‘জীবন গাড়ির নাইরে ব্যাকগিয়ার’—মাত্র তিন দিন আগে নিজের ফেসবুক আইডিতে এ কথাগুলো লিখেছিলেন লোকসঙ্গীত শিল্পী তরিকুল ইসলাম ডালিম (৩২)। তার পরদিন ফেসবুকে আপলোড করেন বৈদ্যুতিক ট্রান্সফর্মারের একটি ছবি। কে জানত, এমন এক ট্রান্সফর্মার মেরামত করতে গিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমাবেন তিনি!

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দুর্গাপুর উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের একটি বিলে গভীর নলকূপের জন্য বৈদ্যুতিক ট্রান্সফর্মার মেরামতের সময় তরিকুল ইসলাম ডালিম (৩২) বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জানিয়েছেন, হাসপাতালে আনার আগেই তরিকুল ইসলাম ডালিমের মৃত্যু হয়েছে।

আরো পড়ুন:

গফরগাঁওয়ে বজ্রপাতে ব্যবসায়ীর মৃত্যু

কুয়াকাটা সৈকতে গোসলে নেমে পর্যটকের মৃত্যু

দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দুরুল হোদা জানিয়েছেন, তরিকুল ইসলাম ডালিমের পারিবার কোনো অভিযোগ না করায় মরদেহ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

তরিকুল ইসলাম ডালিম রাজশাহীর দুর্গাপুর পৌর সদরের হরিপুর গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে। সঙ্গীত জগতে ‘গামছা বাউল ডালিম’ নামে পরিচিত ছিলেন তিনি। গানের প্রতি ভালোবাসার পাশাপাশি জীবন-জীবিকার তাগিদে ডালিম বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) গভীর নলকূপ মেরামতের কাজ করতেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বৈদ্যুতিক লাইনের ত্রুটি সারাতে গিয়ে হঠাৎ একটি সার্কিটে শক লাগে। সঙ্গে সঙ্গেই পাশের ধানক্ষেতে ছিটকে পড়েন ডালিম। এরপর আর জ্ঞান ফেরেনি।

ডালিমের অকাল মৃত্যুতে দুর্গাপুরের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। স্থানীয় শিল্পীরা জানিয়েছেন, লোকসঙ্গীতের প্রতি তার গভীর অনুরাগ ছিল ডালিমের। গানের চর্চা করে অনেক দূর যাওয়ার স্বপ্ন দেখতেন তিনি।

ডালিম আলোচনায় আসেন আরটিভির জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ‘বাংলার গায়েন সিজন-২’-তে ইয়েস কার্ড পাওয়ার পর। প্রথম অডিশনেই বিচারকদের নজর কাড়েন তিনি। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারেননি। তবে তার গানে ‘মাটির টান’ আর গামছা জড়ানো বাউল চেহারা দর্শকের মনে গেঁথে থাকে।

ঢাকা/কেয়া/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

‘এটা তো চাপের খেলা’—বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে ভারত কোচ

বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ ঘিরে উত্তাপ, উত্তেজনা নতুন নয়। তবে এবারের লড়াইটা ভারতের জন্য বাড়তি চাপেরও। প্রতিপক্ষের মাঠ, গ্যালারিভর্তি দর্শক আর হামজা-শমিতে উজ্জীবিত বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স—সব মিলিয়ে হয়তো কঠিন পরীক্ষাতেই পড়তে হবে সফরকারীদের। আজ ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে ভারতের কোচের কণ্ঠেও ফুটে উঠল তেমনটাই।

আগামীকাল জাতীয় স্টেডিয়ামে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-ভারত। তার আগে আজ একটি হোটেলে ভারতীয় দলের কোচ খালিদ জামিল বলেন, ‘এটা তো চাপের খেলা’।

এশিয়ান কাপ বাছাইপর্ব থেকে বাংলাদেশ ও ভারত দুই দলেরই বিদায় আগেই নিশ্চিত হয়েছে। তবু বাংলাদেশের দর্শকদের মধ্যে ভারত ম্যাচ নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ। যার বড় প্রমাণ অনলাইনে টিকিট ছাড়ার ৬ মিনিটের মধ্যে সব বিক্রি হয়ে যাওয়া।

এর পাশাপাশি প্রতিপক্ষের মাঠে খেলাটা যে সব সময়ই কঠিন, সেই বাস্তবতা জানেন জামিলও। তাঁর দলের ওপর চাপ আছে কি না প্রশ্নে ভারত কোচ বলেন, ‘হ্যাঁ, চাপ আছে। আমাদের তা মানতে হবে। সবাই জানে এটি একটি চাপের ম্যাচ। তবে সে জন্য আমাদের একটি ইতিবাচক ফলের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।’

গত ২৫ মার্চ শিলংয়ে দুই দলের প্রথম লেগ গোলশূন্য ড্র হয়েছিল। সেই ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক হয়েছিল হামজা চৌধুরীর। ইংলিশ ক্লাব লেস্টার সিটিতে খেলা ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার বাংলাদেশের হয়ে এখন পর্যন্ত ৬ ম্যাচে করেছেন ৪ গোল, যার মধ্যে দুটি করেছেন বৃহস্পতিবার নেপালের বিপক্ষে।

ভারত কোচ অবশ্য একক কোনো খেলোয়াড়কে নিয়ে ভাবতে নারাজ, ‘আমরা শুধু একজন খেলোয়াড়কে বিবেচনায় নিচ্ছি না। বাংলাদেশ দলে অনেক ভালো খেলোয়াড় আছে। এটা খুব সিরিয়াস গেম।’

১৯৭৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৩২ বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-ভারত। এর মধ্যে ভারত জিতেছে ১৬টিতে, বাংলাদেশ ২টিতে। ড্র বাকি ১৪টি (২০০৩ সাফে বাংলাদেশের গোল্ডেন গোলে জয়ের ম্যাচসহ)।

সম্পর্কিত নিবন্ধ