ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের দাবি, আমরণ অনশনে এক শিক্ষার্থী
Published: 11th, August 2025 GMT
টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (মাকসু) প্রতিষ্ঠার দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেছেন এক শিক্ষার্থী। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রশাসনিক ভবন প্রাঙ্গণে আক্তারুজ্জামান সাজু নামের এক শিক্ষার্থী এই অমরণ অনশন শুরু করেন।
আক্তারুজ্জামান বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ তত্ত্ব ও পুলিশবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী। তাঁর দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও কিছু শিক্ষার্থী প্রতীকী অনশনে অংশ নিচ্ছেন। সন্ধ্যা ছয়টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অনশন চলছিল।
আক্তারুজ্জামানের সঙ্গে সংহতি জানানো শিক্ষার্থীরা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৯ দফা দাবির অন্যতম হলো দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ছাত্র সংসদ প্রতিষ্ঠা। সেই লক্ষ্যেই তারা ২১ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবিপত্র দেন। কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও রিজেন্ট বোর্ড থেকে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। পরবর্তী সময় গত ২ আগস্ট পুনরায় প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে ১০ আগস্টের মধ্যে রিজেন্ট বোর্ডে প্রস্তাবটি পাস করানোর আহ্বান জানানো হয়। তবে সেই সময়ও পেরিয়ে গেছে, দাবিটি বাস্তবায়িত হয়নি।
আমরণ অনশনে থাকা শিক্ষার্থী আক্তারুজ্জামান বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁর আমরণ অনশন অব্যাহত থাকবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো.
প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সালে টাঙ্গাইলের সন্তোষে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মধ্য দিয়ে কার্যক্রম শুরু হয়। পরে ২০০৩-০৪ শিক্ষাবর্ষে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আমরণ অনশন
এছাড়াও পড়ুন:
এক দফা দাবিতে আমরণ অনশনে সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীরা
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (বিআইটি) মডেলের আদলে একাডেমিক ও প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিতের দাবিতে টানা ৩০ ঘণ্টা ধরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আমরণ অনশন করছেন চারটি সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীরা। কলেজগুলো হলো বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ।
গতকাল রোববার দুপুর ১২টা থেকে চার কলেজের ১২ শিক্ষার্থী অনশন শুরু করেন। আজ সোমবার সন্ধ্যায়ও তাঁদের অনশনে থাকতে দেখা যায়। তবে তাঁদের সঙ্গে আরও অনেক শিক্ষার্থী সেখানে রয়েছেন।
অনশনরত শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, ‘এই প্রতিষ্ঠানগুলোর একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, আর প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড। শিক্ষার্থীদের দাবি, এই দ্বৈত কাঠামোর ফলে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক সমস্যগুলো সমাধান হচ্ছে না। তাঁদের একাডেমিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তাঁরা তাঁদের সমস্যার কথা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বললে তারা বলে, এসব সমাধানের দায়িত্ব তাদের নয়। তোমরা এটা কারিগরিকে বলো। কারিগরিকে বললে সে বলে, এগুলা সমাধানের সক্ষমতা নাই কারিগরির।’
অনশনে অংশ নেওয়া বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের শিক্ষার্থী লুৎফর রহমান বলেন, তাঁদের আন্দোলনটা হচ্ছে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ সংস্কারের আন্দোলন। প্রায় তিন মাস ধরে তাঁরা আন্দোলন করছেন। সর্বশেষ গত ২৭ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তাঁরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। এরপর প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নিলে পুলিশ অতর্কিত হামলা চালায়। এতে ৫০ শিক্ষার্থী আহত হন। এরপর তাঁরা তাঁদের দাবি না মানলে ১০ আগস্ট থেকে অনশনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। দাবি না মানায় তাঁরা গতকাল থেকে অনশন শুরু করেছেন। এখন পর্যন্ত সরকারের কেউ তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।
লুৎফর রহমান আরও বলেন, ‘আমাদের প্রধান সমস্যা হচ্ছে শিক্ষকসংকট। দক্ষ প্রকৌশলী হওয়ার জন্য যে ধরনের ফ্যাসিলিটি দরকার পড়ে, তার ৫ ভাগও আমাদের এখানে নাই। আমাদের চারটা ক্যাম্পাস মিলে মাত্র দুইজন অধ্যাপক, দুইজন সহযোগী অধ্যাপক রয়েছেন। আমার বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে সিভিল ডিপার্টমেন্টে মাত্র একজন স্থায়ী শিক্ষক। একজন শিক্ষক কীভাবে একটা ডিপার্টমেন্ট চালায়, যেখানে একটা প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষক লাগে ৮ থেকে ১০ জন। আমরা কারিগরি এবং গভর্নমেন্টকে বলতে চাই, চালানোর সক্ষমতা না থাকলে আপনারা আমাদের রাখছেন কেন? আমরা এখান থেকে বের হতে চাই এবং আমরা মনে করি, আমাদের এক্সিস্টিং সমস্যাগুলোর একমাত্র সমাধান বিআইটির আদলে একটি স্বতন্ত্র কাঠামো গঠন করা। এর মাধ্যমে আমাদের এই দ্বৈত কাঠামো বিলুপ হবে এবং একাডেমিক ও প্রশাসনিকভাবে একটি স্বাধীন এবং স্থায়িত্ব শাসন নিশ্চিত হবে।’
আমরণ অনশনে অংশ নেওয়া ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বিভাগের শিক্ষার্থী তৌফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা তিন মাস ধরে আন্দোলন করছি। স্মারকলিপি দেওয়া, অবস্থান কর্মসূচি ও প্রেস ব্রিফিং—সবই করেছি, কিন্তু কোনো ফল পাইনি। ফলে আমরা এখন আমরণ অনশনে বসেছি।’