ডেমোক্রেটিক প্রাইমারিতে মেয়র পদপ্রার্থী জোহরান মামদানির বিজয় গতকাল মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেছে নিউইয়র্ক সিটির নির্বাচন বোর্ড। এর ফলে আসছে নভেম্বরের মেয়র নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে তাঁর মনোনয়ন চূড়ান্ত হলো।

গতকাল প্রকাশিত র‍্যাঙ্কড-চয়েস ভোটের (পছন্দের ক্রমানুযায়ী পাঁচজন প্রার্থীকে ভোট দেওয়া) ফলাফলে দেখা গেছে, জোহরান তৃতীয় ধাপে ৫৬ শতাংশ ভোট পেয়ে জয় নিশ্চিত করেছেন। অথচ তুলনামূলকভাবে অপরিচিত নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলির সদস্য হিসেবে ভোটের প্রচার শুরু করেছিলেন তিনি। তৃতীয় ধাপে জয় পেতে একজন প্রার্থীকে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ ভোট পেতে হয়। নিউইয়র্কে ২০২১ সাল থেকে শুরু হয় র‍্যাঙ্কড চয়েস ভিত্তিতে ভোটগ্রহণ।

ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থী হিসেবে জোহরান নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামসের মুখোমুখি হবেন।

২০২১ সালে প্রথমবারের মতো মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী হিসেবে জয় পান অ্যাডামস। তবে এবার তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়বেন। দুর্নীতির অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হলেও পরে বিচার বিভাগ খারিজ করে দেন। এরপরই দল থেকে সরে দাঁড়িয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা একটি নতুন ভিডিওতে জোহরান তাঁর প্রাইমারিতে পাওয়া জয়কে ২০২১ সালে অ্যাডামসের নির্বাচনী প্রচারের সঙ্গে তুলনা করেছেন।

মামদানি বলেন, ‘আমরা সব সময় ভেবেছি, আমাদের বিজয় আসবে র‍্যাঙ্কড-চয়েস ভোটের একাধিক ধাপের পর। প্রথম রাউন্ডেই যখন আমরা এত ভোট পেলাম, যা এরিক অ্যাডামস গত নির্বাচনে সাত রাউন্ড মিলিয়েও পাননি—এটা সত্যিই বিস্ময়কর ছিল।’

ভারতীয় বংশোদ্ভূত ৩৩ বছর বয়সী মামদানি একজন মুসলিম, জন্ম উগান্ডায়। তিনি নিজেকে গণতন্ত্রপন্থী সমাজতান্ত্রিক হিসেবে পরিচয় দেন। প্রাইমারিতে মধ্যপন্থী অভিজ্ঞ রাজনীতিক অ্যান্ড্রু কুমোকে হারিয়েছেন তিনি।

জোহরান মামদানির জয় ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে অস্বস্তির সৃষ্টি করেছে। তাঁদের উদ্বেগের কারণ, নিজের রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে তিনি রিপাবলিকানদের আক্রমণের সহজ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে পারেন।

জোহরানের জয় ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে অস্বস্তির সৃষ্টি করেছে। তাঁদের উদ্বেগের কারণ, নিজের রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে মামদানি রিপাবলিকানদের আক্রমণের সহজ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে পারেন।

নতুন ভিডিওতে জোহরান বলেন, তাঁর লক্ষ্য মানুষের সমর্থন রিপাবলিকান দল থেকে আবার ডেমোক্রেটিক দলের দিকে ফিরিয়ে আনা।

উল্লেখ্য, জোহরান নিউইয়র্ক সিটির এমন কয়েকটি এলাকায় জয়ী হয়েছেন যেখানকার বাসিন্দারা গত বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছিলেন।

নির্বাচন বোর্ড থেকে জোহরানের জয় নিশ্চিত করার পর ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, যদি মামদানি চূড়ান্ত নির্বাচনে জেতেন ও মেয়র হিসেবে নিউইয়র্ক সিটিতে অভিবাসীদের গ্রেপ্তারে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন, তখন তিনি কীভাবে তা সামলাবেন।
জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘তাহলে তো তাঁকে আমাদের গ্রেপ্তার করতেই হবে। দেখুন, আমাদের দেশে কমিউনিস্টের কোনো দরকার নেই। যদি কেউ থাকে, তবে আমি দেশের পক্ষ থেকে খুব সতর্কতার সঙ্গে তাঁর ওপর নজর রাখব।’
জোহরান এর আগে বলেছিলেন, অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযানগুলো লোকজনকে ভীত করে তুলছে এবং যেসব এজেন্ট এসব অভিযান পরিচালনা করছেন, তাঁরা আইন মেনে চলার কোনো আগ্রহই দেখান না।

আমরা সব সময় ভেবেছি, আমাদের বিজয় আসবে র‍্যাঙ্কড-চয়েস ভোটের একাধিক ধাপের পর। প্রথম রাউন্ডেই আমাদের এত ভোট পাওয়া সত্যিই বিস্ময়কর ছিল; যা এরিক গত নির্বাচনে সাত রাউন্ড মিলিয়েও পাননি।জোহরান মামদানি, ডেমোক্রেটিক দল থেকে নিউইয়র্কের মেয়র পদপ্রার্থী

গত সপ্তাহে প্রাইমারির প্রাথমিক ফলাফল ঘোষণার পর, সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী জোহরানকে ফোন করে  প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন। চূড়ান্ত গণনায় কুমো ৪৪ শতাংশ ভোট পেয়েছেন।

দলীয় প্রাইমারিতে হেরে গেলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন কুমো। তবে এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে এটি নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

অ্যাডামসের পাশাপাশি জোহরান রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়া ও স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাটর্নি জিম ওয়াল্ডেনের মুখোমুখি হবেন।

আরও পড়ুনডেমোক্রেটিক পার্টির শীর্ষ পর্যায়ে অস্বস্তিকে পরোয়া করছেন না নিউইয়র্কের মেয়র প্রার্থী জোহরান মামদানি৩০ জুন ২০২৫আরও পড়ুনজোহরান মামদানির নিউইয়র্ক জয় যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনপন্থী রাজনীতিকে চাঙা করছে২৬ জুন ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স বতন ত র প র র থ ন উইয়র ক স ট র প বল ক ন র জন ত ক আম দ র র উন ড

এছাড়াও পড়ুন:

শুল্ক ছাড়া বিদেশ থেকে ফেরার সময় বছরে আনা যাবে একটি ফোন

বিদেশ থেকে পণ্য আনার ক্ষেত্রে ব্যাগেজ বিধিমালায় আবারও কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। তাতে সোনার অলংকার, সোনার বার ও মুঠোফোন আনার সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। এ বিষয়ে আজ বুধবার নতুন এক নির্দেশনা জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বিদ্যমান ব্যাগেজ বিধিমালার আওতায় একজন বিদেশফেরত যাত্রী শুল্ক পরিশোধ করে একটি নতুন মুঠোফোন আনার বিধান রয়েছে। বিধানটি সংশোধন করে এখন বলা হচ্ছে, একজন যাত্রী কোনো শুল্ক ছাড়াই বিদেশ থেকে ফেরার সময় বছরে একবার একটি নতুন মুঠোফোন আনতে পারবেন। আর যেসব প্রবাসীর ব্যুরো অব ম্যানপাওয়ার এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং (বিএমইটি) কার্ড আছে এবং যাঁরা অন্তত ছয় মাস বিদেশে ছিলেন, তাঁরা বছরে শুল্কমুক্ত সুবিধায় দুটি নতুন মুঠোফোন আনতে পারবেন।

এনবিআর গত ২ জুন নতুন ব্যাগেজ বিধিমালা (অপর্যটক যাত্রী ব্যাগেজ বিধিমালা, ২০২৫) জারি করেছিল। আজ বুধবার থেকে নতুন এ ব্যাগেজ বিধিমালা কার্যকর হয়। বিদ্যমান ব্যাগেজ বিধিমালা আরও কার্যকর ও যাত্রীবান্ধব করার উদ্দেশ্যে সেই বিধিমালায় কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে এনবিআর।

এনবিআর বলছে, বিভিন্ন অংশীজন ও মাঠপর্যায়ের দপ্তরগুলোর মতামতের ভিত্তিতে ব্যাগেজ বিধিমালার আওতায় বিদেশ থেকে মুঠোফোন ও স্বর্ণালংকার আনার সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। নতুন নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, বিদেশফেরত একজন যাত্রী কোনো শুল্ক ছাড়াই বছরে একবার সর্বোচ্চ ১০০ গ্রাম সোনার অলংকার আনতে পারবেন। আর রুপার অলংকার আনতে পারবেন ২০০ গ্রাম। এ ছাড়া নতুন বিধিমালার আওতায় তোলা প্রতি ৫ হাজার টাকা শুল্ক দিয়ে একজন যাত্রী বছরে একবার সর্বোচ্চ ১০ তোলা ওজনের একটি সোনার বার আনতে পারবেন।

এখন থেকে বিদেশ থেকে আগত সব যাত্রীই অনলাইনের মাধ্যমে ব্যাগেজ ঘোষণা ফরম পূরণ করতে পারবেন। তবে সুবিধার অপব্যবহার রোধে কাস্টমস হল বা এলাকা ত্যাগ করার আগে ব্যাগেজ ঘোষণা প্রদান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিউইয়র্কে মামদানিই ডেমোক্র্যাটদের মেয়র প্রার্থী
  • শুল্ক ছাড়া বিদেশ থেকে ফেরার সময় বছরে আনা যাবে একটি ফোন
  • হেটমায়ারকে থামাবে কে, আজও শেষ ওভারে ছক্কা মেরে দলকে জেতালেন
  • জোহরান মামদানি: নিউইয়র্কের মেয়র হিসেবে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন কতটা সম্ভব
  • হাজারো বন্দীর মধ্যে শুধু পাঁচজনের মাথায় কেন ‘লাল টুপি’
  • হাতিরঝিলে শিশু ধর্ষণচেষ্টায় আসামির ১০ বছর কারাদণ্ড
  • ডেমোক্রেটিক দলের শীর্ষ পর্যায়ে অস্বস্তিকে পরোয়া করছেন না নিউইয়র্কের মেয়র প্রার্থী জোহরান মামদানি
  • এক সেঞ্চুরিতে দুই বিশ্ব রেকর্ড ‘বুড়ো’ ডু প্লেসির
  • জোহরানকে নিয়ে এখন থেকেই কেন এতটা অসহিষ্ণু ডোনাল্ড ট্রাম্প