দুই প্রাক্তন এক মঞ্চে: রুক্মিণী-রাজকে নিয়ে নোংরা মন্তব্য, মুখ খুল
Published: 11th, August 2025 GMT
ভারতীয় বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় তারকা জুটি শুভশ্রী গাঙ্গুলি ও দেব। তাদের পর্দার রসায়ন ব্যক্তিগত জীবনেও গড়িয়েছিল। দীর্ঘ দিন চুটিয়ে প্রেম করেছেন এই যুগল। কিন্তু শেষটা ভালো হয়নি। দুজনের পথ দুটো আলাদা হয়ে গেছে।
শুভশ্রী ঘর বেঁধেছেন পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর সঙ্গে। আর দেব চুটিয়ে প্রেম করছেন অভিনেত্রী রুক্মিণী মৈত্রর সঙ্গে। দীর্ঘ দিন দেব-শুভশ্রীকে এক সিনেমায় যেমন দেখা যায়নি, তেমনি অনুষ্ঠানেও না। বলা যায়, মুখ দেখাদেখিও বন্ধ ছিল!
দেব-শুভশ্রী অভিনীত ‘ধূমকেতু’ সিনেমাটির মুক্তি দীর্ঘ দিন ধরে আটকে আছে। জটিলতা কাটিয়ে মুক্তি পেতে যাচ্ছে এটি। গত ৪ আগস্ট সিনেমাটির ট্রেইলার মুক্তি অনুষ্ঠান ছিল। তাতে এক মঞ্চে হাজির হন দেব-শুভশ্রী। তাদের নজরকাড়া উপস্থিতি চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে রূপ নেয়। কটাক্ষের তির ছুটে যায় দেবের প্রেমিকা রুক্মিণী মৈত্র ও শুভশ্রীর স্বামী রাজ চক্রবর্তীর দিকে। নেটিজেনদের এই ব্যক্তিগত আক্রমণ নিয়ে মুখ খুললেন দেব।
আরো পড়ুন:
বাথরুমে গিয়ে কেঁদেছি: শুভশ্রী
‘কিরে, কেমন লাগছে?’, রাজের প্রাক্তন স্ত্রীর পোস্ট ঘিরে তোলপাড়
একটি পডকাস্টে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দেব বলেন, “এই ঘটনা খুবই দুঃখজনক। এখন কেউ ভালোটাকে ভালোভাবে দেখতে চায় না। প্রতিটা লাইন নিয়ে কাঁটাছেড়া করে। তবে রাজ আর রুক্মিণী খুব ভালোভাবে এই দিকটা সামাল দিচ্ছে। আসলে আমাদের পরিবারই কিন্তু আমাদের বড় সাপোর্ট। আমি শুভশ্রীকে শ্রদ্ধা করি। আমি চাই ও ভালো থাকুক। একটা সিনেমা বা প্রচার এটা বদলে দিতে পারে না। আমরা এমন কিছু করিনি যার মূল্য হবে এটা।”
ব্যক্তিগত আক্রমণে আহত দেব। তা জানিয়ে এই নায়ক বলেন, “দর্শক দেব-শুভশ্রীকে যেভাবে দেখতে চেয়েছিল, সেটাই আমরা রি-ক্রিয়েট করার চেষ্টা করেছিলাম। একটা ওয়ার্ল্ড তৈরি করছিলাম, যাতে নস্টালজিয়া বিষয়টা ফিরে আসে। এজন্য ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হচ্ছে, সত্যি খারাপ লাগছে। আমার গায়ে লাগে না। আমার মনে হয়, ব্যক্তিগত আক্রমণ করা ঠিক নয়। কারণ প্রত্যেকের কন্টিবিউশন আছে।”
রুক্মিণী ও রাজ—দুজনেই দেব-শুভশ্রীর পুনর্মিলনকে আনন্দের সঙ্গে গ্রহণ করেছেন। তা স্মরণ করে দেব বলেন, “আমি রুক্মিণীর কথা বলি, ‘ধূমকেতু’ সিনেমার পিছনে ওর অনেক অবদান রয়েছে। ও আমার সঙ্গে রিলও বানিয়েছে। আজ (১০ আগস্ট) যখন আমার সঙ্গে দেখা হলো ও আমাকে বলল, ‘খুব ভালো ওপেনিং হচ্ছে। আমি তোমার জন্য গর্বিত।’ অন্যদিকে, রাজের সঙ্গে আমার সরাসরি কথা হয়নি। কিন্তু শুভকে দেখে বোঝা যায়, ও কতটা খুশি। আর পরিবারের সাপোর্ট না পেলে ওই আনন্দটা আসে না।”
রাজ-রুক্মিণীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করে দেব বলেন, “আমরা সেদিন অভিনয় করিনি। আমার দর্শকরা, যারা দেব-শুভশ্রীকে বানিয়েছেন তারা যেন পূর্ণ হন সেই চেষ্টা করেছি। আর যদি অপমান হয়ে থাকেন তাহলে আমি শুভশ্রী, রাজ-রুক্মিণীর কাছে দুঃখিত। তবে এটা হয়েছে। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়া থেকে এরচেয়ে বেশি কী আশা করা যায়? আসলে মানুষকে নিয়ে যত বিরূপ মন্তব্য করবে, তত এদের ফলোয়ার বাড়বে। কিন্তু এই ফলোয়ার নিয়ে লাভটা কী?”
নেতিবাচক-ইতিবাচক বিষয়ের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে দেব বলেন, “আমি জানি নেগেটিভ জিনিস অনেক দূর পর্যন্ত যায়। তবে পজেটিভ বিষয়ের একটি ভিত্তি আছে, একটা আনন্দ আছে। কম শেয়ার হোক, কম লাইক হোক কিন্তু তার মধ্যেও একটা আনন্দ আছে যে—আমি কোনো নোংরামি করলাম না। আমরা এত ঝগড়া-ঝামেলা মিটিয়ে ওদিন মঞ্চে ছিলাম, এখনো আছি।”
রাজ-রুক্মিণীকে ধন্যবাদ জানিয়ে দেব বলেন, “তবে আমরা জানি সিনেমাটা কী। আমাদের নিয়ে অনেকের মধ্যে অনেক নেগেটিভিটি ছিল। তাই আমরা সিনেমাটি মুক্তির আগে সবার সামনে আসতে চেয়েছিলাম। শুভ অনেক জায়গায় বলেছে, ‘দেবের জন্য চার বছর…।’ তাছাড়া ‘সন্তান’, ‘খাদান’ সবটা নিয়েই একটা নেগেটিভ বিষয় তৈরি হয়েছিল। আমি আর শুভশ্রী ভেবেছিলাম—সেই নেগেটিভ ইমেজটা মুছে ফেলতে হবে। দেব-শুভশ্রীর মাঝে যে পজেটিভিটি আছে, আমাদের পরিবারের মধ্যে যে পজেটিভি আছে সেটাকে মানুষের সামনে নিয়ে আসতে হবে। আর এটা তখনই সম্ভব হবে, যখন আমাদের পরিবার আমাদের পাশে থাকবে। আমি রাজ-রুক্মিণীকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। ওরা যেভাবে পুরো বিষয়টা হ্যান্ডেল করেছে।”
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র র পর ব র আম দ র প দ ব বল ন দ র পর আনন দ
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্বের সেরা কর্মস্থল হিলটন হোটেল, সেরা তালিকায় আছে মেটলাইফ
আধুনিক মানুষের দিনের বড় একটা সময় যায় কর্মস্থলে। ফলে সেই কর্মস্থলের পরিবেশ কেমন, কর্তৃপক্ষ কর্মীদের কথা কতটা ভাবছে—এ সবকিছু এখন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে তার সম্পর্ক আছে।
সম্মান, নিরাপত্তা, উন্নতির সুযোগ ও কাজের অর্থবহতা আছে—মানুষ সাধারণত এমন কর্মস্থলই চায়। এসব মানদণ্ডের ভিত্তিতে ফরচুন ম্যাগাজিন বিশ্বের সেরা কর্মস্থলের তালিকা প্রকাশ করে থাকে। তারা মূলত বিশ্বের সেরা ২৫ কর্মস্থলের তালিকা করে। সেই তালিকায় সবার ওপরে আছে হিলটন হোটেল। মূলত বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে নিয়ে এই জরিপ ও তালিকা করা হয়েছে।
এবারের তালিকায় ২৫টি কোম্পানির মধ্যে ১৬টি যুক্তরাষ্ট্রের। অন্যগুলো বিভিন্ন দেশের, মূলত ইউরোপের। কোম্পানিগুলোর মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের প্রাধান্য দেখা যাচ্ছে—২৫টি কোম্পানির মধ্যে ৮টি এই খাতের। এ ছাড়া নির্মাণ, জৈব ওষুধ, উৎপাদন, কুরিয়ার, আর্থিক ও পেশাদার সেবা দেওয়া কোম্পানিগুলোও তালিকায় আছে।
সেই বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর মধ্যে একটি কোম্পানি হলো বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় জীবনবিমা কোম্পানি মেটলাইফ। ২০২৫ সালে দশম স্থান অর্জন করে টানা দ্বিতীয় বছরের মতো এই মর্যাদাপূর্ণ বৈশ্বিক স্বীকৃতি ধরে রাখল কোম্পানিটি। বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৪০টি দেশে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম রয়েছে।
৯০ লাখের বেশি উত্তরের ওপর ভিত্তি করে ফরচুনের সেরা ২৫টি কর্মক্ষেত্রের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। জরিপ প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাপী আড়াই কোটি কর্মীর কাজের অভিজ্ঞতাকে তুলে ধরা হয়েছে।
এ বিষয়ে মেটলাইফের প্রেসিডেন্ট ও সিইও মিশেল খালাফ বলেন, ‘টানা দ্বিতীয় বছরের মতো বিশ্বের সেরা কর্মস্থলের তালিকায় স্থান পাওয়া কর্মীদের নিষ্ঠা ও উদ্যোগের প্রমাণ।’
কারা আছে তালিকায়দেখে নেওয়া যাক এবারের তালিকায় কোন কোন দেশের কোম্পানি আছে। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছে কুরিয়ার ও যাতায়াত খাতের কোম্পানি ডিএইচএল। তৃতীয় স্থানে আছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কোম্পানি সিসকো। এর সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রে। চতুর্থ স্থানে আছে পেশাদার সেবা দেওয়া আইরিশ কোম্পানি অ্যাক্সেনচিউর, পঞ্চম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের আরেক বিশ্বখ্যাত হোটেল ম্যারিয়ট ইন্টারন্যাশনাল। ষষ্ঠ স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের জৈব ওষুধ কোম্পানি অ্যাব ভিয়ে, সপ্তম স্থানে আছে ফ্রান্সের পেশাদার সেবা দেওয়া কোম্পানি টিপি। অষ্টম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদনভিত্তিক কোম্পানি স্ট্রাইকার, নবম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি সেলস ফোর্স।
দশম স্থানে আছে মার্কিন বিমা কোম্পানি মেটলাইফ, ১১তম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কোম্পানি সার্ভিস নাউ। ১২তম স্থানে আছে যুক্তরাজ্যের খুচরা বিক্রেতা কোম্পানি স্পেকসেভার্স। ১৩তম স্থানে আছে জার্মানির স্বাস্থ্যসেবা কোম্পানি সিমেন্স হেলদিনেস; ১৪তম স্থানে আছে আইরিশ তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি এক্সপেরিয়েন। ১৫তম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রে তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি এনভিডিয়া, ১৬তম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি কেডেন্স। ১৭তম স্থানে আছে জার্মানির বিমা ও আর্থিক কোম্পানি আলিয়াঞ্জ এবং ১৮তম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন খাতের কোম্পানি ডাও।
১৯ থেকে ২১তম স্থানে আছে তিনটি মার্কিন কোম্পানি। ১৯তম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের জৈব ওষুধ কোম্পানি ভিয়াট্রিস, ২০তম স্থানে তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি অ্যাডোবি, ২১তম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি ক্রাউডস্ট্রাইক।
২২ ও ২৩তম স্থানেও আছে যুক্তরাষ্ট্রের দুটি কোম্পানি—উৎপাদন খাতের এসসি জনসন ও খুচরা বিক্রয় খাতের ট্রেক বাইসাইকেল। ২৪তম স্থানে আছে লিচেনস্টাইনের নির্মাণ কোম্পানি হিলতি ও ২৫তম স্থানে আছে যুক্তরাজ্যের বিমা ও আর্থিক খাতের কোম্পানি অ্যাডমিরাল গ্রুপ।
কীভাবে এই মূল্যায়ন৩০ বছর ধরে এই জরিপ পরিচালনা করছে ফরচুন ম্যাগাজিন। সারা বিশ্বের কর্মীদের কাছ থেকে তারা জানতে চায়, কর্মস্থলে তাঁদের অভিজ্ঞতা কেমন। এই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তারা কিছু মানদণ্ড তৈরি করে। সেই মানদণ্ডের ভিত্তিতে বোঝা যায়, কোনো কর্মস্থল প্রকৃত অর্থেই ‘দারুণ’ কি না। সেই সঙ্গে কর্মীরা সে প্রতিষ্ঠানে থাকতে চান কি না, প্রতিষ্ঠান কত দ্রুত পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে ও তার সামগ্রিক ব্যবসায়িক সাফল্য কতটা মিলবে—এসব বিষয়েও ধারণা পাওয়া যায় জরিপে।
ফরচুন ম্যাগাজিন নিজস্ব ট্রাস্ট ইনডেক্স বা আস্থাসূচক তৈরি করেছে। ব্যবস্থাপনার প্রতি কর্মীদের আস্থা কতটা, সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক কেমন ও কোম্পানির প্রতি কর্মীদের আনুগত্য কতটা—এসব আস্থাসূচকের মাধ্যমে এসব বিষয় পরিমাপ করা হয়।
এ জরিপে কর্মীরা গোপনীয়তার সঙ্গে তাঁদের মতামত জানাতে পারেন। ৬০টি বিষয়ের ওপর ৫ পয়েন্টের ভিত্তিতে উত্তর দিতে হয়, সঙ্গে থাকে ২টি উন্মুক্ত প্রশ্ন।
কর্মীদের কাছ থেকে যেসব বিষয় জানতে চাওয়া হয়, সেগুলো হলো নেতৃত্বের কাছে কি সহজে যাওয়া যায়, নেতৃত্ব সততা ও স্বচ্চতার সঙ্গে কথা বলেন ও কাজ করেন কি না, নেতৃত্বের কথা ও কাজে মিল আছে কি না। সেই সঙ্গে কর্মীরা ব্যক্তিগতভাবে সম্মানিত বোধ করেন কি না এবং তাঁদের প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা কতটা। নেতৃত্ব কর্মীদের কৃতজ্ঞতা জানান কি না এবং কর্মীদের সুস্থতা বজায় রাখার ব্যবস্থা নেওয়া হয় কি না। এ ছাড়া কর্মীদের অবদান রাখার সুযোগ আছে কি না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়।
জরিপে কর্মীদের কাছে আরও যেসব বিষয় জানতে চাওয়া হয় সেগুলো হলো:বেতন, মুনাফা, পদোন্নতি, স্বীকৃতি ও সুযোগের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান কতটা ন্যায়সংগত;
কর্মীরা নিজেদের কাজ, কর্মদল ও প্রতিষ্ঠানের জন্য গর্ব বোধ করেন;
কাজ অর্থবহ এবং তা পরিবর্তন আনতে সহায়তা করে;
সহকর্মীদের সঙ্গে কাজ করতে ভালো লাগে;
কর্মীরা নিজেদের মতো করে কাজ করতে পারেন।
প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের অভিজ্ঞতার ভিন্নতা কতটা, তা–ও জরিপে পরিমাপ করা হয়। কর্মীদের অভিজ্ঞতার ধারাবাহিকতা ও গুণগত মানও মূল্যায়ন করা হয়। এভাবে প্রতিটি ধাপে কঠোর মানদণ্ড মেনে এই তালিকা করা হয় বলে জানিয়েছে ফরচুন ম্যাগাজিন।