‘আমির আমাকে এক বছর ঘরে বন্দি করে রেখেছিল’
Published: 10th, August 2025 GMT
বলিউড অভিনেতা আমির খান তার ভাই ফয়সাল খানকে এক বছর ঘরে বন্দি করে রেখেছিলেন। পিঙ্কভিলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানান অভিনেতা ফয়সাল খান।
পরিবারের লোকজন ফয়সালকে ‘পাগল’ মনে করতেন। তার ভাষায়, “তারা বলতেন, আমার সিজোফ্রেনিয়া হয়েছে আর আমি পাগল। আমি সমাজের জন্য বিপজ্জনক। এসব কথাবার্তা হচ্ছিল। আমি নিজেকে দেখছিলাম আর ভাবছিলাম, আমি এই চক্রব্যূহ থেকে কীভাবে বের হবো। এটা আমার জন্য একদম চক্রব্যূহ হয়ে গিয়েছিল। আমি ফেঁসে গিয়েছিলাম। কারণ পুরো পরিবার আমার বিপক্ষে ছিল। সবাই আমাকে পাগল ভাবছিল।”
৫৯ বছর বয়সি ফয়সাল খুব অসহায় হয়ে পড়েছিলেন। কারণ আমির খান তাকে বন্দি করে রেখেছিলেন। ফয়সাল বলেন, “আমি নামাজ পড়তাম আর দোয়া চাইতাম। মাঝে মাঝে মনে হতো, হয়তো আব্বাজান আমাকে সাহায্য করবেন। কারণ উনি দ্বিতীয় বিয়ের পর পারিবারিক রাজনীতি থেকে দূরে ছিলেন। কিন্তু আমি কীভাবে উনার কাছে পৌঁছাব? উনার ফোন নাম্বারও আমার কাছে ছিল না। আমির আমাকে বাড়িতে এক বছর বন্দি করে রেখেছিল।”
আরো পড়ুন:
সালমানের শুটিং সেট কেন ভাঙা হচ্ছে?
কারিনার সঙ্গে পর্দায় অন্তরঙ্গ হতে ভালো লেগেছে: অর্জুন
ফয়সালের ঘরের বাইরে দেহরক্ষী পাহারায় থাকতেন। তা উল্লেখ করে ফয়সাল বলেন, “আমার মোবাইল নিয়ে নেওয়া হয়েছিল, আমি বাইরে যেতে পারতাম না। রুমের বাইরে দেহরক্ষী দাঁড়িয়ে থাকত। জোর করে ওষুধ খাওয়ানো হতো।”
এক বছর পর, ফয়সালের অনুরোধে আমির তাকে অন্য একটি বাড়িতে থাকতে দেন। এরপর তাকে একদম একা ছেড়ে দেন। কয়েক বছর পর, আমির খান তাকে আদালতে গিয়ে ‘সিগনেটরি রাইটস’ দিতে বলেন। এ বিষয়ে ফয়সাল বলেন, “আমির বলল, ‘আমরা তোমার সিগনেটরি রাইটস চাই। তোমাকে কাল আদালতে যেতে হবে এবং বলতে হবে, তুমি কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারো না। একজন ডাক্তার বিচারকের সামনে বলবেন আর তোমার জন্য একজন গার্ডিয়ান নিযুক্ত করা হবে। এ কথা শুনে আমি খুবই অবাক হয়ে গিয়েছিলাম।”
আমিরের কথায় আদালতে যেতে রাজি হন ফয়সাল। কিন্তু সেই রাতেই বাড়ি থেকে পালিয়ে যান বলেও জানান এই অভিনেতা।
মাত্র ৩ বছর বয়সে বলিউড সিনেমায় প্রথম অভিনয় করেন ফয়সাল খান। ১৯৮৮ সালে ‘কেয়ামত সে কেয়ামত তাক’ সিনেমায় অভিনয় করেন। তারপর ‘মেলা’, ‘দুশমনি’, ‘ডেঞ্জার’ প্রভৃতি সিনেমায় দেখা গেছে তাকে। তবে অভিনয়ে এখন নিয়মিত নন ফয়সাল। ২০২২ সালে সর্বশেষ মুক্তি পায় তার অভিনীত ‘ওপান্ডা’ সিনেমা।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র আম র খ ন ফয়স ল খ ন ফয়স ল এক বছর ক বছর
এছাড়াও পড়ুন:
সূর্যের সামনে স্কাইডাইভার, তৈরি হয়েছে এক অলীক আলোকচিত্র
প্রাচীন গল্পে আছে, ইকারাস মোমের ডানা নিয়ে সূর্যের খুব কাছে উড়ে গিয়েছিল। তখন মোম গলে গেলে ইকারাস নিচে পড়ে যায়। সৃজনশীল এক ফটোগ্রাফার সম্প্রতি সূর্যের দারুণ এক ছবি তুলে সেই দৃশ্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় একজন স্কাইডাইভার মাত্র এক সেকেন্ডের ভগ্নাংশের জন্য সূর্যের সামনে দিয়ে নেমে যান। ঠিক তখনই তাঁকে ক্যামেরাবন্দী করেন অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি। জ্বলন্ত সূর্যের মুখের ওপর দিয়ে যেন এক মানব প্রতিকৃতি নিচে নেমে গেল, এমন দৃশ্য ধরা পড়ে ক্যামেরা লেন্সে। দৃষ্টিবিভ্রমের এক অসাধারণ কীর্তি তৈরি করেছেন অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি।
অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি নিখুঁতভাবে তাঁর ক্যামেরা দিয়ে একজন স্কাইডাইভারকে ক্যামেরার সংকীর্ণ ফিল্ড অব ভিউয়ের মধ্য দিয়ে নেমে যাওয়ার সময় ধারণ করেন। ছবিটি বেশ পরাবাস্তব এক অনুভূতি তৈরি করেছে। ইকারাসকে নিয়ে প্রাচীন মিথের সঙ্গে ছবিটি তুলনা করেছেন অনেকেই।
অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি চাঁদ ও সূর্যের অত্যন্ত সূক্ষ্ম ছবি তোলার জন্য পরিচিত। তিনি সূর্যের সামনে স্কাইডাইভারের এই একটি মাত্র ছবির জন্য কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। সূর্যের ছবি তোলা এমনিতেই কঠিন কাজ। সেখানে সূর্যের সামনে গতিশীল একটি বিমান বা একজন পতিত মানবকে একই ফ্রেমে আনা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন চ্যালেঞ্জ। বিমানটির গতিপথ, সূর্যের কোণ, ক্যামেরার অবস্থান ও স্কাইডাইভারের অবতরণের মতো সব বিষয়কে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে এক করে কাজটি হয়েছে।
অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি বলেন, ‘বলা যায়, একেবারে অযৌক্তিক একটি কাজ করেছি। যদিও চূড়ান্ত ছবিটি দারুণ এক অনুভূতি দেয়। স্কাইডাইভার ছিলেন ইউটিউবার ও সংগীতজ্ঞ গ্যাব্রিয়েল সি ব্রাউন। সে সূর্যের উত্তাল হলুদ পৃষ্ঠের বিপরীতে একটি কালো সিলুয়েট বা ছায়ামূর্তি হিসেবে ছবিতে চলে এসেছে। সূর্যের অবস্থান ৯ কোটি ৩০ লাখ মাইল দূরে হলেও ক্যামেরায় দারুণভাবে দেখা যাচ্ছে সব। ইকারাসের সঙ্গে তুলনা করা ছবি অসম্ভব বলে মনে হয়। আগুনের মতো সৌর ক্রোমোস্ফিয়ারের আবহের বিপরীতে একটি সত্যিকারের মানব চিহ্ন আমাদের মুগ্ধ করে। দেখে মনে হবে যেন, মহাকাশে কেউ নিচে পড়ে যাচ্ছে।’
স্কাইডাইভাররা ব্রাউনের ৩ হাজার ৫০০ ফুট উচ্চতা থেকে পতন শুরু করলে প্রায় ১০ সেকেন্ড সময় ব্যয় করে প্যারাসুট খোলার আগে ছবি তোলার সুযোগ মেলে। ম্যাককার্থি একটি লুন্ট ৬০ মিলিমিটার এইচ–আলফা ক্যামেরায় তার ফ্রি ফলের ছবি তোলেন। একটি এএসআই ১ হাজার ৬০০ মিলিমিটারে একক এক্সপোজার ধারণ করা হয়। আসলে এই বিভ্রমের মূল কারণ হচ্ছে দূরত্বের সামঞ্জস্য। ব্রাউন একটি ছোট বিমান থেকে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ ফুট ওপর থেকে লাফ দেন। আর ম্যাককার্থি প্রায় আট হাজার ফুট দূরে অবস্থান করেছিলেন। স্কাইডাইভার অবশ্যই সূর্যের কাছে ছিলেন না। শুধু ক্যামেরার দৃষ্টিকোণ থেকে নিখুঁত অবস্থানের কারণে স্কাইডাইভারকে অসম্ভব কাছাকাছি দেখাচ্ছিল। আসলে লাফ দেওয়ার আগে বিমানটিকে সঠিক অবস্থানে আনার জন্য ছয়বার চেষ্টা করতে হয়েছে। স্কাইডাইভারকে ফ্রেমে ধরার জন্য মাত্র একবারের সুযোগ ছিল। ম্যাককার্থি তাঁর মনিটরে সেই ক্ষুদ্র অবয়বটিকে সূর্যের আলোর সঙ্গে মিলিয়ে একটি নিখুঁত অবয়ব ধারণ করেন।
এই ছবিকে অনেকেই পৌরাণিক রূপকথার সঙ্গে তুলনা করছেন। গ্রিক মিথের ইকারাসের সঙ্গে তুলনা করেছেন। ম্যাককার্থির এ ছবিটি সেই আখ্যানকেই একটি আধুনিক ও স্পষ্ট রূপে যেন তুলে ধরছে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া