হরমুজ প্রণালি বন্ধের প্রস্তুতি নিয়েছিল ইরান
Published: 2nd, July 2025 GMT
গত মাসে ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতের সময় বিশ্ব বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ রুট হরমুজ প্রণালি অবরোধ ও সেখানে মাইন বসানোর প্রস্তুতি নিয়েছিল ইরান। গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে এমনটাই দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আর ইরানের হরমুজ প্রণালি অবরোধের দিকে এগোনোর এই বিষয়টি ওয়াশিংটনের উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছিল।
বুধবার এক প্রতিবেদনে রয়টার্স বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, গত মাসে ইরানি সেনাবাহিনী পারস্য উপসাগরে তাদের নৌযানে মাইন তোলার প্রস্তুতি নিয়েছিল, যা ওয়াশিংটনের উদ্বেগ বাড়িয়ে দেয় যে, ইসরায়েল ইরানের বিভিন্ন স্থানে হামলা চালানোর পর তেহরান হরমুজ প্রণালি অবরোধের দিকে এগোচ্ছে। এই তথ্যটি আগে প্রকাশ হয়নি।
দুই মার্কিন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে জানিয়েছেন, গত ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর এই প্রস্তুতির বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের নজরে আসে।
মূলত বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রপথ হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দিলে বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যাপকভাবে ব্যাহত হতো এবং জ্বালানির দাম হু-হু করে বাড়ত। কারণ, বিশ্বে পরিবেশিত মোট তেল ও গ্যাসের এক-পঞ্চমাংশ এই পথ দিয়েই যায়।
তবে এখন পর্যন্ত ইরান এই মাইনগুলো প্রণালিতে বসায়নি। ফলে মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, এটি হয়তো বাস্তব অবরোধের পরিকল্পনা ছিল না বরং যুক্তরাষ্ট্রকে চাপে রাখার কৌশলও হতে পারে। তবে একই সঙ্গে তারা এটাও বলছেন, এটি ভবিষ্যতের জন্য ইরানের প্রস্তুতিও হতে পারে।
রয়টার্স বলছে, গত ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি প্রধান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানোর পর ইরানের পার্লামেন্ট হরমুজ প্রণালি বন্ধের পক্ষে একটি প্রস্তাব পাস করে। যদিও এটি বাধ্যতামূলক কিছু ছিল না এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে কেবল ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের হাতে।
কীভাবে যুক্তরাষ্ট্র এই মাইন লোডিংয়ের তথ্য পেয়েছে, তা বিস্তারিত জানানো হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, স্যাটেলাইট ছবি, মানব গোয়েন্দা বা দুটির সমন্বয়ে এই তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
আলজাজিরা জানায়, ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান একটি নতুন আইন অনুমোদন করেছেন। এর মাধ্যমে দেশটি জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করতে যাচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই সিদ্ধান্ত তেহরানের ক্ষতিগ্রস্ত পারমাণবিক কর্মসূচি পুনরায় চালু করার প্রচেষ্টাকে আরও গোপনীয় করে তুলবে।
গত সপ্তাহে ইরানের সংসদ এই আইনটি পাস করে, যার পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার প্রেসিডেন্ট এতে স্বাক্ষর করেন। ইরান অভিযোগ করেছে, আইএইএ ইসরায়েলকে সহযোগিতা করেছে এবং এর মাধ্যমে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর হামলার পথ সুগম হয়েছে। যদিও আন্তর্জাতিক ওই সংস্থাটি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান ইতোমধ্যে ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থা, সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আইনটি বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র য ক তর ষ ট র র প রস ত ত ইসর য় ল অবর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
‘এটা তো চাপের খেলা’—বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে ভারত কোচ
বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ ঘিরে উত্তাপ, উত্তেজনা নতুন নয়। তবে এবারের লড়াইটা ভারতের জন্য বাড়তি চাপেরও। প্রতিপক্ষের মাঠ, গ্যালারিভর্তি দর্শক আর হামজা-শমিতে উজ্জীবিত বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স—সব মিলিয়ে হয়তো কঠিন পরীক্ষাতেই পড়তে হবে সফরকারীদের। আজ ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে ভারতের কোচের কণ্ঠেও ফুটে উঠল তেমনটাই।
আগামীকাল জাতীয় স্টেডিয়ামে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-ভারত। তার আগে আজ একটি হোটেলে ভারতীয় দলের কোচ খালিদ জামিল বলেন, ‘এটা তো চাপের খেলা’।
এশিয়ান কাপ বাছাইপর্ব থেকে বাংলাদেশ ও ভারত দুই দলেরই বিদায় আগেই নিশ্চিত হয়েছে। তবু বাংলাদেশের দর্শকদের মধ্যে ভারত ম্যাচ নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ। যার বড় প্রমাণ অনলাইনে টিকিট ছাড়ার ৬ মিনিটের মধ্যে সব বিক্রি হয়ে যাওয়া।
এর পাশাপাশি প্রতিপক্ষের মাঠে খেলাটা যে সব সময়ই কঠিন, সেই বাস্তবতা জানেন জামিলও। তাঁর দলের ওপর চাপ আছে কি না প্রশ্নে ভারত কোচ বলেন, ‘হ্যাঁ, চাপ আছে। আমাদের তা মানতে হবে। সবাই জানে এটি একটি চাপের ম্যাচ। তবে সে জন্য আমাদের একটি ইতিবাচক ফলের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।’
গত ২৫ মার্চ শিলংয়ে দুই দলের প্রথম লেগ গোলশূন্য ড্র হয়েছিল। সেই ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক হয়েছিল হামজা চৌধুরীর। ইংলিশ ক্লাব লেস্টার সিটিতে খেলা ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার বাংলাদেশের হয়ে এখন পর্যন্ত ৬ ম্যাচে করেছেন ৪ গোল, যার মধ্যে দুটি করেছেন বৃহস্পতিবার নেপালের বিপক্ষে।
ভারত কোচ অবশ্য একক কোনো খেলোয়াড়কে নিয়ে ভাবতে নারাজ, ‘আমরা শুধু একজন খেলোয়াড়কে বিবেচনায় নিচ্ছি না। বাংলাদেশ দলে অনেক ভালো খেলোয়াড় আছে। এটা খুব সিরিয়াস গেম।’
১৯৭৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৩২ বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-ভারত। এর মধ্যে ভারত জিতেছে ১৬টিতে, বাংলাদেশ ২টিতে। ড্র বাকি ১৪টি (২০০৩ সাফে বাংলাদেশের গোল্ডেন গোলে জয়ের ম্যাচসহ)।