গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার করপাড়া ইউনিয়ন বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী শিক্ষক মিরাজ হোসেনের বিরুদ্ধে সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর শ্লীলতাহানীর অভিযোগ উঠেছে।

রবিবার (১০ আগস্ট) এ ঘটনার প্রতিবাদে ক্লাস বর্জন করে অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। 

এদিকে, এ ঘটনায় অভিযুক্ত ওই শিক্ষকককে সাময়িকভাবে বহিষ্কার এবং তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ২০ আগস্টের মধ্যে কমিটিতে প্রতিবেদন দাখিল করার কথা বলা হয়েছে। এর আগেও ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এ ধরনের অনৈতিক কাজের অভিযোগ রয়েছে।

আরো পড়ুন:

দিনাজপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদের প্রতিবাদ

ফল প্রকাশসহ ৩ দাবিতে বিভাগে তালা দিয়ে ইবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ওই শিক্ষার্থীর বাবার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, তার সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে ওই একই বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিরাজ হোসেনের কাছে প্রাইভেট পড়তে যায়। গত ৬ আগস্ট অন্যান্য দিনের মতো সকালে প্রাইভেট পড়া শেষে স্কুলে ক্লাসে যাবার আগে ওই শিক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানী চেষ্টা করেন শিক্ষক মিরাজ। এ সময় ওই শিক্ষার্থী যৌন নির্যাতনের শিকার হয়।

পরবর্তীতে বিষয়টি জানাজানি হলে বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষার্থীর অভিভাবকগণ স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি অবগত করেন। তারা আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত এ বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে রবিবার অভিযুক্ত শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা উক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান এবং প্লাকার্ড প্রদর্শন করে। 

এরপর দুপুর ১টার দিকে তারা গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন। এ সময় ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবার স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগপত্র তুলে দেওয়া হয় কর্মকর্তার কাছে।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে সাময়িকভাবে বহিষ্কার এবং তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ২০ আগস্টের মধ্যে কমিটি তাদের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার কথা বলা হয়েছে।

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করছে। স্কুলের অধিকাংশ শিক্ষক অনুপস্থিত। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক কমলেশ বিশ্বাসকে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে ওই ছাত্রীর বাবা বলেন, “আমার মেয়ের উপর অত্যাচারের ঘটনা শুনে আমি প্রাথমিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করি। কিন্তু পরবর্তীতে অন্যান্য আরো অভিভাবকগণসহ এসে জানতে পারি উক্ত শিক্ষক মিরাজ হোসেন এর আগেও বহুবার অনেক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করেছে। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সর্বশেষ ছাত্রীকে যৌন হয়রানের দায়ে তাকে জেল কারাগারে পাঠানো হয়। জেলখানা থেকে বের হয়ে সে আবার একই কাজ শুরু করেছে। আমরা এখন তার পদত্যাগ চাই সে যেন আর কোন স্কুলে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ না পেতে পারে।”

নাম প্রকাশের না শর্তে অনেক অভিভাবকগণ জানান, পূর্বে উক্ত শিক্ষক একই বিষয়কে কেন্দ্র করে সাময়িক বরখাস্ত ও কয়েকবার জেল খেটেও তার এখনো শিক্ষা হয়নি। এর ফলে অনেক অভিভাবক অত্র প্রতিষ্ঠানে তাদের সন্তানদের পাঠাতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছে। সকলের দাবি করপাড়া ইউনিয়ন বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মিরাজ হোসেনরক বহিষ্কারপূর্বক চাকরিচ্যুত করে আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তি প্রদান করা হোক।

এ বিষয়ে জানতে সহকারী শিক্ষক মিরাজ হোসেনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোনটি কেটে দিয়ে বন্ধ করে দেন।

সহকারি প্রধান শিক্ষক পরিমল পান্ডে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “ইতোপূর্বেও তিনি এ ধরনের জঘন্য কাজ করেছে। আমরা আমাদের সন্তান তুল্য শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য যা যা করণীয় তা করব। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরাও সুপারিশ করেছি।

ঢাকা/বাদল/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ওই শ ক ষ ব যবস থ গ রহণ সহক র আগস ট

এছাড়াও পড়ুন:

যাত্রীবেশে উঠে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের চেষ্টা, চালককে গলা কেটে খুন

ফেনীর সোনাগাজীতে গলা কেটে এক অটোরিকশাচালককে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল রোববার রাতে উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের পশ্চিম চরদরবেশ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির নাম মনোরঞ্জন ভূঞা (৬৫)। তিনি চরচান্দিয়া ইউনিয়নের ভূঞা বাজার-সংলগ্ন কলাবাগান এলাকার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।

পুলিশ ও নিহত মনোরঞ্জনের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার রাত ৯টার দিকে সোনাগাজী পৌর শহর থেকে ছোট ফেনী নদীর সাহেবের ঘাট সেতুর ওপর যাওয়ার কথা বলে কয়েকজন যুবক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাটি ভাড়া করেন। অটোরিকশা সাহেবের ঘাট সেতু পার হলে রিকশায় থাকা যুবকেরা গাড়ি থামিয়ে চালককে মারধর করে গাড়িটি ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেন। এতে চালক মনোরঞ্জন ছিনতাইকারীদের বাধা দিলে তাঁকে ধারালো ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে খালের পাশে গাড়িসহ ফেলে পালিয়ে যান তাঁরা।

রাতে স্থানীয় লোকজন খালের পাশে রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।

নিহত ব্যক্তির প্রতিবেশী মহিন উদ্দিন বলেন, মনোরঞ্জন দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। সপ্তাহখানেক আগে কিস্তিতে নতুন একটি অটোরিকশা কেনেন। ধারণা করা হচ্ছে, নতুন অটোরিকশাটি ছিনতাই করতে ব্যর্থ হয়ে তাঁকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।

সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম বলেন, মরদেহটি ফেনীর সোনাগাজী-কোম্পানীগঞ্জ সীমান্তের খালের মধ্যে পাওয়া যাওয়ায় দুই থানার পুলিশ যৌথভাবে ঘটনাস্থলে কাজ করছে। হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটনে পুলিশের একাধিক দল মাঠে কাজ করছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ