‘দল ক্ষমতায় নেই। উপজেলায় এখন কী কাজ’- এ কথা বলেই রাজশাহীর বাগমারায় রাজনীতিতে নিষিদ্ধ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও ভবানীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল মালেকের ছেলে কামরুল হাসানকে মারধর করা হয়েছে। পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর বিএনপির সভাপতি আবদুর রাজ্জাক এবং তার ছেলে হারুন-অর-রশিদসহ কিছু লোক তাকে মারধর করেন বলে অভিযোগ।

মারধরের শিকার কামরুল হাসান ঠিকাদারি করেন। বকেয়া একটি বিল নিতে বুধবার (২ জুলাই) দুপুরে তিনি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ে যান। তখনই তিনি মারধরের শিকার হন। তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটিও ভাঙচুর করা হয়েছে। পরে এক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান তাকে নিজের মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। ওই চেয়ারম্যান কামরুলকে তার বাড়ি পৌঁছে দেন।

কামরুল হাসানের বাবা সাবেক পৌর মেয়র আবদুল মালেক বলেন, “একটি বিল নেওয়ার জন্য আমার ছেলে এলজিইডি অফিসে গিয়েছিল। সেখানে তাকে সাবেক মেয়র আবদুর রাজ্জাকের ছেলে হারুনসহ কয়েকজন ধরে মারধর করে। তাদের কথা, দল ক্ষমতায় নেই এখন আমার ছেলের সেখানে কী কাজ। এখন সব কাজ তারা করবে। মারের চোটে আমার ছেলে ইঞ্জিনিয়ারের রুমে গিয়ে আশ্রয় নেয়। পরে রাজ্জাক নিজেই এসে আমার ছেলেকে বের করে আরেকদফা মারধর করেন।”

আরো পড়ুন:

ধর্ষণচেষ্টায় অভিযুক্তকে গণপিটুনি, হাসপাতালে মৃত্যু

অবৈধ বালু ব্যবসায় বাধা, এনসিপি নেতা ও তার স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ

তিনি বলেন, “সঙ্গে নিয়ে যাওয়া মোটরসাইকেলটি ভাঙচুর করা হয়েছে। ঘটনার সময় সেখান দিয়ে একজন ইউপি চেয়ারম্যান যাচ্ছিলেন। তিনি আমার ছেলেকে দ্রুত তার মোটরসাইকেলে তুলে বাড়িতে নামিয়ে গেছেন। তা না হলে ছেলেকে তারা মেরেই ফেলত। এখন আমাদের কথা শোনার কেউ নাই। থানাতেও কোনো অভিযোগ আমরা করব না।”

জানতে চাইলে সাবেক মেয়র ও বিএনপি নেতা আবদুর রাজ্জাক বলেন, “আমার ছেলেসহ কিছু লোক সেখানে ছিল। কথা কাটাকাটি হচ্ছিল। আমি ছিলাম এসিল্যান্ডের রুমে। এসিল্যান্ড আমাকে বললেন যে, আমি যেন সবাইকে শান্ত করে পাঠিয়ে দেই। আমি সেটাই করেছি। মারধরের ঘটনা ঘটেনি। নিজের মোটরসাইকেল ফেলে যাওয়ার সময় সেটি পড়ে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”

বাগমারা থানার ওসি তৌহিদুল ইসলাম বলেন, “মারধরের ঘটনা ঘটেছে, তবে সিরিয়াস কিছু না। পুলিশ যাওয়ার আগেই সবাই চলে গেছে। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেননি।”

ঢাকা/কেয়া/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম রধর অভ য গ আম র ছ ল ম রধর র

এছাড়াও পড়ুন:

পলাতক আ.লীগ নেতার মাকে কুপিয়ে স্বর্ণালংকার-টাকা লুট

নোয়াখালীর কবিরহাটে বাড়িতে ঢুকে হোসনে আরা বেগম (৭০) নামের এক নারীকে কুপিয়ে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুটে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের জগদানন্দ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওই নারীর ছেলে মোহাম্মদ কামাল খান উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান।

মোহাম্মদ কামাল খান স্থানীয়ভাবে কামাল কোম্পানি হিসেবে পরিচিত। আওয়ামী লীগের এই নেতা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর থেকে আত্মগোপনে। তাঁর ভাই মাইন উদ্দিন বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে তাঁর মা বসতঘরে একাই ছিলেন। তিনি স্ত্রীকে ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে দুর্বৃত্তরা বাড়িতে ঢুকে তাঁর মায়ের মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে তিনটি কোপ দেয়। পরে দুটি কান ছিঁড়ে শরীরে থাকা প্রায় চার ভরি স্বর্ণালংকার ও ঘরে বিছানার নিচে রাখা সাড়ে তিন লাখ টাকা লুটে নেয়।

হোসনে আরাকে কিছুক্ষণ পর রক্তাক্ত অবস্থায় ঘরের সামনের কক্ষে অচেতন হয়ে পড়ে থাকতে দেখেন তাঁর নাতি সালমান। তাঁর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসেন। পরে ওই নারীকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই তাঁকে ঢাকায় নেওয়া হয়। মাইন উদ্দিনের অভিযোগ, এটি নিছক চুরির ঘটনা নয়, এটি দুর্ধর্ষ ডাকাতি।

কবিরহাট থানার ওসি শাহীন মিয়া বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ওই নারী শরীরে সব সময় স্বর্ণালংকার পরতেন। তাদের ধারণা, চুরি করতে আসা দুর্বৃত্তদের চিনে ফেলায় তাঁকে কোপানো হয়। পুলিশ এ ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে চেষ্টা চালাচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ