তৃতীয় দফা ভোটেও জয়, জোহরান এখন নিউইয়র্ক সিটির আনুষ্ঠানিক মেয়রপ্রার্থী
Published: 2nd, July 2025 GMT
ডেমোক্রেটিক প্রাইমারিতে মেয়র পদপ্রার্থী জোহরান মামদানির বিজয় গতকাল মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেছে নিউইয়র্ক সিটির নির্বাচন বোর্ড। এর ফলে আসছে নভেম্বরের মেয়র নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে তাঁর মনোনয়ন চূড়ান্ত হলো।
গতকাল প্রকাশিত র্যাঙ্কড-চয়েস ভোটের (পছন্দের ক্রমানুযায়ী পাঁচজন প্রার্থীকে ভোট দেওয়া) ফলাফলে দেখা গেছে, জোহরান তৃতীয় ধাপে ৫৬ শতাংশ ভোট পেয়ে জয় নিশ্চিত করেছেন। অথচ তুলনামূলকভাবে অপরিচিত নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলির সদস্য হিসেবে ভোটের প্রচার শুরু করেছিলেন তিনি। তৃতীয় ধাপে জয় পেতে একজন প্রার্থীকে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ ভোট পেতে হয়। নিউইয়র্কে ২০২১ সাল থেকে শুরু হয় র্যাঙ্কড চয়েস ভিত্তিতে ভোটগ্রহণ।
ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থী হিসেবে জোহরান নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামসের মুখোমুখি হবেন।
২০২১ সালে প্রথমবারের মতো মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী হিসেবে জয় পান অ্যাডামস। তবে এবার তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়বেন। দুর্নীতির অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হলেও পরে বিচার বিভাগ খারিজ করে দেন। এরপরই দল থেকে সরে দাঁড়িয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা একটি নতুন ভিডিওতে জোহরান তাঁর প্রাইমারিতে পাওয়া জয়কে ২০২১ সালে অ্যাডামসের নির্বাচনী প্রচারের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
মামদানি বলেন, ‘আমরা সব সময় ভেবেছি, আমাদের বিজয় আসবে র্যাঙ্কড-চয়েস ভোটের একাধিক ধাপের পর। প্রথম রাউন্ডেই যখন আমরা এত ভোট পেলাম, যা এরিক অ্যাডামস গত নির্বাচনে সাত রাউন্ড মিলিয়েও পাননি—এটা সত্যিই বিস্ময়কর ছিল।’
ভারতীয় বংশোদ্ভূত ৩৩ বছর বয়সী মামদানি একজন মুসলিম, জন্ম উগান্ডায়। তিনি নিজেকে গণতন্ত্রপন্থী সমাজতান্ত্রিক হিসেবে পরিচয় দেন। প্রাইমারিতে মধ্যপন্থী অভিজ্ঞ রাজনীতিক অ্যান্ড্রু কুমোকে হারিয়েছেন তিনি।
জোহরান মামদানির জয় ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে অস্বস্তির সৃষ্টি করেছে। তাঁদের উদ্বেগের কারণ, নিজের রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে তিনি রিপাবলিকানদের আক্রমণের সহজ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে পারেন।জোহরানের জয় ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে অস্বস্তির সৃষ্টি করেছে। তাঁদের উদ্বেগের কারণ, নিজের রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে মামদানি রিপাবলিকানদের আক্রমণের সহজ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে পারেন।
নতুন ভিডিওতে জোহরান বলেন, তাঁর লক্ষ্য মানুষের সমর্থন রিপাবলিকান দল থেকে আবার ডেমোক্রেটিক দলের দিকে ফিরিয়ে আনা।
উল্লেখ্য, জোহরান নিউইয়র্ক সিটির এমন কয়েকটি এলাকায় জয়ী হয়েছেন যেখানকার বাসিন্দারা গত বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছিলেন।
নির্বাচন বোর্ড থেকে জোহরানের জয় নিশ্চিত করার পর ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, যদি মামদানি চূড়ান্ত নির্বাচনে জেতেন ও মেয়র হিসেবে নিউইয়র্ক সিটিতে অভিবাসীদের গ্রেপ্তারে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন, তখন তিনি কীভাবে তা সামলাবেন।
জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘তাহলে তো তাঁকে আমাদের গ্রেপ্তার করতেই হবে। দেখুন, আমাদের দেশে কমিউনিস্টের কোনো দরকার নেই। যদি কেউ থাকে, তবে আমি দেশের পক্ষ থেকে খুব সতর্কতার সঙ্গে তাঁর ওপর নজর রাখব।’
জোহরান এর আগে বলেছিলেন, অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযানগুলো লোকজনকে ভীত করে তুলছে এবং যেসব এজেন্ট এসব অভিযান পরিচালনা করছেন, তাঁরা আইন মেনে চলার কোনো আগ্রহই দেখান না।
গত সপ্তাহে প্রাইমারির প্রাথমিক ফলাফল ঘোষণার পর, সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী জোহরানকে ফোন করে প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন। চূড়ান্ত গণনায় কুমো ৪৪ শতাংশ ভোট পেয়েছেন।
দলীয় প্রাইমারিতে হেরে গেলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন কুমো। তবে এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে এটি নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
অ্যাডামসের পাশাপাশি জোহরান রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়া ও স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাটর্নি জিম ওয়াল্ডেনের মুখোমুখি হবেন।
আরও পড়ুনডেমোক্রেটিক পার্টির শীর্ষ পর্যায়ে অস্বস্তিকে পরোয়া করছেন না নিউইয়র্কের মেয়র প্রার্থী জোহরান মামদানি৩০ জুন ২০২৫আরও পড়ুনজোহরান মামদানির নিউইয়র্ক জয় যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনপন্থী রাজনীতিকে চাঙা করছে২৬ জুন ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স বতন ত র প র র থ ন উইয়র ক স ট র প বল ক ন র জন ত ক আম দ র র উন ড
এছাড়াও পড়ুন:
খাগড়াছড়ির ঘটনায় জাতিসংঘকে যুক্ত করে বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি
খাগড়াছড়িতে সহিংসতার ঘটনার তদন্তে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের একজন সদস্যের সমন্বয়ে একজন বিচারপতির নেতৃত্বে অনতিবিলম্বে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। একই সঙ্গে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর স্বার্থ ও অস্তিত্ব রক্ষায় পার্বত্য শান্তিচুক্তির বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছে তারা।
আজ বুধবার ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথের পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ বলেছে, আদিবাসী কিশোরীকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণের জন্য দায়ী দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তার না করে বরং খাগড়াছড়ির নিরীহ ও নিরস্ত্র জুম্ম জনগোষ্ঠীর ওপর সশস্ত্র হামলা করা হয়েছে। এতে ৩ জন নিহত, অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া বাড়িঘর ও দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এমন দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের উসকানিমূলক বক্তব্য খাগড়াছড়িসহ গোটা পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
বিবৃতিতে ঘটনায় দায়ীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান, নিহত ব্যক্তিদের প্রত্যেক পরিবারকে অন্যূন এক কোটি টাকা করে, ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক পরিবারকে অন্যূন পঁচিশ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ প্রদান ও সরকারি খরচে আহত ব্যক্তিদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবিও জানিয়েছে ঐক্য পরিষদ।