কিডনি ভালো রাখতে রোজ কয় লিটার পানি খাবেন
Published: 11th, August 2025 GMT
দেহে সৃষ্টি হওয়া বিভিন্ন বর্জ্য কিডনির মাধ্যমে বেরিয়ে যায় রোজ। কিডনি যদি এই কাজ সঠিকভাবে করতে না পারে, তাহলে বর্জ্য জমা হতে থাকে দেহে। জমা হয় বাড়তি পানিও। এই পানি এবং বর্জ্য দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কিডনির সমস্যা জটিল আকার ধারণ করলে এই পানি এবং বর্জ্য বের করার জন্য ডায়ালাইসিস পর্যন্ত লাগতে পারে। বুঝতেই পারছেন, রোজ কতটুকু পানি খাওয়া প্রয়োজন, তা জেনে রাখা কতটা জরুরি।
ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা.
মো. মতলেবুর রহমান জানালেন, একজন ব্যক্তির ঠিক কতটা পানি প্রয়োজন, তা নির্ভর করে বেশ কিছু বিষয়ের ওপর। এসব বিষয়ের মধ্যে আছে বয়স, দেহের গড়ন, কায়িক শ্রম, খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক অবস্থা, পরিবেশের তাপমাত্রা প্রভৃতি। তাই ঢালাওভাবে একটা পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দেওয়ার সুযোগ নেই।
খুব কম কিংবা খুব বেশি পানি খাওয়া হলে কিডনির কার্যক্ষমতা ব্যাহত হতে পারে। পানি খাওয়া কম হলে প্রস্রাবে সংক্রমণ হতে পারে, কিডনি বা মূত্রনালিতে পাথর হতে পারে। খুব বেশি পানি খেলে আবার রক্তে লবণের মাত্রা কমে যেতে পারে। অতিরিক্ত পানি খেয়ে ফেললে বমিভাব, পেশিতে খিঁচ ধরা, খিঁচুনি হওয়া এমনকি জ্ঞান হারানোর মতো পরিস্থিতিও সৃষ্টি হতে পারে।
পানির পরিমাণ ঠিক করবেন যেভাবেআপনার জন্য রোজ ঠিক কতটা পানি প্রয়োজন, তা আপনি নিজেই ঠিক করতে পারবেন। কত গ্লাস বা কত লিটার পানি খেতে হবে, তা আপনি বুঝতে পারবেন নিজের শরীরের ভাষাতেই।
প্রস্রাব করার সময় রং খেয়াল করুন। হালকা খড়ের মতো হলদে রং হলে বুঝতে হবে পানি খাওয়ার পরিমাণ ঠিক আছে। তবে মনে রাখবেন, কিছু খাবার এবং ওষুধের জন্য প্রস্রাবের রং বদলে যেতে পারে।
পর্যাপ্ত পানি খেলে আপনার রোজ ৪-৮ বার স্বাভাবিক পরিমাণে প্রস্রাব হবে, আপনি তৃষ্ণার্ত অনুভব করবেন না কিংবা অন্য সবকিছু ঠিক থাকা সত্ত্বেও আপনি ক্লান্তি অনুভব করছেন, এমনটা হবে না। এসবের অন্যথা হলে বুঝতে হবে পানি খাওয়ার পরিমাণ ঠিক নেই।
আরও পড়ুন২০৩০ নিয়ে চ্যাটজিপিটির কারিগর স্যাম অল্টম্যানের ভবিষ্যদ্বাণী, শুনলে নড়েচড়ে বসবেন২০ ঘণ্টা আগেগাঢ় প্রস্রাব হলে, পরিমাণে কম হলে, ২৪ ঘণ্টায় চারবারের কম প্রস্রাব হলে, মুখ শুকিয়ে গেলে বা কারণ ছাড়াই ক্লান্তি অনুভব করলে আপনি পানিশূন্যতায় ভুগছেন বলে ধরে নিতে পারেন।
অন্যদিকে প্রস্রাব একেবারে রংহীন হলে, পরিমাণে বেশি হলে, রোজ ৮ বারের বেশি প্রস্রাব হলে বুঝতে হবে অধিক পরিমাণ পানি খাচ্ছেন আপনি।
খেয়াল রাখবেন, আবহাওয়া খুব গরম হলে, অতিরিক্ত ঘাম হলে, প্রচণ্ড শারীরিক পরিশ্রম করলে কিংবা জ্বর হলে পানির পরিমাণ খানিকটা বাড়িয়ে দিতে হয়। আবার আবহাওয়া ঠান্ডা হলে আপনি এমনিতেই পানি কম খেতে পারবেন।
কিডনিতে পাথর হওয়ার ইতিহাস থাকলে বা ঝুঁকি থাকলে অবশ্যই একটু বেশি পানি খাওয়া উচিত। অন্য কোনো কারণে পানি খাওয়া বিধিনিষেধ না থাকলে দিনে অন্তত তিন লিটার পানি খাওয়া উচিত।
আরও পড়ুনকিডনি ভালো রাখতে যে ৩টি খাবার খাবেন২৮ জুলাই ২০২৫কেবল পানিই নয়বিভিন্ন পানীয় এবং খাবার থেকেও পানি পাই আমরা। স্যুপ, ডাল, পাতলা ঝোলের তরকারি প্রভৃতি পানির উৎস। তবে কোমল পানীয়, এনার্জি ড্রিংক বা অ্যালকোহলজাতীয় পানীয় গ্রহণ না করাই ভালো, তাতে কিডনির ক্ষতি হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ করলে প্রস্রাব বেশি হয়। তাই পানির ঘাটতিতে ভুগতে হতে পারে। এই বিবেচনায় হারবাল চা কিংবা ডিক্যাফ কফি তুলনামূলক স্বাস্থ্যকর পানীয়।
ফলমূল, ফলের রস এবং লাউ, চিচিঙ্গা, কুমড়ার মতো অনেক সবজিতেই পানি পাওয়া যায়। সব মিলিয়ে গ্রহণ করা পানির পরিমাণ ঠিক থাকলেই হলো। তাতেই সুস্থ থাকবে আপনার কিডনি।
আরও পড়ুনইউরিক অ্যাসিডের কারণে কেবল বাতব্যথাই নয়, হতে পারে হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক০৪ আগস্ট ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র পর ম ণ ঠ ক প রস র ব বর জ য ক ডন র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
চুয়েটে বড় পর্দায় শেখ হাসিনার মামলার রায় সম্প্রচার
বড় একটি টেবিলে রাখা হয়েছে একটি ল্যাপটপ, প্রজেক্টর ও সাউন্ডবক্স। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উৎসুক জনতা দাঁড়িয়ে আছে টেবিলের পাশে। সামনে থাকা একটি বড় পর্দায় আটকে আছে সবার দৃষ্টি। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলার রায় সরাসরি দেখানো হচ্ছে সেই বড় পর্দায়।
আজ সোমবার বেলা একটার দিকে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) গিয়ে দেখা যায় এ চিত্র। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা চত্বর এলাকার ১ নম্বর ক্যানটিনের সামনে এভাবেই প্রজেক্টরের মাধ্যমে শেখ হাসিনার মামলার রায়ের সরাসরি সম্প্রচার দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়।
চুয়েটের কিছু শিক্ষার্থীর আয়োজনে বড় পর্দায় রায় দেখানোর এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্বাধীনতা চত্বর এলাকায় বড় পর্দায় রায় দেখার সময় কথা হয় চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ইফতেখার মাহমুদের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবারের পাশাপাশি পুরো দেশের মানুষ রায় কী হয়, তা দেখার অপেক্ষায়। চুয়েট শিক্ষার্থীরাও একইভাবে এই রায়ের অপেক্ষায় রয়েছেন।’
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলার রায় আজ ঘোষণা করা হচ্ছে। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলার রায় ঘোষণা করছেন। এই ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। শেখ হাসিনার পাশাপাশি এ মামলার অপর দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এর মধ্যে সাবেক আইজিপি মামুন ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী নামে পরিচিত) হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন।