“বাংলাদেশ বহুত্ববাদী দেশ, বহু জাতির ও বহু সংস্কৃতির দেশ। এটি কোনো একক সত্ত্বার দেশ নয়। দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ স্বৈরাচারমুক্ত হয়েছে, যেখানে বহু ধর্ম, বহু সংস্কৃতি ও বহু জাতি মানুষ থাকবে।” 

শনিবার (৯ আগস্ট) সকালে বান্দরবানের রাজার মাঠে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কে এস মং। 

এর আগে সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেয় বিভিন্ন পাহাড়ি আদিবাসী জনগোষ্ঠী। বান্দরবানের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর তরুণ-তরুণী, নারী-পুরুষ ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরিধান করে রাজার মাঠে সমবেত হন এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

বক্তারা পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়ন, আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি, পার্বত্য জেলায় অবৈধ বসবাসকারীদের উচ্ছেদ এবং আদিবাসীদের শিক্ষা, ভূমি ও জীবনের অধিকার নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কে এস মং বলেন, বর্তমানে নিরাপত্তা বাহিনীর ক্যাম্পের আশপাশে রোহিঙ্গাদের বসতি স্থাপনসহ জমি দখল বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাহাড়ে শত শত একর জমি দখল হয়ে যাচ্ছে রিসোর্ট ও পর্যটন ব্যবসার নামে, যা পাহাড়িদের ভূমি অধিকার ক্ষুণ্ন করছে।

তিনি বলেন, দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে স্বৈরাচারমুক্ত একটি বাংলাদেশ হয়েছিল। ধর্মীয় সংখ্যালঘু, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার ইতোমধ্যে ক্ষুণ্ন হয়েছে। এরশাদ পতনের পর যেমন ৯০-এর গণআন্দোলনের চেতনা হারিয়ে গিয়েছিল, তেমনই বর্তমানে ২০২৪-এর আন্দোলনের চেতনাও ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলো আন্দোলনের মূল চেতনা ধারণ না করে কেবল দলীয় কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।

কে এস মং আদিবাসীদের সংজ্ঞা তুলে ধরে বলেন, “আদিবাসী হলো সেই জনগোষ্ঠী যারা রাষ্ট্রীয় সীমানা নির্ধারণের পূর্বে একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে বসবাস করে আসছে, নিজেদের আলাদা জাতিসত্ত্বা হিসেবে চিহ্নিত করে নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি ও জীবনধারা রক্ষা করে এবং ভূমির সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক বজায় রাখে। রাষ্ট্র গঠন প্রক্রিয়ায় যাদের অংশগ্রহণ নেই এবং সাংস্কৃতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাঠামো মূল স্রোত থেকে পৃথক, তারাই আদিবাসী।”

ডা.

উষাথোয়াইয়ের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন দৈনিক আমাদের সময় প্রত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক এহসান মাহমুদ, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের সভাপতি খান আসাদুজ্জামান মাসুম, বান্দরবান জেলা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট উবাথোয়াই মারমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সাবেক সভাপতি সুমন মারমা ও স্থানীয় রাজনীতিকরা। 

রাজার মাঠে আলোচনা সভা শেষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শোভাযাত্রাটি পুনরায় রাজার মাঠে এসে শেষ হয়। রঙিন ব্যানার, ফেস্টুনসহ নানা উপকরণে সাজানো শোভাযাত্রা উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি করে।

ঢাকা/চাইমং/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জনগ ষ ঠ

এছাড়াও পড়ুন:

৩২ নম্বরের দিকে যাওয়া ২টি বুলডোজার আটকে দিল সেনাবাহিনী

রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের দিকে যাওয়া দুটি বুলডোজার আটকে দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ সময় ছাত্র-জনতার সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে ঘটনাটি ঘটে।

সূত্র জানায়, দুটি বুলডোজার ট্রাকে করে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। বুলডোজারের ওপরে কিছু তরুণকে স্লোগান দিতে দেখা যায়। এ সময় তারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভেঙে ফেলার ঘোষণা দিচ্ছিল। পরে সেনাবাহিনী ও বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ৩২ নম্বরে প্রবেশের রাস্তায় বুলডোজার দুটি আটকে দেন। ছাত্র-জনতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরু‌দ্ধে রায় ঘোষণা চলছে। সোমবার (১৭ নভেম্বর) বেলা ১১টার পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণার কার্যক্রম শুরু হয়। রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সারা দেশজুড়ে এলাকায় সর্বোচ্চ সতর্কতা এবং নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে।

গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাড়িটিতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল এবং চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেও বুলডোজার এনে বাড়িটির কিছু অংশ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।

ঢাকা/এমআর/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ