যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্র ও বিমান কেনার পরিকল্পনা স্থগিত করেছে ভারত। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত তিন ভারতীয় কর্মকর্তার বরাত দিয়ে শুক্রবার রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

বিষয়টি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ফলে ভারতের মধ্যে অসন্তোষের প্রথম স্পষ্ট লক্ষণ। ট্রাম্পের শুল্ক ৫০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আরোপের ফলে ওয়াশিংটন ও দিল্লির মধ্যকার সম্পর্ক কয়েক দশকের মধ্যে সম্পর্ক সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে।

নয়াদিল্লির দুই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভারত আগামী সপ্তাহে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংকে কিছু ক্রয়ের ঘোষণার জন্য ওয়াশিংটনে পাঠানোর পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু সেই সফর বাতিল করা হয়েছে।

ট্রাম্প ৬ আগস্ট দিল্লির রাশিয়ান তেল কেনার শাস্তি হিসেবে ভারতীয় পণ্যের উপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। এর ফলে ভারতীয় রপ্তানির উপর মোট শুল্ক ৫০ শতাংশে উন্নীত হয় - যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো বাণিজ্য অংশীদারের মধ্যে সর্বোচ্চ।

রয়টার্স জানিয়েছে, জেনারেল ডাইনামিক্স ল্যান্ড সিস্টেমসের তৈরি স্ট্রাইকার যুদ্ধ যান এবং রেথিয়ন ও লকহিড মার্টিনের তৈরি জ্যাভলিন অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক ক্ষেপণাস্ত্র কেনার বিষয়ে ভারতের আলোচনা শুল্কের কারণে স্থগিত করা হয়েছে। ট্রাম্প এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ফেব্রুয়ারিতে এই জিনিসপত্র ক্রয় ও যৌথ উৎপাদনের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিলেন।

দুই ভারতীয় কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং তার সফরের সময় ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য ছয়টি বোয়িং পি৮আই রিকনায়েন্স বিমান এবং সাপোর্ট সিস্টেম কেনার ঘোষণাও করার পরিকল্পনা করছিলেন। 

বোয়িং, লকহিড মার্টিন এবং জেনারেল ডাইনামিক্স ভারত ও মার্কিন সরকারের কাছে প্রশ্ন তুলেছে। 

ভারত জানিয়েছে, তারা ওয়াশিংটনের সাথে সক্রিয়ভাবে আলোচনায় নিয়োজিত রয়েছে। 

এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শুল্ক এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দিকনির্দেশনা সম্পর্কে ভারত স্পষ্টতা পেলে প্রতিরক্ষা ক্রয় এগিয়ে যেতে পারে। তবে বিষয়টি ‘যত তাড়াতাড়ি আশা করা হয়েছিল তত তাড়াতাড়ি নয়।’

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর মকর ত

এছাড়াও পড়ুন:

ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থা দেশে টিকতে পারবে না: মৎস্য উপদেষ্টা

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, “জুলাই থাকবে-মীর মুগ্ধ মঞ্চ সেই বার্তাই দিচ্ছে। এটি মনে করিয়ে দেয়, স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থা বাংলাদেশে টিকতে পারবে না।

শুক্রবার (৮ আগস্ট) ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) বাস্তবায়িত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বীর শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণে উত্তরা তিন নম্বর সেক্টরের রবীন্দ্র সরোবরে নির্মিত ‘মুগ্ধ মঞ্চ’ এর উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, “গত ১৫-১৭ বছর মানুষ কথা বলতে পারেনি। তবে এর অর্থ এই নয় যে ভবিষ্যতেও জনগণ কথা বলতে পারবে না বা শাসকগোষ্ঠী প্রশ্নবিহীনভাবে ক্ষমতায় থাকবে। এই মঞ্চ সেই প্রতিবাদের প্রতীক।”

আরো পড়ুন:

সরকার শহীদদের পুনর্বাসন ও স্মৃতি সংরক্ষণে কাজ করছে: আদিলুর রহমান

অন্তর্বর্তী সরকার: এক বছরে সফলতা ও ব্যর্থতা

শহীদদের বাবা-মায়ের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “আপনারা যে দাবিগুলো তুলে ধরেছেন, আমরা তা সমর্থন করি। আমরা এমন বাংলাদেশ চাই, যেখানে কোনো মায়ের বুক খালি হবে না, কোনো বাবাকে আর সন্তানের লাশ কাঁধে বহন করতে হবে না।”

তিনি বলেন, “আমরা আন্দোলন করব, প্রতিবাদ করব। কিন্তু আমাদের বুকে যারা গুলি চালায়—সেই ধরনের পুলিশ বাহিনী আমরা চাই না।”

২০১৮ সালের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “তখন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বলেছিল—রাষ্ট্রের মেরামত দরকার। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে তা আরো একবার প্রমাণ করেছে। তাই বলছি—রাষ্ট্রের মেরামত চলবে এবং তা অব্যাহত রাখতে হবে।”

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান, নারী শহীদ নাঈমা সুলতানার মা, শহীদ জাবিরের বাবা, জুলাই আহত যোদ্ধা আব্দুল আজিজ।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ