লিবিয়া থেকে দেশে ফিরছেন ১৬০ বাংলাদেশি
Published: 11th, August 2025 GMT
আগামী ২০ আগস্ট লিবিয়ার গানফুদা ডিটেনশন সেন্টার থেকে ১৬০ বাংলাদেশি অভিবাসী দেশে ফিরছেন।
দীর্ঘদিন ধরে চলমান নিরাপত্তাহীনতা, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং অর্থনৈতিক সংকটের কারণে অনেকে কাজের সুযোগ না পাওয়ায় লিবিয়া ছেড়ে নিরাপদে দেশে ফিরে আসতে আগ্রহী হয়েছেন অনেকে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) ও বাংলাদেশ হাইকমিশনের সমন্বয়ে পরিচালিত মানবিক প্রত্যাবাসন কর্মসূচির আওতায় তাদের সুষ্ঠু ও নিরাপদ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করা হচ্ছে।
ত্রিপোলীতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন এক বার্তায় এই তথ্য জানিয়েছে।
গত ৭ আগস্ট লিবিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মুহাম্মদ খায়রুল বাশার আইওএম'র ভারপ্রাপ্ত চিফ অব মিশনের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন। বৈঠকে বাংলাদেশি অভিবাসীদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন, সুরক্ষা এবং কল্যাণ নিশ্চিত করার বিষয়ে আলোচনা হয়।
রাষ্ট্রদূত আইওএম'র কাছে স্বেচ্ছায় দেশে ফিরতে আগ্রহী বাংলাদেশি অভিবাসীদের দ্রুত নিবন্ধন এবং পর্যায়ক্রমে তাদের প্রত্যাবাসনের আহ্বান জানান। তিনি উল্লেখ করেন যে ত্রিপোলী, মিসরাতা, বেনগাজীসহ লিবিয়ার বিভিন্ন শহরে অনেক বাংলাদেশি অভিবাসী দেশে ফেরার অপেক্ষায় আছেন।
আইওএম'র কর্মকর্তারা জানান, তারা বিপদগ্রস্ত বাংলাদেশিদের প্রত্যাবাসন কার্যক্রমকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। যদিও বর্তমানে ফ্লাইটের সংখ্যা সীমিত, তবে ভবিষ্যতে তা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই সিদ্ধান্তের ধারাবাহিকতায় আগামী ২০ আগস্ট বেনগাজী থেকে একটি প্রত্যাবাসন ফ্লাইট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই ফ্লাইটে গানফুদা ডিটেনশন সেন্টার থেকে ১৬০ জন বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
বৈঠকে উভয় পক্ষ স্বেচ্ছায় দেশে ফিরতে ইচ্ছুক বাংলাদেশিদের নিবন্ধন কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করার বিষয়ে একমত হয় এবং প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় উদ্ভূত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদারের প্রতিশ্রুতি দেয়।
ঢাকা/হাসান/ইভা
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
লিবিয়া উপকূলে ২৬ বাংলাদেশি অভিবাসীবাহী নৌকাডুবি, ৪ জনের মৃত্যু
লিবিয়া উপকূলে অভিবাসী ও আশ্রয়প্রার্থীদের বহনকারী দুটি নৌকা ডুবে অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়েছে। লিবীয় রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এ তথ্য জানিয়েছে।
গতকাল শনিবার দেওয়া এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে উপকূলীয় শহর আল–খুমসের কাছে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
বিবৃতিতে বলা হয়, প্রথম নৌকাটিতে বাংলাদেশ থেকে আসা ২৬ জন ছিলেন। তাঁদের মধ্যে চারজন মারা গেছেন।
রেড ক্রিসেন্ট জানায়, দ্বিতীয় নৌকায় ৬৯ জন ছিলেন। তাঁদের মধ্যে দুজন মিসরীয়। অনেক সুদানিও ছিলেন। তাঁদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, তা স্পষ্ট নয়। বলা হয়, এ নৌকার যাত্রীদের মধ্যে আটটি শিশু ছিল।
আল–খুমস হলো রাজধানী ত্রিপোলি থেকে প্রায় ১১৮ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত একটি উপকূলীয় শহর।
রেড ক্রিসেন্ট জানায়, দ্বিতীয় নৌকায় ৬৯ জন ছিলেন। তাঁদের মধ্যে দুজন মিসরীয়। অনেক সুদানিও ছিলেন। তাঁদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, তা স্পষ্ট নয়। বলা হয়, এ নৌকার যাত্রীদের মধ্যে আটটি শিশু ছিল।২০১১ সালে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো-সমর্থিত এক আন্দোলনে লিবিয়ায় মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতন হয়। এর পর থেকে দেশটি যুদ্ধ ও দারিদ্র্য থেকে পালিয়ে ইউরোপমুখী অভিবাসী এবং আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য প্রধান ট্রানজিট রুটে পরিণত হয়েছে।
লিবীয় রেড ক্রিসেন্টের প্রকাশ করা ছবিতে দেখা যায়, প্লাস্টিকের ব্যাগে মোড়ানো মৃতদেহগুলো সারিবদ্ধভাবে রাখা। অন্য ছবিতে দেখা যায়, স্বেচ্ছাসেবকেরা উদ্ধার করা ব্যক্তিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছেন। আরেকটি ছবিতে দেখা যায়, উদ্ধার হওয়া লোকেরা কম্বল জড়িয়ে মাটিতে বসে আছেন।
আরও পড়ুনলিবিয়ার উপকূলে নৌকাডুবিতে ৮ বাংলাদেশির মৃত্যু২৪ ডিসেম্বর ২০২৪বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, উদ্ধারকাজে উপকূলরক্ষী বাহিনী ও আল–খুমস পোর্ট সিকিউরিটি এজেন্সি অংশ নেয়। শহরের সরকারি কৌঁসুলির নির্দেশে মৃতদেহগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) গত বুধবার জানিয়েছে, আল বুরি তেলক্ষেত্রের কাছে একটি রাবারের নৌকা ডুবে কমপক্ষে ৪২ জন অভিবাসী নিখোঁজ হয়েছেন। তাঁরা মারা গেছেন বলে মনো করা হচ্ছে। তেলক্ষেত্রটি লিবিয়ার উত্তর–উত্তরপশ্চিম উপকূলে অবস্থিত।
গত অক্টোবরের মাঝামাঝি ত্রিপোলির পশ্চিম উপকূলে ৬১ জন অভিবাসীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সেপ্টেম্বরে আইওএম জানিয়েছিল, লিবিয়ার উপকূলে সুদানের ৭৫ জন শরণার্থী বহনকারী একটি নৌকায় আগুন লাগার পর অন্তত ৫০ জন মারা গেছেন।গত অক্টোবরের মাঝামাঝি ত্রিপোলির পশ্চিম উপকূলে ৬১ জন অভিবাসীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সেপ্টেম্বরে আইওএম জানিয়েছিল, লিবিয়ার উপকূলে সুদানের ৭৫ জন শরণার্থী বহনকারী একটি নৌকায় আগুন লাগার পর অন্তত ৫০ জন মারা গেছেন।
আরও পড়ুনলিবিয়া উপকূলে নৌকাডুবির ঘটনায় ৬ অভিবাসীর লাশ উদ্ধার, নিখোঁজ ২৯১৬ এপ্রিল ২০২২গত সপ্তাহে জেনেভায় জাতিসংঘের এক বৈঠকে যুক্তরাজ্য, স্পেন, নরওয়ে ও সিয়েরা লিয়নসহ কয়েকটি দেশ লিবিয়াকে সেসব আটককেন্দ্র বন্ধ করার আহ্বান জানায়; যেখানে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর ভাষ্য অনুযায়ী অভিবাসী ও শরণার্থীদের নির্যাতন, মারধর এমনকি কখনো হত্যা পর্যন্ত করা হয়।
আরও পড়ুনলিবিয়া উপকূলে নৌকাডুবিতে অন্তত ৬১ অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু: আইওএম১৭ ডিসেম্বর ২০২৩