ঐকমত্য কমিশন বয়েজ ক্লাব: শাহীন আনাম
Published: 9th, August 2025 GMT
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেছেন, 'আমরা যদি সংস্কার কমিশনগুলো দেখি, সেখানে নারী প্রতিনিধির অবস্থা আমরা সবাই জানি। আর আমাদের ঐকমত্য কমিশনের কথা তো বাদ দিলাম, আর কী বলব সেটা বলার কিছু নেই। এটা একটা বয়েজ ক্লাব।'
আজ শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে 'জাতীয় সংসদে নারী আসন ও নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন' শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে প্রথম আলো। এতে সংসদে নারী আসন নিয়ে ধারণাপত্র তুলে ধরেন প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক নাজনীন আখতার।
আরও পড়ুননারীদের জন্য ৫% আসন, এই দয়াদাক্ষিণ্য কেন : ফারাহ কবির১ ঘণ্টা আগেসব জায়গায় নারীদের বাদ দেওয়ার এবং একটু পিছিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন শাহীন আনাম। তিনি বলেন, নারীর প্রতি বৈষম্যগুলো এই সরকার বিবেচনায় নেবে বলে আকাঙ্ক্ষা ছিল। কিন্তু সেটা মোটেও হয়নি।
শাহীন আনাম আরও বলেন, 'নারী সংস্কার কমিশন নিয়ে যেভাবে কথা বলা হলো, যেভাবে তাঁদের অপমান করা হলো প্রকাশ্যে এই সরকার একটা টুঁ শব্দ করে নাই। এটা আমাদের খুবই আঘাত করেছে। আসলে আমাদের সমাজে নারীর স্থান কোথায়।'
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, ‘যখনই সমান অধিকারের কথা বলি তখনই একটা হুংকার আসে। অনেক দিন ধরে সরাসরি নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে। এখন যে ৫ শতাংশ দেওয়ার কথা বলছে তা হাস্যকর।’ শুধু রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলে নারীদের সম্পর্কে কেন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সে প্রশ্নও তোলেন।
‘সংসদে নারী আসন ও নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন' শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা। আজ শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে 'জাতীয় সংসদে নারী আসন ও নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন' শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে প্রথম আলো.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই ঘোষণাপত্রে আবারও বিজয় বেহাত হওয়ার ইঙ্গিত স্পষ্ট: রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন
জুলাই ঘোষণাপত্রে আবারও বিজয়ের সুফল বেহাত করার ইঙ্গিত স্পষ্ট বলে সতর্ক করেছে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। দলটি মনে করছে, এই ঘোষণাপত্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারেনি এবং অভ্যুত্থানের সুফল নিশ্চিত করার কোনো সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে পারেনি।
আজ বুধবার রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন। ‘বর্তমান রাজনৈতিক সংকট নিরসন’ প্রসঙ্গে দলটির প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজন করা হয় বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন হাসনাত কাইয়ুম। তবে এই ঘোষণাপত্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারেনি বলে মনে করেন তিনি। হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ঘোষণাপত্র জাতিকে অনুপ্রাণিত না করে চব্বিশ নিয়ে জাতির মধ্যে পরিবর্তনের যতটুকু আশা ছিল, সেটাকে লক্ষ্যহীন করে দিয়েছে। এ ঘোষণাপত্রে আবারও বিজয়ের সুফল বেহাত করার ইঙ্গিত স্পষ্ট।
সরকার সংবিধান সংস্কার ও সংবিধান সংশোধনীর মধ্যে পার্থক্য করতে ব্যর্থ উল্লেখ করে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্রের ২৫ ও ২৭ অনুচ্ছেদে আগামী জাতীয় সংসদের ওপর সংবিধান সংস্কারের দায়–দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। এটা বিপজ্জনক এবং অসম্ভব একটা উদ্যোগ। সংবিধানের মৌলিক সংস্কার জাতীয় সংসদের এখতিয়ারবহির্ভূত। সরকার যদি এটা না জেনে থাকে, তবে তা সরকারের আরেকটা বড় ব্যর্থতা। আর জেনেবুঝে বলে থাকলে তা জাতির জন্য ভয়াবহ অশনিসংকেত।
সংবিধান সংস্কারের জন্য জনগণ পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের ওপর দায়িত্ব অর্পণের অভিপ্রায় প্রকাশ করেছে, যা একটি স্পষ্ট মিথ্যাচার বলে জানানো হয় রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের পক্ষ থেকে। হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ‘প্রকৃত সত্য হলো, মাত্র ৩-৪টি দল বা জোট বাদে বাকি সব দল ও জোট এর বিপক্ষে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিয়েছে। তারা সংবিধান সংস্কারের জন্য হয় সংবিধান সংস্কার সভা বা গণপরিষদ বা গণভোটের প্রস্তাব দিয়েছে। এ নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন তৃতীয় পর্যায়ে সংলাপের ঘোষণাও এরই মধ্যে দিয়েছে। কিন্তু সে সংলাপ না করেই সরকারের পক্ষ থেকে অল্প কিছু দলের প্রস্তাবকে জনগণের অভিপ্রায় হিসেবে ঘোষণা দেওয়া একটা মিথ্যাচার। আমরা এই মিথ্যাচারের প্রতিবাদ জানাই এবং অনতিবিলম্বে সংলাপের মাধ্যমে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবি জানাই।’
সরকার ঐকমত্য কমিশন কর্তৃক আয়োজিত সংলাপ, সম্ভাব্য জুলাই সনদ এবং সর্বোপরি গণ–অভ্যুত্থানকে ব্যর্থ করার পথে হাঁটছে বলে মন্তব্য করেন হাসনাত কাইয়ুম। তিনি বলেন, ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংবিধান সংস্কার বা জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পথপদ্ধতি নির্ধারণ না করলে তা দেশে অস্থিরতা তৈরি এবং সামগ্রিক অগ্রগতির পথে বড় বাধা তৈরি করতে পারে। এমন কিছু হলে সব দায়দায়িত্ব এই সরকারের ওপরই বর্তাবে।
তবে জুলাই ঘোষণাপত্রকে পাঠকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক বলেন, ‘আমরা মনে করি, অভ্যুত্থানের আইনি বৈধতা নিশ্চিত করতে এবং সামনের দিনে ফ্যাসিবাদ আবার ফিরে আসার পথে বাধা তৈরিতে এই ঘোষণাপত্র গুরুত্বপূর্ণ।’