সঞ্জীব চৌধুরীকে চেনেন অথচ তাঁর ‘এই নষ্ট শহরে/ নাম না জানা যে কোনো মাস্তান’ গানটি শোনেননি এমন কাউকে পাওয়া যাবে না। একটা সময় ঢাকাসহ সারা দেশে পাড়াভিত্তিক মাস্তানি ছিল নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়। এখনো নেই, তা বলা যাবে না, তবে সঞ্জীবের এই গানের দৃশ্যকল্প মুহূর্তেই আমাদের নিয়ে যায় এক নস্টালজিক সময়ে। ’৯০–এর দশকের শুরুর দিকে বিটিভিতে যাঁরা হুমায়ূন আহমেদের ‘কোথা কেউ নেই’ ধারাবাহিক নাটকে বাকের ভাই চরিত্রটি দেখেছেন, তাঁরা নিশ্চয় গানটির সঙ্গে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার সম্বন্ধ স্থাপন করতে পারবেন।

তবে কি নাটকটি থেকে বা ওই সময়ের পাড়াভিত্তিক মাস্তানি দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েই সঞ্জীব গেয়েছিলেন, ‘সকালে ঠিক খিস্তিখেউড় রাজা-উজির মেরে/ মাস্তানি সব সেরে/ বিকেল বেলা তোমার বাড়ির লাগোয়া পথ ধরে/ যাচ্ছে যখন ফিরে/ ভুলে না হয় দিয়েছিল শিস’?—মোটেও নয়। গানটির জন্ম আরও আগে!

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় নিজের লেখা গানটি গেয়েছিলেন কবি ও ভাবুক ফরহাদ মজহার। আন্দোলনে তো কত গান তৈরি হয়! জমা পড়ে হাজারও স্মৃতি। সেই স্মৃতির কথা শোনা যাক ফরহাদ মজহারের কণ্ঠে—‘সঞ্জীব আমার এই গানটি (এই নষ্ট শহরে) শুনেছিল, ইউনিভার্সিটির সামনে আমি গাইছিলাম এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময়। তখন ওর গানটি ভালো লেগেছে। সঞ্জীব আরও গান চেয়েছে, আমি আর দিই নাই।’

ফরহাদ মজহার কেন সঞ্জীব চৌধুরীকে আর লিরিক দেননি, সে আলাপ ভিন্ন। তবে তরুণদের মুখে মুখে ফেরা এই গান সারা দেশের মানুষের শোনার সুযোগ হয়েছে আরও পরে। ২০০২ সালে রিলিজ হয় ‘দলছুট’ ব্যান্ডের তৃতীয় অ্যালবাম ‘আকাশচুরি’। সেই অ্যালবামে জায়গা করে নেয় ‘এই নষ্ট সময়ে’। এই লিরিকটি মজহারের কোনো কাব্যগ্রন্থে স্থান পায়নি। গানটি জনপ্রিয় হওয়ার পর একটি গুঞ্জন ওঠে যে এটি নাকি ‘ফেনীর গডফাদার’ হিসেবে পরিচিত জয়নাল হাজারীকে নিয়ে রচিত। তবে এই গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়ে ফরহাদ মজহার জানিয়েছেন, জয়নাল হাজারীর সঙ্গে ‘এই নষ্ট সময়ে’ গানের কোনো সম্পর্কই নেই।

সঞ্জীব চৌধুরীর আরেকটি মাস্টারপিস ‘বয়স হলো সাতাশ’। কীভাবে লেখা হলো এই গান? লিখেছেনই–বা কে? ২০০৫ সালে রিলিজ হওয়া সঞ্জীবের একমাত্র একক অ্যালবাম ‘স্বপ্নবাজি’ বাংলা গানের ধারায় অনন্য এক সংযোজন। ষাটের দশকের অন্যতম কবি ফরহাদ মজহারের লিরিক নিয়ে যেমন কাজ করেছেন, তেমনি সঞ্জীব সুর বসাতে সমকালীন কবিদের কাছ থেকেও চেয়ে নিয়েছেন লিরিক বা কবিতা। ২০০২ সালে প্রকাশিত হয় কবি ও কথাসাহিত্যিক আনিসুল হকের চতুর্থ কাব্যগ্রন্থ ‘জলরংপদ্য’। সেই বইয়ের দীর্ঘ এক কবিতা থেকে সৃষ্টি হয়েছিল ‘বয়স হলো সাতাশ’।

আনিসুল হক.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফরহ দ মজহ র এই গ ন

এছাড়াও পড়ুন:

লোপেজ বললেন, ‘বিচ্ছেদ জীবনের সেরা ঘটনা’

তাঁদের জীবনের গল্প সিনেমার চিত্রনাট্যের মতোই। তুমুল প্রেম, বাগ্‌দানের পর সবাই যখন বিয়ের অপেক্ষায়; তখন হঠাৎই আসে বিচ্ছেদের ঘোষণা। এরপর দীর্ঘ সময় গড়িয়েছে, দুজনই ভিন্ন সম্পর্কে থিতু হয়েছেন। তবে নিয়তি বোধ হয় চেয়েছিল তাঁদের পুনর্মিলন, শেষ পর্যন্ত সেটাও হয়। কিন্তু দুই বছর গড়াতেই সম্পর্ক ভাঙে, সম্পর্কের দ্বিতীয় সুযোগও কাজে লাগাতে পারেননি হলিউডের তারকা দম্পতি বেন অ্যাফ্লেক ও জেনিফার লোপেজ। বিচ্ছেদের পর বছর পার হয়েছে কিন্তু এ বিষয়ে দুই তারকার কেউই তেমন কথা বলেননি। এবার সিবিএস নিউজ সানডে মর্নিং অনুষ্ঠানে এসে বিচ্ছেদ নিয়ে প্রথমবার সবিস্তার কথা বললেন লোপেজ।

একনজরে বেন-লোপেজের সম্পর্ক
প্রথম পরিচয়: ১৯৯৮ সালে, ‘আর্মাগেডন’ ছবির প্রিমিয়ারে।
প্রেম: ২০০২ সালে, ‘গিগলি’ সিনেমার সেটে।
প্রথম বাগ্‌দান: ২০০২ সালে, ২০০৩ সালে বিয়ে করার ঘোষণা।
প্রথম বিচ্ছেদ: ২০০৪ সালে বাগ্‌দান ভেঙে দিয়ে বিচ্ছেদের ঘোষণা।
পুনর্মিলন: ২০২১ সালে আবার প্রেম শুরু করেন বেন ও লোপেজ।
দ্বিতীয় বাগ্‌দান: ২০২২ সালে এপ্রিলে দ্বিতীয়বার বাগ্‌দান সারেন।
অবশেষে বিয়ে: ২০২২ সালের ১৬ জুলাই বিয়ে করেন এই তারকা জুটি।
বিচ্ছেদের আবেদন: ২০২৪ সালের ২০ আগস্ট বিচ্ছেদের আবেদন করেন লোপেজ।

২৮ সেপ্টেম্বর প্রচারিত অনুষ্ঠানে লোপেজ বলেন, বেনের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর পর তাঁর উপলব্ধি ছিল, এটা তাঁর জীবনের ঘটে যাওয়া সেরা ঘটনা। বিচ্ছেদকে ‘সেরা ঘটনা’ বলার পেছনের কারণ ব্যাখ্যা করে এই গায়িকা-অভিনেত্রী বলেন, ‘এটা আমাকে বদলে দিয়েছে। এটা আমাকে এমনভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করেছে, যেটা আমার জন্য দরকার ছিল।’

অ্যাফ্লেকের প্রতি কৃতজ্ঞতা
২০২৪ সালের আগস্টে লোপেজ বিচ্ছেদের আবেদন করেন; চূড়ান্ত হয় ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে। ডিভোর্সের সময়ে লোপেজ শুটিং করছিলেন নতুন ছবি ‘কিস অব দ্য স্পাইডার ওমেন’-এর। এ সিনেমায় তাঁর সঙ্গে আরও অভিনয় করেছেন দিয়েগো লুনা ও টোনাটিউ। এটি ১৯৯৩ সালের ব্রডওয়ে মিউজিক্যাল থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মিত হয়েছে সিনেমাটি, যা মানুয়েল পুইগের ১৯৭৬ সালের উপন্যাসের ওপর ভিত্তি করে তৈরি। এই গল্প আগেও ১৯৮৫ সালে সিনেমার পর্দায় এসেছে, যেখানে অভিনয় করেছিলেন উইলিয়াম হার্ট, রাউল জুলিয়া ও সোনিয়া ব্রাগা। নতুন সংস্করণে জেনিফার লোপেজ প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন, যা তাঁর প্রথম মিউজিক্যাল চলচ্চিত্রও বটে।

বেন অ্যাফ্লেক ও জেনিফার লোপেজ। রয়টার্স

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লোপেজ বললেন, ‘বিচ্ছেদ জীবনের সেরা ঘটনা’