ট্রাম্পের সঙ্গে তিক্ততা, দেশে বিরোধীদের আক্রমণ—নেতৃত্ব রক্ষায় লড়ছেন মোদি
Published: 10th, August 2025 GMT
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর ১১ বছরের শাসনকালের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং সময় পার করছেন আজ। পাকিস্তানের সঙ্গে বিতর্কিত যুদ্ধবিরতি, নিজের বয়স নিয়ে নতুন করে আলোচনা, আর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সখ্য থাকা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক টানাপোড়েন—সব মিলিয়ে তাঁর নেতৃত্বকে এমন পরীক্ষায় ফেলেছে, যা আগে কখনো হয়নি।
এত সব চাপ সামলানোর পাশাপাশি মোদিকে ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে ভোট কারচুপি নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগেরও জবাব দিতে হচ্ছে। তাঁকে এসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে বিহারে এক কঠিন নির্বাচনী লড়াই শুরুর ঠিক আগে। রাজনৈতিকভাবে ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য এটি।
রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনে হার হলেও তা মোদির লোকসভার অবস্থানে প্রভাব ফেলবে না। কিন্তু এক দশকের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় শক্তভাবে আঁকড়ে থাকা এ নেতার ভাবমূর্তিতে তা বড় ধাক্কা দেবে।
এ সপ্তাহে ট্রাম্প প্রশাসন ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যে মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক বসানোর ঘোষণা দিয়েছে। বিশ্বের যেসব দেশের ওপর ট্রাম্প অতি উচ্চ শুল্ক আরোপ করেছেন, ভারত তার একটি। ফলে দুই দেশের (যুক্তরাষ্ট্র–ভারত) সম্পর্কও তীব্র সংকটে পড়েছে। অথচ মাত্র ছয় মাস আগেও ট্রাম্প ও মোদি একে অপরকে আলিঙ্গন করে ঘনিষ্ঠ বন্ধু বলে বর্ণনা করছিলেন।
নয়াদিল্লিভিত্তিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক আরতি জেরাথ বলেন, ‘ভারত–মার্কিন সম্পর্ক অনেকটাই ট্রাম্প ও মোদির ব্যক্তিগত সম্পর্কের ওপর দাঁড়িয়েছিল। এখন যখন সম্পর্ক খারাপ হচ্ছে, মোদির হাতে কোনো সুরক্ষা ঢাল নেই। অনেকে হতাশ। কারণ, শক্তিশালী এ নেতা দাবি করলেও তেমন শক্তি ও দৃঢ়তা দেখাতে পারেননি।’
তবে নরেন্দ্র মোদি এখন পাল্টা জবাব দিতে শুরু করেছেন। গত বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, দেশ কৃষকদের স্বার্থে যেকোনো মূল্য দিতে প্রস্তুত। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৃষি ও দুগ্ধ খাত উন্মুক্ত করার চাপের প্রসঙ্গ সরাসরি উল্লেখ করেননি তিনি।
ভারত-মার্কিন সম্পর্ক অনেকটাই ট্রাম্প ও মোদির ব্যক্তিগত সম্পর্কের ওপর দাঁড়িয়েছিল। এখন যখন সম্পর্ক খারাপ হচ্ছে, মোদির হাতে কোনো সুরক্ষা ঢাল নেই। অনেকে হতাশ। কারণ, শক্তিশালী এ নেতা দাবি করলেও তেমন শক্তি ও দৃঢ়তা দেখাতে পারেননি।—আরতি জেরাথ, নয়াদিল্লিভিত্তিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক‘ভারত কখনো কৃষক, পশুপালক ও মৎস্যজীবীদের স্বার্থের সঙ্গে আপস করবে না’, এক জনসভায় বলেন মোদি। তিনি আরও বলেন, ‘আমি জানি, এ জন্য আমাকে ব্যক্তিগতভাবে বড় মূল্য দিতে হতে পারে, কিন্তু আমি প্রস্তুত।’
মোদির দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) শেয়ার করা একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্টারে দেখা গেছে, মোদির পিঠে পাথর, ইট ও শুল্কের প্রতীকী ছুরি আঘাত করছে, আর তিনি কাঁধে লাঙলধরা এক কৃষককে আড়াল করছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এ শুল্ক লড়াই বিহার নির্বাচনী প্রচারের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে, যা আগামী মাসে শুরু হতে পারে। ভোটভাইব এজেন্সির সাম্প্রতিক জরিপে বলা হয়েছে, চাকরির অভাবে মোদির নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোটের (এনডিএ) পক্ষে রাজ্যে ক্ষমতা ধরে রাখা কঠিন হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। হোয়াইট হাউস, ওয়াশিংটন ডিসি, যুক্তরাষ্ট্র, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র
এছাড়াও পড়ুন:
৩২ নম্বরের দিকে যাওয়া ২টি বুলডোজার আটকে দিল সেনাবাহিনী
রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের দিকে যাওয়া দুটি বুলডোজার আটকে দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ সময় ছাত্র-জনতার সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে ঘটনাটি ঘটে।
সূত্র জানায়, দুটি বুলডোজার ট্রাকে করে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। বুলডোজারের ওপরে কিছু তরুণকে স্লোগান দিতে দেখা যায়। এ সময় তারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভেঙে ফেলার ঘোষণা দিচ্ছিল। পরে সেনাবাহিনী ও বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ৩২ নম্বরে প্রবেশের রাস্তায় বুলডোজার দুটি আটকে দেন। ছাত্র-জনতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা চলছে। সোমবার (১৭ নভেম্বর) বেলা ১১টার পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণার কার্যক্রম শুরু হয়। রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সারা দেশজুড়ে এলাকায় সর্বোচ্চ সতর্কতা এবং নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে।
গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাড়িটিতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল এবং চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেও বুলডোজার এনে বাড়িটির কিছু অংশ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।
ঢাকা/এমআর/মাসুদ