ভোলায় স্বামীকে নির্যাতনের পর গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় দুই আসামি গ্রেপ্তার
Published: 3rd, July 2025 GMT
ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় স্বামীকে রাতভর নির্যাতনের পর স্ত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলার প্রধান দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোহাব্বত খান।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন যুবদল কর্মী আলাউদ্দিন (৪০) ও তজুমদ্দিন উপজেলা শ্রমিক দলের সাবেক (বহিষ্কৃত) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন (৩০)। তাঁরা তজুমদ্দিন উপজেলার বাসিন্দা।
আরও পড়ুনতজুমদ্দিনে গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণ, কী ঘটেছিল সেদিন১৭ ঘণ্টা আগেতজুমদ্দিন থানার ওসি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে নোয়াখালীর হাতিয়া থেকে আলাউদ্দিন এবং রাত সাড়ে তিনটার দিকে ভোলার বোরহানউদ্দিন থেকে ফরিদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে আলাউদ্দিন মামলার ১ নম্বর এবং ফরিদ ২ নম্বর আসামি।
এর আগে মামলার ৩ নম্বর আসামি ঝর্ণা বেগম এবং ৫ নম্বর আসামি মানিককে গ্রেপ্তার করা হয়। গত সোমবার সাতজনের নাম উল্লেখ করে এ ঘটনায় তজুমদ্দিন থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী।
আরও পড়ুনতজুমদ্দিনে স্বামীকে নির্যাতনের পর গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে মামলা৩০ জুন ২০২৫মামলার আসামিরা হলেন আলাউদ্দিন, ফরিদ উদ্দিন, ঝর্ণা বেগম, আলমগীর হোসেন, মানিক, মামুন ও রাসেল। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় ৪–৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহার, পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার রাতে এক ব্যক্তিকে (৩০) তজুমদ্দিন উপজেলার একটি গ্রামে ডেকে নেন তাঁর তৃতীয় স্ত্রী (৪০)। পরে আসামিরা ওই ব্যক্তিকে আটকে রেখে চার লাখ দাবি করেন। একপর্যায়ে ওই ব্যক্তিকে রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়। পরদিন রোববার সকালে তাঁর প্রথম স্ত্রী (৩০) আসামিদের কাছ থেকে স্বামীকে ছাড়িয়ে আনতে গিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন।
আরও পড়ুনতজুমদ্দিনে নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে বিএনপির দুই পক্ষের পৃথক মানববন্ধন, ইটপাটকেল নিক্ষেপ০১ জুলাই ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
খাগড়াছড়িতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ‘মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগের’ অভিযোগের তদন্তসহ ৯ দফা দাবি
খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনার দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করাসহ ৯ দফা দাবি জানিয়েছেন ৪১ বিশিষ্ট নাগরিক।
আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তাঁরা এ দাবি জানান।
ওই বিবৃতিতে মারমা এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ-সহিংসতা ও গুলিবর্ষণে ৩ জন নিহত ও ৩০ জন আদিবাসী আহত হয়েছেন বলে জানান বিশিষ্ট নাগরিকেরা। এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগের অভিযোগের বিষয়ে স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনেরও দাবি জানান তাঁরা।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, কোনো বাহিনী আইনের শাসন ও মানবাধিকারের ঊর্ধ্বে নয়। মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগের ঘটনায় কেউ জড়িত থাকলে তাঁকে অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। দায়মুক্তির সংস্কৃতি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
নাগরিক সমাজের ৯ দফা দাবিগুলো হলো:১. খাগড়াছড়িতে মারমা কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগের দ্রুত, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ভুক্তভোগী কিশোরী এবং তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সহায়তা দিতে হবে।
২. সংঘর্ষে প্রাণহানির ঘটনায় সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগ এবং মদদের অভিযোগের বিষয়ে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করতে হবে।
৩. সহিংসতায় জড়িত ব্যক্তিরা যে বাহিনীর সদস্যই হোক না কেন, তাঁদের সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
৪. নিহত ও আহতদের পরিবারকে সুরক্ষা, যথার্থ ক্ষতিপূরণ, চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. পাহাড়ে দীর্ঘদিনের সামরিকীকরণ নীতি পর্যালোচনা করে শান্তিপূর্ণ, রাজনৈতিক সমাধানের পথে এগোতে হবে।
৬. পাহাড়ে বসবাসরত সব নাগরিকের জীবনের অধিকার, নিরাপত্তা ও সম্প্রীতিনির্ভর সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।
৭. পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ওপর যেন কাঠামোগত নিপীড়ন চালানো না হয় এবং এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারা যেন আরও হয়রানি, গ্রেপ্তার ও আইনি নিপীড়নের শিকার না হয়—রাষ্ট্রকে তা নিশ্চিত করতে হবে।
৮. পাহাড়ে অবাধ তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ভুক্তভোগীদের কণ্ঠস্বর দমন না হয় এবং জনগণ সত্য জানতে পারে।
৯. নারীদের ওপর সংঘটিত নির্যাতন ও নিপীড়নের ঘটনাগুলোর প্রতিকার ও জবাবদিহি নিশ্চিতে স্বাধীন তদন্ত করতে হবে।
আরও পড়ুনখাগড়াছড়িতে সহিংসতায় প্রাণহানির কারণ ও দায়ীদের চিহ্নিত করার দাবি আসকের২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামিনা লুৎফা, আসিফ শাহান, মোশাহিদা সুলতানা, রুশাদ ফরিদী, তাসনীম মাহবুব, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সারা হোসেন, মানজুর আল মতিন, কাজী জাহেদ ইকবাল, সাংবাদিক সায়দিয়া গুলরুখ, সংগীতশিল্পী বীথি ঘোষ, লেখক ফিরোজ আহমেদসহ ৪১ বিশিষ্ট নাগরিক এ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন।
আরও পড়ুনখাগড়াছড়িতে সহিংসতার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি এইচআরএফবির২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫