সরকারি চাকরিতে চার ভাগের এক ভাগ পদ ফাঁকা
Published: 30th, June 2025 GMT
সরকারি চাকরির বিপুলসংখ্যক পদ শূন্য হয়ে পড়ে আছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য বলছে, সরকারি চাকরিতে অনুমোদিত পদের মধ্যে ৪ লাখ ৬৮ হাজার ২২০টি পদ শূন্য, যা মোট অনুমোদিত পদের ২৪ দশমিক ৪০ শতাংশ। অর্থাৎ প্রায় চার ভাগের এক ভাগ ফাঁকা।
আজ সোমবার সরকারি কর্মচারীদের পরিসংখ্যান-২০২৪ প্রকাশ করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়, বর্তমানে সরকারি চাকরিতে অনুমোদিত পদ আছে ১৯ লাখ ১৯ হাজার ১১১টি। এর মধ্যে কর্মরত আছেন ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৮৯১ জন।
দেশে অসংখ্য শিক্ষিত তরুণ-তরুণী চাকরির জন্য হন্যে হয়ে ছুটে চলছেন। এমন অবস্থায় সরকারি চাকরির বিপুলসংখ্যক পদ ফাঁকা পড়ে আছে। অবশ্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রতিবছর যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করে, তাতে দেখা যায় পদ ফাঁকা থাকার হারটি প্রায় একই রকমের। যেমন সরকারি কর্মচারীদের পরিসংখ্যান-২০২২–এর তথ্য বলছে তখনো সরকারি চাকরিতে অনুমোদিত পদের প্রায় ২৬ শতাংশ পদ শূন্য ছিল, যা সংখ্যায় প্রায় ৫ লাখ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আগামী বছরের শুরুতেই নির্বাচন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ড. ইউনূস
আগামী বছরের শুরুতেই বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। মার্কো রুবিও বাংলাদেশের সংস্কার কর্মসূচি এবং আগামী বছরের শুরুতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মার্কো রুবিও সোমবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। তারা অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার এবং নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করেছেন বলে জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, উভয় নেতা পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন। এর মধ্যে ছিল বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য আলোচনা, চলমান সংস্কার প্রক্রিয়া, গণতন্ত্রে উত্তরণের রূপরেখা, আসন্ন সাধারণ নির্বাচন ও রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তা। খবর বাসস ও ইউএনবির।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, দুই নেতার মধ্যে ১৫ মিনিট কথা হয়েছে। এই আলোচনা ছিল অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ, বন্ধুসুলভ ও গঠনমূলক। এর মাধ্যমে দুই দেশের চমৎকার সম্পর্কের প্রতিফলন ঘটেছে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তারা ফোনালাপ করেছেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও বাংলাদেশের সংস্কার কর্মসূচি এবং আগামী বছরের শুরুতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্য এবং রেমিট্যান্সের শীর্ষ উৎস। এ পরিপ্রেক্ষিতে উভয় নেতা শিগগিরই শুল্ক বিষয়ে আলোচনা চূড়ান্ত হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন, যা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের প্রসার ঘটাবে। দুই নেতা ভূরাজনৈতিক ইস্যুতেও মতবিনিময় করেন, যার মধ্যে ছিল স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের গুরুত্ব এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক।
গণতান্ত্রিক উত্তরণে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা কামনা করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আগামী বছরের শুরুতেই নির্বাচন হবে এবং সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর চলমান সংলাপ দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার কাঙ্ক্ষিত সংস্কারে সহায়ক হবে। নির্বাচন কমিশন নিরলস পরিশ্রম করছে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে পুনর্গঠিত করতে, যা পূর্ববর্তী সরকার সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছিল। আমাদের তরুণরা এবার জীবনে প্রথমবারের মতো ভোট দেবে। প্রধান উপদেষ্টা সাধারণ নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ সফরের জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিওকে আমন্ত্রণ জানান, যাতে তিনি দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের বিষয় প্রত্যক্ষ করতে পারেন। তিনি বলেন, এমন সফর আমাদের তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।
অধ্যাপক ইউনূস জানান, সম্প্রতি বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যান্ডাউয়ের সঙ্গে ফলপ্রসূ বৈঠক করেছেন এবং উভয় পক্ষ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক দৃঢ় করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। বাংলাদেশের অনুরোধে পারস্পরিক শুল্ক ব্যবস্থা ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখতে সম্মত হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান প্রধান উপদেষ্টা।
রোহিঙ্গাদের জন্য ধারাবাহিকভাবে সহায়তা প্রদান করায় ওয়াশিংটনের প্রশংসা করেন প্রধান উপদেষ্টা। ২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র এই মানবিক সহায়তায় সবচেয়ে বড় দাতা হিসেবে কাজ করছে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান এবং মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের সম্ভাবনা এখন আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে উজ্জ্বল এবং বাংলাদেশ এ লক্ষ্যে কাজ করছে।
ফোনালাপের খবর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে :মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, দুই নেতা যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর করা এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা জোরদারে একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। ফোনালাপের খবর দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে।