’ বলেও হুমকি দিয়েছে। পরবর্তীতে চাপে পড়ে আমি একা দেখা করি এবং কথোপকথন চলাকালে দূর থেকে আমাদের দেখে আমার বন্ধুরা। তখন তিনি তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন এবং ‘ক্যাম্পাসের বাইরে গেলে দেখে নেব’ বলে হুমকি দেন।”

জানা গেছে, ২০১৫ সাল থেকে সোহেল রানা ওই ছাত্রীকে জোরপূর্বক প্রেমের প্রস্তাব দেওয়াসহ হেনস্তা করে আসছিলেন। সে সময় একাধিকবার পারিবারিকভাবে মিমাংসা করা হয়। পরবর্তীতে ২০২১ সালেও একই ঘটনা ঘটলে তখনো পারিবারিকভাবে মিমাংসা করা হয়। সর্বশেষ ৩ মাস আগে হুমকি দিয়ে নারী শিক্ষার্থীকে মেসেজ করেন সোহেল। কথা না বললে পরবর্তীতে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এরপর থেকে ওই নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে মাঝে মাঝে কথা হত বলে জানা যায়।

গতকাল রবিবার মেসেজে কথা বলে ভয়ভীতি দেখিয়ে জাবিতে দেখা করতে আসেন তিনি। এসময় ওই ছাত্রীর বন্ধুরা তাকে আটক করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যান।

জোর করে দেখা করার বিষয়ে সোহেল রানা বলেন, “আমি দেখা করার জন্য জোর করেছি বিষয়টি সত্য। আমি তিন মাস যাবৎ কথা বলি ওর সাথে। তবে কোন ধরনের সম্পর্ক নাই তার সাথে।”

এরপর প্রক্টর অফিসে ওই নারী শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তিনি এ বিষয়ে জিডি অথবা মামলা করবেন কি না। তিনি সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে তার অভিভাবককে আসতে বলা হয়। তার পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত হলে তারাও কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকেন। 

এ অবস্থায় অভিযোগপত্র গ্রহণ এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অভিযুক্ত সোহেলকে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেষ দেওয়া হয়। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা তাকে বের করে নিয়ে আসতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ৫২তম ব্যাচের কিছু শিক্ষার্থী উত্তেজিত হয়ে অভিযুক্ত সোহেলকে মারধরের চেষ্টা করেন।

তখন মারধরের হাত থেকে বাঁচাতে নিরাপত্তা কর্মকর্তা জেফরুল হাসান বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করেন। এসময় আকস্মিকভাবে আঘাত লেগে তার মাথা ফেটে গিয়ে রক্ত বেরিয়ে আসে। পরে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়। 

এ ঘটনায় আহত নিরাপত্তা কর্মকর্তা জেফরুল হাসান চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর একটি লিখিত অভিযোগপত্র জমা দেন। 

জেফরুল হাসান চৌধুরী আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, “প্রায় ২৫ বছর ধরে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত আছি। কিন্তু কখনো কোনো শিক্ষার্থীর দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হইনি। আমি ক্যাম্পাসের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সবসময়ই সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি।”

তিনি বলেন, “শামীম মোল্লা নিহতের মত ঘটনা আর যাতে না ঘটে, সে বিষয়ে আমি সর্বোচ্চ সচেতন। সেজন্য ওই ছেলেকে আমাদের কয়েকজন শিক্ষার্থী মারধর করতে গেলে আমি তা থামানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করি। এ সময় এক শিক্ষার্থীর হাতে থাকা শক্ত কিছু একটা আমার মাথায় লাগে। এতে মাথা ফেটে রক্ত বের হওয়া শুরু হলে আমাকে মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়।”

ইচ্ছাকৃতভাবে টার্গেট করে তাকে আঘাত করা হয়েছে কি না জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, “না, ইচ্ছাকৃত ভাবে আমাকে আঘাত করা হয়নি। তবে একটা সমস্যা সমাধান হয়েছে যখন, তারপরেও কেনো তাকে মারধর করতে যেতে হবে?”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম রাশেদুল আলম বলেন, “আমাদের নিরাপত্তা কর্মকর্তা আহত হওয়ার ঘটনায় অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে আমরা প্রাথমিক তদন্ত করে তার রিপোর্ট প্রস্তুত করে উপাচার্য স্যারের কাছে প্রেরণ করেছি। এ ব্যপারে তিনি ছাত্র-শৃঙ্খলা বিধি মোতাবেক চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।”

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ