জীবনবিমা কোম্পানিতে এফডিআরের মতো টাকা রাখা যায়, কত টাকা রাখতে পারবেন
Published: 11th, August 2025 GMT
আপনি এককালীন টাকা রাখার জন্য ব্যাংকের বিকল্প খুঁজছেন? ব্যাংকের বিকল্প হিসেবে আপনি বিমা কোম্পানিতেও টাকা রাখতে পারেন। কারণ, ব্যাংকে যেমন এককালীন স্থায়ী আমানত (এফডিআর) হিসেবে টাকা রাখা যায়, একই ধরনের সুযোগ রয়েছে জীবনবিমা কোম্পানিতে।
যেহেতু বিমা কোম্পানি, তাই একে এফডিআর বলা যায় না। বিমা কোম্পানিগুলো সাধারণভাবে এ ধরনের কর্মসূচির নাম দিয়েছে একক (সিঙ্গেল) প্রিমিয়াম পলিসি। তবে কোম্পানি অনুযায়ী পলিসির নাম ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। ব্যাংকের এফডিআরের সঙ্গে একক প্রিমিয়াম পলিসির পার্থক্য রয়েছে।
একক প্রিমিয়াম পলিসিকে একেক জীবনবিমা কোম্পানি একেক নাম দিয়েছে। কেউ বলছে টার্ম পলিসি, যেগুলো ৫ থেকে ১০ বছর মেয়াদি। আবার কারও রয়েছে দীর্ঘমেয়াদি (লং টার্ম) পলিসি। এগুলো ১০ থেকে ১৫ বছর, এমনকি ২০ বছর মেয়াদিও রয়েছে।
কত টাকা রাখা যায়, লাভ কী
সাধারণত এককালীন এক লাখ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ যেকোনো পরিমাণ টাকা এ ধরনের পলিসিতে রাখা যায়। কোনো কোনো কোম্পানি এর চেয়ে কম টাকা রাখার সুযোগও দিয়ে থাকে। পলিসির মেয়াদ শেষে ব্যাংকের মতোই পাওয়া যায় এককালীন টাকা। এফডিআর থেকে মাসিক সুদ বা মুনাফা যেমন নেওয়া যায়, আবার মেয়াদ শেষেও সুদসহ পুরো টাকা নেওয়া যায়।
এফডিআরের বিপরীতে ঋণও নেওয়া যায় ব্যাংক থেকে। আর একক প্রিমিয়াম পলিসির ক্ষেত্রে মুনাফাসহ টাকা তো বটেই, ঝুঁকি–সুবিধাও পাওয়া যায়। তিন বছর পর অনেক বিমা কোম্পানি বোনাসও দেয় গ্রাহককে।
বেসরকারি চার্টার্ড লাইফ ইনস্যুরেন্সের ‘চার্টার্ড আল-বারাকাহ একক প্রিমিয়াম প্ল্যান’ একটি একক প্রিমিয়াম পলিসি রয়েছে। এখানে বিমার মেয়াদ যথাক্রমে ৫, ৬, ৭, ৮, ৯, ১০, ১২ ও ১৫ বছরের জন্য পলিসি কেনা যায় এবং সর্বনিম্ন প্রিমিয়াম এক লাখ টাকা। বিমা গ্রাহকের সর্বনিম্ন বয়স ১৮ বছর এবং সর্বোচ্চ বয়স ৬০ বছর হতে হবে। মেয়াদ পূর্তিকালীন সর্বোচ্চ বয়স ৭০ বছর। এ পরিকল্পে সর্বনিম্ন প্রিমিয়াম হবে এক লাখ টাকা এবং সর্বোচ্চ পরিমাণ বিমা গ্রাহকের ইচ্ছামাফিক। বিমার শুরুতেই পুরো মেয়াদের জন্য একটি মাত্র প্রিমিয়াম জমা দিতে হবে। আত্মহত্যা (আপত্তি উত্থাপনযোগ্য সময়ের মধ্যে), যুদ্ধ অথবা এইডসের কারণে মৃত্যু হলে এই বিমা কোনো সুরক্ষা দেবে না।
বাংলাদেশে ভারতীয় একটি জীবনবিমা কোম্পানি রয়েছে। এর নাম লাইফ ইনস্যুরেন্স করপোরেশন বাংলাদেশ, সংক্ষেপে যা ‘এলআইসি বাংলাদেশ’ নামে পরিচিত। এরও একক প্রিমিয়াম পলিসি রয়েছে, যেখানে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য একবার প্রিমিয়াম পরিশোধ করতে হয়। পলিসি চলাকালে গ্রাহক মারা গেলে গ্রাহকের নমিনি সম্পূর্ণ বিমা অঙ্ক, যত বছর পলিসি চলেছে তার পুঞ্জীভূত বোনাস এবং এলআইসি ঘোষণা করে থাকলে চূড়ান্ত অতিরিক্ত বোনাস পাবেন।
মার্কেন্টাইল ইসলামি লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানিতেও রয়েছে এ রকম একক বিমা পলিসি। পলিসির মেয়াদ শেষে পলিসিধারী মূল বিমার দ্বিগুণ অর্থ পাবেন। যদি পলিসিধারী মেয়াদপূর্তির আগে মৃত্যুবরণ করেন, তবে মনোনীত ব্যক্তিকে এই অর্থ দেওয়া হবে। পলিসির মেয়াদ ৬ বছর থেকে সর্বোচ্চ ১৫ বছর। পলিসির ন্যূনতম মূল বিমার পরিমাণ অবশ্য ১০ হাজার টাকা। পলিসি কেনার জন্য ন্যূনতম বয়স ১৮ বছর এবং সর্বোচ্চ বয়স ৫৫ বছর।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: একক প র ম য় ম প জ বনব ম একক ল ন র জন য পল স র গ র হক
এছাড়াও পড়ুন:
কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি
পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।
মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।
এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।
মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।
পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।
ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।