গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামানের হত্যাকারীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি
Published: 8th, August 2025 GMT
গাজীপুরে সাংবাদিক মো. আসাদুজ্জামান তুহিনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন রাজধানীতে কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকেরা।
আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে সাংবাদিকেরা এ দাবি জানান। সাংবাদিক আসাদুজ্জামানকে প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদ এবং সাংবাদিকদের পেশাগত রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, জুলাই রেভল্যুশনারি জার্নালিস্ট অ্যালায়েন্স ও বিক্ষুব্ধ সাংবাদিক সমাজ–এর ব্যানারে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধনে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত, সাংবাদিক সংগঠনগুলোকে আসাদুজ্জামানকে হত্যার বিচারের দাবিতে সোচ্চার হওয়ার এবং অন্তর্বর্তী সরকারকে এই সাংবাদিকের পরিবারের দায়িত্ব নেওয়ার দাবি জানান সাংবাদিকেরা। তাঁরা বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় সাংবাদিকদের ওপর হামলার পাশাপাশি সাংবাদিক হত্যার ঘটনা বাড়ছে। কিন্তু অধিকাংশ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হচ্ছে না। এই দায়মুক্তির সংস্কৃতি বন্ধ না হলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়বে। তাঁরা আসাদুজ্জামান হত্যার দ্রুত বিচার নিশ্চিত করে অন্যদের জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপনের আহ্বান জানান।
মানববন্ধনে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানান জনকণ্ঠ পত্রিকার এডিটরিয়াল বোর্ডের সদস্য জয়নাল আবেদীন (শিশির)। এর সঙ্গে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে নিহত ছয় সাংবাদিক হত্যার বিচার, সাংবাদিকদের জন্য একটি সুরক্ষা আইন এবং নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নের দাবি জানান তিনি। অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যদি আপনারা দেশের জনগণের, সাংবাদিকের নিরাপত্তা না দিতে পারেন, সুরক্ষা না দিতে পারেন, তাহলে আপনাদের প্রয়োজন নেই।’
জনকণ্ঠের উপপ্রধান প্রতিবেদক ইসরাফিল ফরাজি বলেন, কিছু একটা ঘটলেই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা চিরুনি অভিযানের কথা বলেন। কিন্তু শুধু আওয়ামী লীগ নয়, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের খুঁজতে হবে। তিনি গাজীপুরে সাংবাদিক খুনের ঘটনায় আটক পাঁচজনের পরিচয় দ্রুত প্রকাশের দাবি জানান এবং সাংবাদিক সংগঠনগুলোকে এ বিষয়ে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।
মানববন্ধনে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আসাদুজ্জামান হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। সেটি করতে না পারলে বাসন থানার ওসি, গাজীপুরের পুলিশ সুপার এবং জেলা প্রশাসককে বরখাস্ত করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারকেও এ বিষয়ে আন্তরিকতা দেখাতে হবে।
নিউজ২৪–এর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মাজহারুল ইসলাম বলেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি যত বাড়ছে, রাষ্ট্রের দুর্বলতা যত বেশি প্রকাশ পাচ্ছে, রাষ্ট্রে তত বেশি বিশৃঙ্খলা হচ্ছে এবং একের পর এক লাশ পড়ছে। সাধারণ জনগণের পাশাপাশি সাংবাদিকেরাও জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে ঝুঁকিতে আছে। তিনি আসাদুজ্জামানসহ সব সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেন।
সভাপতির বক্তব্যে মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফখরুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিকদের অনেক সংগঠন থাকলেও তারা আসাদুজ্জামান হত্যার বিষয়ে কিছু বলছে না। অন্তর্বর্তী সরকার ও সাংবাদিক নেতাদের সাংবাদিক আসাদুজ্জামান হত্যার বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখে এর সুরাহা করতে হবে। আসাদুজ্জামান তুহিনের পরিবারের দায়দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নিতে হবে।
অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব দ ক আস দ জ জ ম ন হত য র ব ল ইসল ম সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় নৃশংসভাবে বিড়াল হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় মাছ খাওয়ায় একটি বিড়ালকে গলা কেটে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদে এবং পথপ্রাণী, পোষা প্রাণী ও বন্য প্রাণীর ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন হয়েছে।
আজ শনিবার দুপুরে বগুড়ার সাতমাথা মোড়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধনের আয়োজন করে সরকারি আজিজুল হক কলেজের শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘টিম ফর এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ—তীর’। এ সময় সংগঠনটির সদস্যরা প্ল্যাকার্ড, পোস্টার হাতে প্রাণী সুরক্ষার দাবি জানান। এ ছাড়া প্রাণী আইন লঙ্ঘন না করার বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে প্রচারপত্র বিলি করেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে আদমদীঘি উপজেলার দত্তবাড়িয়া গুচ্ছগ্রামে বিড়াল হত্যার অভিযোগ ওঠে বুলবুলি বেগম (২৬) নামের এক নারীর বিরুদ্ধে। পরদিন বুধবার তাঁর বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন বাংলাদেশ অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য এমরান হোসেন। পরে পুলিশ সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পায়। শুক্রবার বুলবুলি বেগমকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন তীর–এর সভাপতি আশা মনি, সহসভাপতি হৈমন্তী সরকার, সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান।
পুলিশ সূত্র জানায়, কয়েক দিন আগে বুলবুলির বাড়িতে একটি বিড়াল ঢোকে। একপর্যায়ে প্রাণীটি রান্না করা মাছ খেয়ে ফেলে। গত মঙ্গলবার রাতে বিড়ালটি দ্বিতীয় দফায় বুলবুলির ঘরে ঢোকে। এ সময় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বিড়ালটিকে ধরে বঁটি দিয়ে গলা কেটে ফেলেন। এভাবে হত্যার পর একটি ধানখেতে ফেলে দেন। বিষয়টি জানার পর প্রতিবেশী ইসাহাক আলীর স্ত্রী শামছুন্নাহার বুধবার সকালে বিড়ালটির ছিন্নভিন্ন দেহ উদ্ধার করে বাড়িতে নেন। মৃত বিড়ালটি বরফ দিয়ে সংরক্ষণের পর তিনি পুলিশে খবর দেন। বিষয়টি জানাজানির পর বাংলাদেশ অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়।
আদমদীঘি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিড়াল হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভিযুক্ত বুলবুলি বেগম উত্তেজিত হয়ে বঁটি হাতে স্থানীয় লোকজনকে লক্ষ্য করে তেড়ে আসেন এবং কুপিয়ে হত্যার হুমকি দেন। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯–এ ফোন পেয়ে পুলিশ ওই নারীকে আটক করে ১৫১ ধারায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে। বিড়াল হত্যার ঘটনায় থানায় জিডি হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে পাঠানো হবে। আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।