কুষ্টিয়া শহরের ৬৪ সিসিটিভি ক্যামেরা অচল
Published: 11th, August 2025 GMT
কুষ্টিয়া শহরজুড়ে নিরাপত্তার জন্য স্থাপন করা ৬৪টি ক্লোজড সার্কিট (সিসিটিভি) ক্যামেরার একটিও বর্তমানে সচল নেই। শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়, সড়ক ও জনসমাগমস্থলে স্থাপন করা এসব নজরদারি ক্যামেরা বিগত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে অচল। ফলে শহরবাসী চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
শহরবাসী জানান, সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলে অপরাধীরা ভয় পায়। সিসিটিভির ফুটেজ অপরাধ সংগঠিত হলে দ্রুত বিচার প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
পুলিশ জানায়, গত বছর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় ক্যামেরাগুলোর বেশিরভাগ ভাঙচুর ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনেক ক্যামেরা গায়েব হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত সংস্কার বা নতুন করে ক্যামেরা স্থাপন করার জন্য বরাদ্দও মেলেনি।
আরো পড়ুন:
রংপুরে গণপিটুনিতে ২ জনের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা
চেতনানাশক খাইয়ে শিশুকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের শুরুতে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ শহরের গুরুত্বপূর্ণ ২৩টি স্থানে উচ্চ ক্ষমতার সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করে। মজমপুর ট্রাফিক অফিস, শাপলা চত্বর, একতারা চত্বর, বকচত্বর, বড়বাজার, কাটাইখানা মোড়, হাসপাতাল মোড়, ছয় রাস্তার মোড়, ত্রিমোহিনী থেকে বটতৈল পর্যন্ত বিস্তৃত এসব জায়গায় স্থাপিত ৬৪টি ক্যামেরার ফুটেজ সরাসরি পর্যবেক্ষণ ও সংরক্ষণের জন্য দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল জেলা গোয়েন্দা শাখা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, নজরদারির অভাবে শহরের বিভিন্ন এলাকায় মাদক কারবার, ছিনতাই ও চুরির মতো অপরাধ বেড়েছে। এমনকি শহরে হত্যাকাণ্ড ঘটছে। সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষে অপরাধীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের কাজ জটিল হয়ে পড়েছে। অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার না থাকলে অপরাধীরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠবে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী রাসেল পারভেজ বলেন, “আমাদের শহরে রাতে অনেক সময় সন্দেহজনক লোকজন ঘোরাফেরা করে। ক্যামেরা থাকলে অন্তত নিরাপত্তা নিয়ে কিছুটা ভরসা থাকত।”
পৌর নাগরিক অধিকার পরিষদ কুষ্টিয়ার আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শামিম উল হাসান অপু বলেন, “দ্রুত নতুন ক্যামেরা স্থাপনের মাধ্যমে আবারো কুষ্টিয়া শহরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সিসিটিভি ক্যামেরা অপরাধীদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করে। অপরাধ সংগঠিত হলে দ্রুত বিচার প্রক্রিয়ায় সিসিটিভির ফুটেজ গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।”
কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি মো.
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ফয়সাল মাহমুদ বলেন, “শহরজুড়ে স্থাপন করা সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো না থাকায় আমাদেরকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়ির সামনের ব্যক্তিগত ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।”
তিনি আরো বলেন, “আমি এই জেলায় ছয় মাস আগে যোগ দিয়েছি। শুনেছি, আন্দোলনের সময় ক্যামেরাগুলো ভাঙচুর করা হয়। আমরা সদর দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি, যাতে দ্রুত বরাদ্দ আসে এবং এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যায়।”
কুষ্টিয়ার গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরা পুনঃস্থাপনের বিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, “সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো পুনঃস্থাপনের জন্য এখনো আমাদের কাছে কোনো সরকারি বরাদ্দ আসেনি। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, কিন্তু তারা এখন বরাদ্দ দিতে পারছেন না। পৌরসভাকেও এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকেও এখনই প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।”
তিনি আরো বলেন, “নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি। বিষয়টি আমাদের বিবেচনায় রয়েছে। শহরবাসীর নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা জরুরিভাবে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের জোর চেষ্টা চালাচ্ছি।”
ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অপর ধ দ র বর দ দ আম দ র র জন য শহর র ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
‘এটা তো চাপের খেলা’—বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে ভারত কোচ
বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ ঘিরে উত্তাপ, উত্তেজনা নতুন নয়। তবে এবারের লড়াইটা ভারতের জন্য বাড়তি চাপেরও। প্রতিপক্ষের মাঠ, গ্যালারিভর্তি দর্শক আর হামজা-শমিতে উজ্জীবিত বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স—সব মিলিয়ে হয়তো কঠিন পরীক্ষাতেই পড়তে হবে সফরকারীদের। আজ ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে ভারতের কোচের কণ্ঠেও ফুটে উঠল তেমনটাই।
আগামীকাল জাতীয় স্টেডিয়ামে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-ভারত। তার আগে আজ একটি হোটেলে ভারতীয় দলের কোচ খালিদ জামিল বলেন, ‘এটা তো চাপের খেলা’।
এশিয়ান কাপ বাছাইপর্ব থেকে বাংলাদেশ ও ভারত দুই দলেরই বিদায় আগেই নিশ্চিত হয়েছে। তবু বাংলাদেশের দর্শকদের মধ্যে ভারত ম্যাচ নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ। যার বড় প্রমাণ অনলাইনে টিকিট ছাড়ার ৬ মিনিটের মধ্যে সব বিক্রি হয়ে যাওয়া।
এর পাশাপাশি প্রতিপক্ষের মাঠে খেলাটা যে সব সময়ই কঠিন, সেই বাস্তবতা জানেন জামিলও। তাঁর দলের ওপর চাপ আছে কি না প্রশ্নে ভারত কোচ বলেন, ‘হ্যাঁ, চাপ আছে। আমাদের তা মানতে হবে। সবাই জানে এটি একটি চাপের ম্যাচ। তবে সে জন্য আমাদের একটি ইতিবাচক ফলের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।’
গত ২৫ মার্চ শিলংয়ে দুই দলের প্রথম লেগ গোলশূন্য ড্র হয়েছিল। সেই ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক হয়েছিল হামজা চৌধুরীর। ইংলিশ ক্লাব লেস্টার সিটিতে খেলা ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার বাংলাদেশের হয়ে এখন পর্যন্ত ৬ ম্যাচে করেছেন ৪ গোল, যার মধ্যে দুটি করেছেন বৃহস্পতিবার নেপালের বিপক্ষে।
ভারত কোচ অবশ্য একক কোনো খেলোয়াড়কে নিয়ে ভাবতে নারাজ, ‘আমরা শুধু একজন খেলোয়াড়কে বিবেচনায় নিচ্ছি না। বাংলাদেশ দলে অনেক ভালো খেলোয়াড় আছে। এটা খুব সিরিয়াস গেম।’
১৯৭৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৩২ বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-ভারত। এর মধ্যে ভারত জিতেছে ১৬টিতে, বাংলাদেশ ২টিতে। ড্র বাকি ১৪টি (২০০৩ সাফে বাংলাদেশের গোল্ডেন গোলে জয়ের ম্যাচসহ)।