গাজায় ত্রাণকেন্দ্রে মৃত্যুফাঁদ, ভয়ানক নৃশংসতা দেখাচ্ছে ইসরায়েল
Published: 2nd, July 2025 GMT
ফিলিস্তিনিদের ওপর টানা ৩৬০ দিন ধরে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে ইসরায়েল। একদিকে গুলি-বোমায় মরছে নিরপরাধ মানুষ, অন্যদিকে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে খাদ্যকেন্দ্রে পাতা হচ্ছে মৃত্যুফাঁদ। পাশাপাশি ভাড়াটে সশস্ত্র গ্রুপের ছিনতাইয়ের কবলে পড়ছে গাজাবাসী। ইসরায়েলি নৃশংসতার এ এক ভয়ানক রূপ। বিশ্ববাসী এগুলো প্রত্যক্ষ করছে নির্লিপ্তভাবে। চোখের সামনে এই ভয়াবহতা ঘটলেও বিশ্বনেতারা নীরব। ক্যামেরার বাইরেও ঘটছে ধর্ষণ-নির্যাতন। রুশ গণমাধ্যম আরটির বিশ্লেষণে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
গাজায় অনেক চিকিৎসককে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। গত ১০০ দিন ধরে উপত্যকায় পূর্ণ অবরোধ কায়েম রেখেছে ইসরায়েল। ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের খাদ্য, খাবার পানি, ওষুধ, জ্বালানিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। জ্বালানি সংকট সৃষ্টি করে অ্যাম্বুলেন্সগুলো অচল রাখা হয়েছে। গাজায় ইসরায়েলি অবরোধ নতুন নয়। এর আগে মূলত ১৭ বছর ধরে তারা উপত্যকাটিকে বারবার অবরুদ্ধ করেছে।
গত মে মাসের শেষ দিকে গাজায় মার্কিন ভাড়াটে সশস্ত্র গ্রুপ সক্রিয় করা হয়েছে। তারাই খাবারের আশায় ত্রাণকেন্দ্রে আসা ক্ষুধার্তদের বুকে গুলি চালাচ্ছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী অবিরাম বোমাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে। তারা হাসপাতালগুলো ধ্বংস করে দিচ্ছে। চিকিৎসক, রোগীকে অপহরণ করা হচ্ছে। মসজিদ, গির্জা, স্কুল, জাতিসংঘ কেন্দ্রসহ বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্বিচার বোমা হামলা চলছে। ইসরায়েল ঘোষিত কথিত নিরাপদ অঞ্চলেই এসব ঘটছে। গাজায় ২০০ জনের বেশি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। ইচ্ছা করেই চিকিৎসকদের মারা হচ্ছে।
এর আগে ২০১৪ সালে ইসরায়েলিরা পাহাড়ের ধারে খাদ্য, পানি রেখে মৃত্যুফাঁদ পেতেছিল পৈশাচিক আনন্দ লাভের উদ্দেশ্যে। ২০০৯ সালে এক গুলিতে দুই অন্তঃসত্ত্বা নারীকে হত্যা করে উল্লাস করেছিল ইসরায়েলি স্নাইপাররা।
ইরানের ওপর আক্রমণের সময়ও গাজায় হামলা থামায়নি ইসরায়েল। মার্কিন-ইসরায়েল প্রতিষ্ঠিত তথাকথিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) ক্ষুধার্তদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত ছলনা করছে। ভাড়াটে বন্দুকধারীদের মাধ্যমে খাদ্য বিতরণের ব্যবস্থা করে মৃত্যুফাঁদ পাতা হয়েছে। কিছু গণমাধ্যমের ক্যামেরার সামনেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হচ্ছে।
দ্য ক্র্যাডলের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজায় ত্রাণ লুটকারী সশস্ত্র গোষ্ঠীটির নেতা ইয়াসের আবু শাবাব সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএসএসের সঙ্গে যুক্ত। ইসরায়েলের ইন্ধনে তার দল গাজায় ত্রাণ লুট করছে। অথচ হামাসের ওপর দোষ চাপানো হচ্ছে। হামাসের বিরুদ্ধে আরও যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য ইসরায়েল এই কৌশল নিয়েছে।
ফিলিস্তিনি মানবিক সমন্বয়বিষয়ক জাতিসংঘ কার্যালয়ের (ওসিএইচএ) প্রধান জোনাথন হুইটল এই পরিস্থিতিকে ‘ক্ষুধাকে অস্ত্র বানিয়ে হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। জাতিসংঘ মহাসচিবও বলেছেন, ক্ষুধার্ত মানুষ পরিবারকে বাঁচাতে চাচ্ছে, অথচ তাদেরই গুলি-বোমায় হত্যা করা হচ্ছে। মূলত এভাবেই তারা গাজাবাসীর ওপর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করছে।
ইউরো-মেড হিউম্যান রাইটস মনিটরের চেয়ারম্যান র্যামি আবদু’র মতে, খাদ্য নিতে আসা মানুষদের মাথা-বুকে নির্বিচারে গুলি করা হচ্ছে। শিশুদের মায়ের কোলে হত্যা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি ল্যানসেটের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ১ লাখ ৮৬ হাজারের বেশি হতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে গাজায় কর্মরত নরওয়ের নাগরিক ড.
বেন-গুরিয়ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইয়াকভ গার্বের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়, ত্রাণকেন্দ্রগুলো বিশেষ পরিকল্পনায় তৈরি করা হয়েছে। এগুলোর বেশির ভাগই সামরিক স্থাপনাসংলগ্ন এলাকায়। কেন্দ্রগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে একটি মাত্র প্রবেশপথ। একবার ঢুকলে বের হওয়া কঠিন।
মানবাধিকার আইনজীবী ও জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার সাবেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ক্রেগ মোখিবার সম্প্রতি এক পোস্টে লেখেন, ইসরায়েলের নেতারা মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত। তারা এখন নাৎসিদের মতোই ঘৃণিত। গণহত্যার দায় থেকে ইসরায়েল রেহাই পাবে না।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ইসর য় ল র র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
বাউবির এইচএসসি পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ, কবে কখন কোন বিষয়ে পরীক্ষা
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার সময়সূচি (রুটিন) প্রকাশ করা হয়েছে। পরীক্ষা শুরু হবে ৪ জুলাই, শেষ হবে আগামী ৮ আগস্ট।
পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে অবশ্যই পরীক্ষার্থীদের নিজ নিজ কেন্দ্রে প্রবেশ করে পরীক্ষাকক্ষে নিজের আসনে বসতে হবে।
বাউবির ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. হাবিবুল্যাহ মাহমুদের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এই পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে। বিশেষ প্রয়োজনে কর্তৃপক্ষ সময়সূচি পরিবর্তন করতে পারবে। একনজরে দেখে নিই কবে, কখন, কোন বিষয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
সকালের পরীক্ষা-সময়: সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত
৪ জুলাই: বাংলা (আবশ্যিক) প্রথম পত্র
১১ জুলাই: ইংরেজি (আবশ্যিক) প্রথম পত্র
১৮ জুলাই: তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আবশ্যিক) প্রথম পত্র
২৫ জুলাই: পৌরনীতি ও সুশাসন প্রথম পত্র/পদার্থবিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) প্রথম পত্র/ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা প্রথম পত্র
২৬ জুলাই: ভূগোল (তত্ত্বীয়) প্রথম পত্র/গার্হস্থ্যবিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) প্রথম পত্র/কৃষিশিক্ষা (তত্ত্বীয়) প্রথম পত্র
১ আগস্ট: সমাজবিজ্ঞান প্রথম পত্র/যুক্তিবিদ্যা প্রথম পত্র/সমাজকর্ম প্রথম পত্র/রসায়ন (তত্ত্বীয়) প্রথম পত্র/হিসাববিজ্ঞান প্রথম পত্র
২ আগস্ট: অর্থনীতি প্রথম পত্র/জীববিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) প্রথম পত্র/উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন প্রথম পত্র
৮ আগস্ট: ইতিহাস প্রথম পত্র/ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি প্রথম পত্র/ইসলাম শিক্ষা প্রথম পত্র/উচ্চতর গণিত (তত্ত্বীয়) প্রথম পত্র/ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও বিমা প্রথম পত্র
বিকেলের পরীক্ষা-সময়: বেলা ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত
৪ জুলাই: বাংলা (আবশ্যিক) দ্বিতীয় পত্র
১১ জুলাই: ইংরেজি (আবশ্যিক) দ্বিতীয় পত্র
২৫ জুলাই: পৌরনীতি ও সুশাসন দ্বিতীয় পত্র/পদার্থবিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) দ্বিতীয় পত্র/ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা দ্বিতীয় পত্র
২৬ জুলাই: ভূগোল (তত্ত্বীয়) দ্বিতীয় পত্র/গার্হস্থ্যবিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) দ্বিতীয় পত্র/ কৃষিশিক্ষা (তত্ত্বীয়) দ্বিতীয় পত্র
১ আগস্ট: সমাজবিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্র/যুক্তিবিদ্যা দ্বিতীয় পত্র/সমাজকর্ম দ্বিতীয় পত্র/রসায়ন (তত্ত্বীয়) দ্বিতীয় পত্র/হিসাববিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্র
২ আগস্ট: অর্থনীতি দ্বিতীয় পত্র/জীববিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) দ্বিতীয় পত্র/উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন দ্বিতীয় পত্র
৮ আগস্ট: ইতিহাস দ্বিতীয় পত্র/ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি দ্বিতীয় পত্র/ইসলাম শিক্ষা দ্বিতীয় পত্র/উচ্চতর গণিত (তত্ত্বীয়) দ্বিতীয় পত্র/ ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও বিমা দ্বিতীয় পত্র
ব্যবহারিক পরীক্ষার সময়
সব বিষয়ের ব্যবহারিক পরীক্ষা ১০ থেকে ১৭ আগস্টের মধ্যে অবশ্যই সম্পন্ন করতে হবে। ২১ আগস্টের মধ্যে ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বরপত্র সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক কেন্দ্রে পৌঁছাতে হবে।
বিস্তারিত তথ্য জানতে ওয়েবসাইট