হাসিনা বারোটা বাজিয়েছে, এ সরকার চব্বিশটা বাজায়ে দিসে: মির্জা আব্বাস
Published: 9th, August 2025 GMT
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি সদস্য মির্জা আব্বাস অভিযোগ করেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার দেশের অবস্থা আরও খারাপ করে ফেলেছে। তিনি বলেন, ‘দেশের অবস্থা হাসিনা ১২টা বাজিয়েছে, এ সরকার চব্বিশটা বাজায়ে দিসে।’
আজ শনিবার বিকেলে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) আয়োজিত আলোচনা সভায় মির্জা আব্বাস এ কথা বলেন। গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জাসাসের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘অনেক কিছু আছে বলার মতো, আমি এই মঞ্চে দাঁড়িয়ে আমার এই অবস্থান থেকে কথাগুলো বলতে পারছি না। আরও অনেক কিছু আছে, দেশের কোন দিক দিয়ে ক্ষতি হয়েছে, কারা কীভাবে কোথায় আত্মসাৎ করেছে? কত টাকা লুট করেছে, কত টাকা খেয়েছে-এই কথাগুলো কিন্তু বলতে পারি। প্রমাণসহ সবকিছু আছে। কিন্তু আমি এখন বলতে চাই না, আমার অবস্থান থেকে।’
উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিভিন্ন অরাজকতায় বিএনপিকে দোষারোপ করা হচ্ছে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যেখানেই খুন, লুটতরাজ, চাঁদাবাজি; সেখানেই বিএনপির নাম বলছে একটি দল। উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিএনপিকে রং দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। জনগণের সামনে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এটা আমরা খুব ভালো বুঝি।’
নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি–এনসিপিকে উদ্দেশ্য করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আপনাদের যেমন খায়েশ আছে ক্ষমতায় যাওয়ার, আমাদেরও তেমন ইচ্ছা আছে। যদি জনগণ ভোট দেয়, ক্ষমতায় যাব; যদি না দেয় মেনে নেব আপনাদের। কিন্তু আমরা ভোট চাই। এই ভোটের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য গত ১৭ বছর বিএনপি আন্দোলন করেছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল আছে, তারাও চায় না নির্বাচনটা হোক। তারা নির্বাচনের কথা মুখে বলে, কিন্তু অন্তরে তারা নির্বাচনের কথা বলে না। কারণ তাদের ধারণা জন্মেছে, নির্বাচন হলেই বিএনপি ক্ষমতায় বসবে। কিছু কিছু দল নির্বাচন যাতে না হয়, সে জন্য ছুতা বের করে। বিএনপি কখনো দেশ শাসন করেনি, করবেও না। বিএনপি দেশ পরিচালনা করার চেষ্টা করেছে, করবে।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘অনেকে বলেন ৩৬ দিনের আন্দোলনে বাংলাদেশ দ্বিতীয় বার স্বাধীন হয়েছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে একবার, ১৯৭১ সালে। লক্ষ লক্ষ শহীদের জীবনের বিনিময়ে। এখন অনেকেই বলে, এটা আগে, ওটা আগে; এটা না হলে ওইটা করা যাবে না। যেটা হওয়া উচিত সেটা হচ্ছে, জুলাই-আগস্টে যারা হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, সে প্রশাসনের লোক হোক, সাধারণ মানুষ হোক, শেখ হাসিনা হোক কিংবা অন্য কেউ হোক, তাদের বিচারটা করা দরকার খুব জরুরি।’ তিনি বলেন, বিচারকাজ খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয় না। বিচার এবং নির্বাচন পাশাপাশি চলবে। দুটো পাশাপাশি চলতে কোনো অসুবিধা নাই। কিন্তু বিচারের আগে নির্বাচন হওয়া যাবে না, এগুলো বলবেন না।
আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য করে মির্জা আব্বাস বলেন, ভারতে বসে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। দেশে একটা অরাজক অবস্থা সৃষ্টি করতে চায়। দেশে নির্বাচন হতে দেবে না, এমন একটা ভাবসাব তাদের ভেতরে আছে।
আলোচনা সভায় জাসাসের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শওকত আজিজের সভাপতিত্বে আলোচনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম, জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক এম এ মালেক, জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হেলাল উদ্দীন, গণঅভ্যুত্থানে শহীদ মিরাজের বাবা আব্দুর রব মিয়া প্রমুখ। আলোচনা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হয়। এতে জাসাসের শিল্পীরা অংশ নেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ডাকাতি করতে গিয়ে গণপিটুনির শিকার, কিশোরগঞ্জে বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া পৌর বিএনপির সহসভাপতি মাহফুজুর রহমানকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মীর কামরুল হাসান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বহিষ্কৃত মাহফুজুর রহমান পাকুন্দিয়া পৌর সদরের বড়বাড়ির বাসিন্দা। দলীয় সূত্র জানায়, সম্প্রতি সিলেটে ডাকাতির ঘটনায় তিনি গণপিটুনির শিকার হন এবং তাঁর বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলা হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে পাকুন্দিয়া পৌর বিএনপির সুপারিশক্রমে ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সিদ্ধান্ত মোতাবেক মাহফুজুর রহমানের এই বহিষ্কারাদেশ কার্যকর করা হয়েছে। জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন। একই সঙ্গে বিএনপির সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মাহফুজুর রহমানের সঙ্গে কোনো ধরনের সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
এ বিষয়ে কথা বলতে মাহফুজুর রহমানের মুঠোফোন নম্বরে কল করলে বন্ধ পাওয়া যায়। পাকুন্দিয়া পৌর বিএনপির সভাপতি এস এম মিনহাজ উদ্দিন বলেন, সম্প্রতি সিলেটে ডাকাতির ঘটনায় মাহফুজুর রহমান গণপিটুনির শিকার হন এবং তাঁর বিরুদ্ধে একটি ডাকাতির মামলা করা হয়। বিষয়টি কেন্দ্রীয় বিএনপির নজরে আসার পরই তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে।