‘ঘ্রাণ থাকে গন্ধে, বর্ণে নয়’- এ স্লোগান হৃদয়ে ধারণ করে একতার গল্প নিয়ে যাত্রা শুরু ‘দেওয়ালচিত্রে হরিজনদের সাহসের গল্প’। এ আয়োজন শুধু প্রকল্প নয়, এটি সাহসী নারীদের কণ্ঠস্বর, প্রতিবাদের ভাষা এবং পরিবর্তনের প্রতিচ্ছবি। বগুড়ায় দেয়ালচিত্রে হরিজনদের সাহসের গল্প ফুটিয়ে তুললেন আহসানা অঙ্গনা। পাঁচদিনের এই আয়োজন সোমবার বগুড়া শহীদ টিটু মিলনায়তন চত্বরে সন্ধ্যায় শেষ হয়।
কিছুদিন আগেই কলম্বোতে আয়োজিত ‘ফিয়ারলেস অ্যাম্বাসেডরশিপ’ প্রকল্পে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে এসেছেন চিত্রশিল্পী আহসানা অঙ্গনা। তিনি এই দেয়ালচিত্রের আয়োজন করেন। তিনি বলেন, কিছুদিন আগেই শ্রীলংকার কলম্বোতে আয়োজিত ‘ফিয়ারলেস অ্যাম্বাসেডরশিপ’ প্রকল্পে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার পর দক্ষিণ এশিয়ার নারীদের শিল্পের মাধ্যমে শক্তি ও প্রতিবাদের ভাষা তুলে ধরতে এই উদ্যোগের যাত্রা শুরু। আমরা একসাথে হাঁটতে চাই আমাদের ভেতরের গল্পের পথে, যেখানে প্রতিটি পদক্ষেপ হবে শান্তির, প্রতিটি ছাপ হবে সহযাত্রার।
এর আগে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে নির্বাচিত ১৫ জন নারী শিল্পীর সঙ্গে আহসানা অঙ্গনা অংশ নেন কলম্বোর এক কর্মশালায়। সেখানে তাদের নিজস্ব জীবনের গল্প, সংগ্রাম ও স্বপ্নের আলোকে স্ব-প্রতিকৃতি আঁকার মাধ্যমে যাত্রা শুরু হয়। এরপর স্থানীয় কমিউনিটির সঙ্গে সংযোগ তৈরি করে, তাদের জীবনের লড়াই ও অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
আয়োজনের সমাপনী দিনে প্রধান অতিথি ছিলেন হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর এটিএম রেজাউল হক। অন্যান্য অতিথি ছিলেন সোনালী ব্যাংক আঞ্চলিক শাখা বগুড়ার ডিজিএম রাশেদুল ইসলাম,গবেষক ও লেখক নন্দিনী লুইজা, শ্রীলংকার ফটোগ্রাফার মি: রুবিন, হরিজন ঐক্য পরিষদের নিরোধ রাম, বগুড়ার হরিজন নেতা দীপক, নয়ন প্রমুখ।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মোমবাতি প্রজ্বালনে শহীদদের স্মরণ করলো ছাত্রদল
জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও মোমবাতি প্রজ্বালনের মাধ্যমে ঐতিহাসিক জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণ করেছে ছাত্রদল। ছাত্র জনতার বিজয়ের বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে সোমবার রাত ১২টার পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘আলোয় আলোয় স্মৃতি সমুজ্জ্বল’ শিরোনামে এ কর্মর্সূচি পালন করেন সংগঠনটির বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মী। একইসঙ্গে তারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ৩৬ দিনব্যাপী কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান, সাবেক ছাত্রদল সভাপতি আসিফুজ্জামান রিপন, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসিরসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
৩৬ দিনের কর্মসূচি উদ্বোধন: বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘এটি শুধু মোমবাতি প্রজ্বলন নয়, গণতন্ত্রের নতুন যাত্রার সূচনা। এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একসময় ছিলো ভয় আর আতংকের প্রতীক; আজ তা আশার আলো ছড়াচ্ছে। শেখ হাসিনা ছাত্রদের কণ্ঠ স্তব্ধ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পারেননি। আজকের এই আলোক প্রজ্বালনের মাধ্যমে আমাদের ৩৬ দিনের কর্মসূচির শুভ সূচনা হলো।’
আমানুল্লাহ আমান বলেন, ‘জুলাই মাসে ছাত্রদলের এই আয়োজন ইতিহাসের ধারাবাহিকতা বহন করে। একদিনে এই আন্দোলন গড়ে ওঠেনি। হাজারো মানুষের রক্ত ও ত্যাগের মাধ্যমে এটি গঠিত হয়েছে। আজ আমরা খুনি হাসিনামুক্ত বাংলাদেশ দেখছি। শহীদ ওয়াসিম ও সাঈদের রক্ত বৃথা যাবে না।’
ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন বলেন, ‘চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রদল সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছে এবং শতাধিক নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন। তাঁদের আত্মত্যাগ জাতি কখনও ভুলবে না।”
ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে। কিন্তু ছাত্রদল রাজপথে এককভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। হামলা-মামলার সবচেয়ে বেশি শিকার হয়েছে ছাত্রদলের তৃণমূলের নেতাকর্মীরাই।’
এই কর্মসূচির মাধ্যমে ছাত্রদলের নেতৃত্বে শুরু হলো ৩৬ দিনব্যাপী একাধিক আন্দোলন-প্রচারণা ও স্মরণ কর্মসূচি। যা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দেশব্যাপী বিস্তৃত থাকবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।