ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় শ্রমিক দল, যুবদল, কলেজ ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। আজ সোমবার সাতজনের নাম উল্লেখ করে এই মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাব্বত খান। এর আগে গতকাল রোববার ধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূর স্বামী তজুমদ্দিন উপজেলার একটি ইউনিয়নের বাসিন্দা। তবে ঢাকায় থাকেন। তিনি দুই বিয়ে করেছেন। ওই ব্যক্তি বলেন, ১৪-১৫ দিন আগে তিনি ঢাকা থেকে বাড়ি আসেন। পরে গত শনিবার দ্বিতীয় স্ত্রী তাঁকে তাঁর বাসায় ডেকে নেন। সেখানে রাতের বেলা উপজেলা শ্রমিক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো.

ফরিদ উদ্দিন, যুবদল কর্মী মো. আলাউদ্দিন, তজুমদ্দিন সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি মো. রাসেল আহমেদ ওরফে রাসেল রানাসহ পাঁচ-ছয়জনের একটি দল ঘরের ভেতর প্রবেশ করে। তাঁরা এসই মারধর করেন। দ্বিতীয় স্ত্রী সংসার করবেন না উল্লেখ করে তাঁরা চার লাখ টাকা দিতে চাপ দেন। তবে তিনি এত টাকা দিতে পারবেন না জানালে আবার রড-হাতুড়ি দিয়ে রানের ওপর, হাতে-পিঠে মারতে থাকেন। তাঁকে অন্য একটি ঘরে আটকে রেখে রাতভর নির্যাতন করেন।

ওই ব্যক্তি আরও বলেন, খবর পেয়ে রোববার সকালে তাঁর প্রথম স্ত্রী ঘটনাস্থলে আসেন। প্রথম স্ত্রীকে দেখে আবারও রড-হাতুড়ি দিয়ে তাঁকে বেধড়ক পেটানো শুরু করেন। এ সময় প্রথম স্ত্রী হামলাকারীদের হাত-পা ধরে স্বামীকে ছেড়ে দিতে বলেন। একপর্যায়ে তাঁরা চার লাখ টাকার বদলে এক লাখ টাকা দিতে বলেন। তখন প্রথম স্ত্রী তাঁর শ্বশুরকে ফোন করে টাকার জন্য বলেন। টাকা আসছে শুনে-হামলাকারীরা প্রথম স্ত্রীকে ঘরে রেখে স্বামীকে দোকানে চা খাওয়ার কথা বলে বাইরে নিয়ে যান।

ওই নারী প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর স্বামীকে বের করে নিয়ে যাওযার পর সন্ত্রাসীরা ঘরের দরজা-জানালা আটকে তাঁকে ধর্ষণ করেন। তিনি চিৎকার করলে বাড়ির নারীরা দরজা-জানালা খুলতে চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁকে রক্ষা করতে পারেননি।

ভুক্তভোগী দম্পতি বলেন, সন্ত্রাসীরা এ ঘটনা কাউকে না বলার শর্তে তাঁদের ছেড়ে দেন। এর পর থেকে প্রথম স্ত্রী গ্রামে ফিরে বারবার আত্মহত্যা করতে যান। আর গ্রামবাসী উদ্ধার করেন। অবশেষে তাঁরা গ্রামবাসীর কাছে ঘটনা খুলে বলেন। গ্রামের বাসিন্দারা তখন ৯৯৯ ফোন দিয়ে পুলিশে খবর দেন। সোমবার পুলিশ এসে তাঁদের অভিযোগপত্র গ্রহণ করে।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে প্রধান আসামি উপজেলা শ্রমিক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ফরিদ উদ্দিন ও যুবদল কর্মী মো. আলাউদ্দিন গা ঢাকা দেন। তাঁদের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। তবে তজুমদ্দিন সরকারি কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাসেল আহমেদ প্রথম আলোকে মুঠোফোনে বলেন, যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানে তিনি একসময় থাকতেন, তিনি এখন সেখানে থাকেন না। সেখানে আরেক রাসেল আছে। কিন্তু তজুমদ্দিনে বিবদমান বিএনপির ষড়যন্ত্রে পড়ে তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে।

মামলার আরেক আসামি কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীন বলেন, তিনি তজুমদ্দিন সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী। তাঁকেও ষড়যন্ত্রমূলক ফাঁসানো হচ্ছে।

তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাব্বত খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সোমবার বাদীর অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা হয়েছে। মামলায় সাতজনের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম স ত র দল র য গ ম উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ময়মনসিংহে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের তিন দিন পর মামলা, দুজন গ্রেপ্তার

প্রতীকী ছবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভোলায় চাঁদা না পেয়ে স্বামীকে বেঁধে মারধর, স্ত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ
  • ময়মনসিংহে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের তিন দিন পর মামলা, দুজন গ্রেপ্তার