সমকালীন কবিতা যেভাবে উঠে এল সঞ্জীবের কণ্ঠে
Published: 1st, July 2025 GMT
সঞ্জীব চৌধুরীকে চেনেন অথচ তাঁর ‘এই নষ্ট শহরে/ নাম না জানা যে কোনো মাস্তান’ গানটি শোনেননি এমন কাউকে পাওয়া যাবে না। একটা সময় ঢাকাসহ সারা দেশে পাড়াভিত্তিক মাস্তানি ছিল নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়। এখনো নেই, তা বলা যাবে না, তবে সঞ্জীবের এই গানের দৃশ্যকল্প মুহূর্তেই আমাদের নিয়ে যায় এক নস্টালজিক সময়ে। ’৯০–এর দশকের শুরুর দিকে বিটিভিতে যাঁরা হুমায়ূন আহমেদের ‘কোথা কেউ নেই’ ধারাবাহিক নাটকে বাকের ভাই চরিত্রটি দেখেছেন, তাঁরা নিশ্চয় গানটির সঙ্গে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার সম্বন্ধ স্থাপন করতে পারবেন।
তবে কি নাটকটি থেকে বা ওই সময়ের পাড়াভিত্তিক মাস্তানি দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েই সঞ্জীব গেয়েছিলেন, ‘সকালে ঠিক খিস্তিখেউড় রাজা-উজির মেরে/ মাস্তানি সব সেরে/ বিকেল বেলা তোমার বাড়ির লাগোয়া পথ ধরে/ যাচ্ছে যখন ফিরে/ ভুলে না হয় দিয়েছিল শিস’?—মোটেও নয়। গানটির জন্ম আরও আগে!
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় নিজের লেখা গানটি গেয়েছিলেন কবি ও ভাবুক ফরহাদ মজহার। আন্দোলনে তো কত গান তৈরি হয়! জমা পড়ে হাজারও স্মৃতি। সেই স্মৃতির কথা শোনা যাক ফরহাদ মজহারের কণ্ঠে—‘সঞ্জীব আমার এই গানটি (এই নষ্ট শহরে) শুনেছিল, ইউনিভার্সিটির সামনে আমি গাইছিলাম এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময়। তখন ওর গানটি ভালো লেগেছে। সঞ্জীব আরও গান চেয়েছে, আমি আর দিই নাই।’
ফরহাদ মজহার কেন সঞ্জীব চৌধুরীকে আর লিরিক দেননি, সে আলাপ ভিন্ন। তবে তরুণদের মুখে মুখে ফেরা এই গান সারা দেশের মানুষের শোনার সুযোগ হয়েছে আরও পরে। ২০০২ সালে রিলিজ হয় ‘দলছুট’ ব্যান্ডের তৃতীয় অ্যালবাম ‘আকাশচুরি’। সেই অ্যালবামে জায়গা করে নেয় ‘এই নষ্ট সময়ে’। এই লিরিকটি মজহারের কোনো কাব্যগ্রন্থে স্থান পায়নি। গানটি জনপ্রিয় হওয়ার পর একটি গুঞ্জন ওঠে যে এটি নাকি ‘ফেনীর গডফাদার’ হিসেবে পরিচিত জয়নাল হাজারীকে নিয়ে রচিত। তবে এই গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়ে ফরহাদ মজহার জানিয়েছেন, জয়নাল হাজারীর সঙ্গে ‘এই নষ্ট সময়ে’ গানের কোনো সম্পর্কই নেই।
সঞ্জীব চৌধুরীর আরেকটি মাস্টারপিস ‘বয়স হলো সাতাশ’। কীভাবে লেখা হলো এই গান? লিখেছেনই–বা কে? ২০০৫ সালে রিলিজ হওয়া সঞ্জীবের একমাত্র একক অ্যালবাম ‘স্বপ্নবাজি’ বাংলা গানের ধারায় অনন্য এক সংযোজন। ষাটের দশকের অন্যতম কবি ফরহাদ মজহারের লিরিক নিয়ে যেমন কাজ করেছেন, তেমনি সঞ্জীব সুর বসাতে সমকালীন কবিদের কাছ থেকেও চেয়ে নিয়েছেন লিরিক বা কবিতা। ২০০২ সালে প্রকাশিত হয় কবি ও কথাসাহিত্যিক আনিসুল হকের চতুর্থ কাব্যগ্রন্থ ‘জলরংপদ্য’। সেই বইয়ের দীর্ঘ এক কবিতা থেকে সৃষ্টি হয়েছিল ‘বয়স হলো সাতাশ’।
আনিসুল হক.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফরহ দ মজহ র এই গ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ডিমে শিশুর অ্যালার্জি কেন হয়, কীভাবে বুঝবেন, সমাধান কী
কেন হয়
শিশুদের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা পুরোপুরি গড়ে না ওঠায় অনেক সময় ডিমের প্রোটিনকে শরীর ‘অচেনা’ বা ক্ষতিকর হিসেবে ভুলভাবে শনাক্ত করে। ফলে ঠিক যেভাবে রোগজীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধব্যবস্থা কাজ করে, একই ধরনের প্রতিক্রিয়া এখানে সৃষ্টি হয়। এই প্রতিক্রিয়া তাৎক্ষণিকভাবেও হতে পারে, আবার অনেক ক্ষেত্রে কয়েক ঘণ্টা পরেও দেখা দিতে পারে।
লক্ষণ● ত্বকে লাল লাল চাকা, একজিমা।
● পেট ব্যথা, ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব বা মুখের চারপাশে চুলকানো।
● সর্দি, শ্বাস নেওয়ার সময় শোঁ শোঁ শব্দ, শ্বাসকষ্ট হওয়া।
● দ্রুত হৃৎস্পন্দন, রক্তচাপ কমে যাওয়া।
● অ্যানাফাইলেকসিস শক।
আরও পড়ুনডিম দিনে কয়টি ও কীভাবে খাবেন০৫ জুলাই ২০২৫রোগনির্ণয়● শিশুকে প্রথম ডিম খাওয়ানোর সময় অ্যালার্জি উপসর্গ বোঝা যায়।
● চিকিৎসক যদি মনে করেন ডিম বা ডিমযুক্ত খাবার খেলে অ্যালার্জি হয়, তবে তা স্কিন টেস্ট করে নিশ্চিত হতে পারেন।
চিকিৎসা● ডিম ও ডিমযুক্ত খাবার না খাওয়া।
● অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া দমনে অ্যান্টি হিস্টামিন, মারাত্মক অ্যানাফাইলেকসিসে শক ইনজেকশন এপিনেফ্রিন ব্যবহার।
● ডিমে অ্যালার্জি থাকলে কিছু খাদ্য উপাদান পরিহার করা যেমন—এলবুমিন, গ্লোবুলিন ইত্যাদি।
অধ্যাপক ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী, সাবেক বিভাগীয় প্রধান, শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
আরও পড়ুনডিমের কমলা, না হলুদ কুসুম—কোনটি বেশি স্বাস্থ্যকর৩১ অক্টোবর ২০২৫