Risingbd:
2025-11-17@07:47:46 GMT

অভিনয়ে তাহসান-মিথিলা কন্যা

Published: 11th, August 2025 GMT

অভিনয়ে তাহসান-মিথিলা কন্যা

প্রাক্তন তারকা দম্পতি রাফিয়াথ রশীদ মিথিলা ও তাহসান খান। বাবা-মায়ের পথ ধরে অভিনয়ে নাম লেখালেন এ জুটির কন্যা আইরা। তবে কোনো নাটক-সিনেমায় নয়, একটি প্রসাধনীর বিজ্ঞাপনে অভিনয় করেছেন কিশোরী আইরা। 

কয়েক দিন আগে প্রকাশ্যে এসেছে আইরা অভিনীত প্রথম বিজ্ঞাপনচিত্র। এতে তার সঙ্গে রয়েছেন মা মিথিলাও। একটি প্রসাধনী পণ্যের বিজ্ঞাপনচিত্রটি বানিয়েছেন পিপলু আর খান। মা-মেয়ে দুজনেই এখন এই প্রসাধনী পণ্যের শুভেচ্ছাদূত। 

এ বিষয়ে রাফিয়াথ রশীদ মিথিলা বলেন, “প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল; তারা মা এবং এক টিনএজ মেয়ের গল্পে বিজ্ঞাপনচিত্র বানাতে চায়। আমরা মা-মেয়ে যেহেতু বন্ধুর মতো, তাদের কনসেপ্টটা বাস্তবেও আমাদের সঙ্গে বেশ মিলে যায়। পরে ভেবে-চিন্তে রাজি হই।”  

আরো পড়ুন:

পরকীয়ার গুঞ্জন: মুখ খুললেন সৃজিত-সুস্মিতা

তাহসানের সঙ্গে বিচ্ছেদ মেনেই নিতে পারছিলাম না: মিথিলা

কন্যার প্রথম অভিনয় নিয়ে রাফিয়াত রশীদ মিথিলা বলেন, “যদিও এটা বিজ্ঞাপনচিত্র, তবু এখানে অভিনয়টা রয়েছে। সে অর্থে আইরার প্রথম অভিনয় এবং আমার সঙ্গেও একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো। গল্পটা শোনার পরই ও রাজি হয়েছিল। এরপর অডিশন নেওয়া হয়, সেখানে বেশ ভালো করেছিল আইরা। তবু শুটিংয়ের শুরুতে একটু নার্ভাস ছিল। নির্মাতাকে ধন্যবাদ, তিনি সামলে নিয়েছিলেন।” 

শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা জানিয়ে মিথিলা বলেন, “ছুটির দিনে মা-মেয়ে যেহেতু বাড়িতে একসঙ্গে সময় কাটাই, সেদিক থেকে শুটিং করছি মনেই হয়নি। দুজনে একসঙ্গে কাজ করেছি। তবে আইরার অনেকটা কষ্ট হয়েছে। ও তো সারা দিন কখনো শুটিং করেনি, শুটিং তো ভীষণ কষ্টের কাজ। ওর জন্য সহজ ছিল না।” 

ভালোবেসে ২০০৬ সালের ৩ আগস্ট বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন মিথিলা ও তাহসান। ২০১৩ সালের ৩০ এপ্রিল এ দম্পতির কোলজুড়ে আসে কন্যাসন্তান। তারা মেয়ের নাম রাখেন আইরা তাহরিম খান। সেই আইরা এখন অনেকটা বড় হয়ে গেছে। তার বয়স এখন ১২ বছর ৩ মাস। 

দর্শকের কাছে তারকা দম্পতি হিসেবে দারুণ জনপ্রিয় ছিলেন তাহসান-মিথিলা। কিন্তু ২০১৭ সালে যৌথভাবে বিবাহবিচ্ছেদের ঘোষণা দেন এই যুগল। এরপর মিথিলা ঘর বেঁধেছেন সৃজিতের সঙ্গে, আর তাহসান বিয়ে করেছেন ব্রাইডাল মেকআপ আর্টিস্ট রোজা আহমেদকে।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট ভ ন টক ব জ ঞ পনচ ত র

এছাড়াও পড়ুন:

জনস্বাস্থ্য নিয়ে গবেষণাই তাঁর নেশা 

স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি। যুক্তরাষ্ট্রে, তথা বিশ্বের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি। প্রতিবছর বিশ্বের সেরা দুই শতাংশ বিজ্ঞানী ও গবেষকের তালিকা প্রকাশ করে তারা। নেদারল্যান্ডসভিত্তিক বিশ্বের প্রথম সারির চিকিৎসা ও বিজ্ঞানবিষয়ক নিবন্ধ প্রকাশনা সংস্থা এলসেভিয়ার সমন্বিত জরিপের মাধ্যমে এ তালিকা করা হয়। গত সেপ্টেম্বরে এ বছরের তালিকা প্রকাশ করা হয়। 

তালিকায় বাংলাদেশি গবেষকদের তালিকাও দীর্ঘ। বাংলাদেশ থেকে স্থান পেয়েছেন ৭১টি প্রতিষ্ঠানের ২৮৬ জন গবেষক। তবে একটি নাম কিছুটা পরিচিত মনে হলো। তুহিন বিশ্বাস। চট্টগ্রামের এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনে পাবলিক হেলথ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। এ নিয়ে টানা তিন বছর এ তালিকায় তাঁর নাম পাওয়া গেল। প্রকাশ করেছেন ১০০টির বেশি গবেষণাপত্র ও নিবন্ধ।

ড. তুহিন বিশ্বাস জনস্বাস্থ্য নিয়ে গবেষণা করছেন এক যুগের বেশি সময় ধরে। বিদেশে উচ্চশিক্ষা শেষে দেশে ফিরেছেন কয়েক বছর হলো। বর্তমানে এশিয়ান ইউনিভার্সিটিতে আছেন। এর আগে কাজ করেছেন ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়াল ডিজিজ রিসার্চ, বাংলাদেশে (আইসিডিডিআরবি)। মূলত তাঁর গবেষণাক্ষেত্র অসংক্রামক ব্যাধি, কিশোর–স্বাস্থ্য, স্বাস্থ্যসেবা ও স্বাস্থ্যনীতি ইত্যাদি। 

ড. তুহিনের সঙ্গে কথা বলার আগে পাবলিক হেলথ বিষয় সম্পর্কে জানা যাক। চিকিৎসাবিজ্ঞান এবং জনস্বাস্থ্য শিক্ষার ফারাক আর যোগসূত্রটাও জানা যাক। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মূলত জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা, রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা, সামাজিক স্বাস্থ্য পরিসর, স্বাস্থ্যনীতি—এসব নিয়ে কাজ করেন। অন্যদিকে রোগীর চিকিৎসা, রোগনির্ণয় ও চিকিৎসা প্রদানের কাজ করেন চিকিৎসকেরা।

ড. তুহিনও কাজ করেন স্বাস্থ্য সুরক্ষা, রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা, সামাজিক স্বাস্থ্য পরিসর ও স্বাস্থ্যনীতি নিয়ে। এসব বিষয়ে তাঁর একাধিক গবেষণাও রয়েছে। বাংলাদেশে জনস্বাস্থ্যবিষয়ক আলাদা ক্ষেত্র গড়ে উঠেছে বেশ কিছুদিন আগে। এই পথে যাত্রা, গবেষণায় আগ্রহ, নানা প্রতিকূলতার গল্প এবং চট্টগ্রাম থেকে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমানোর কথা জানতে কথা হয় তুহিন বিশ্বাসের সঙ্গে।

শুরুটা জ্যাঠা–জ্যাঠিমার হাত ধরে

ড. তুহিনকে পাওয়া গেল নগরের চট্টেশ্বরী সড়কে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের  ক্যাম্পাসে। শুরু হলো তাঁর জীবনের গল্প শোনা। জানালেন, নগরের সঙ্গে লাগোয়া উপজেলা হাটহাজারীর ফতেয়াবাদ এলাকার একটি প্রত্যন্ত গ্রামে তাঁর বেড়ে ওঠা। সেখানেই মাধ্যমিকের আগপর্যন্ত শিক্ষাজীবন। এরপর নগরের সেন্ট প্ল্যাসিডস্ স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়েছেন তিনি। বিএএফ শাহীন কলেজ চট্টগ্রাম থেকে দিয়েছেন উচ্চমাধ্যমিক। 

ড. তুহিন বলেন, ‘বাবা দেশের বাইরে থাকতেন। আর মা পুরোপুরি গৃহিণী। আমাদের গ্রামের দিকে ধারণা ছিল, বিদেশ গেলেই জীবন সার্থক। পড়ালেখার তেমন আগ্রহ সেখানে ছিল না। ছোটবেলায় লেখাপড়ার আগ্রহ তৈরি করেছিলেন আমার জ্যাঠা ও জ্যাঠিমা। তাঁদের কারণেই বলতে গেলে আমি এগিয়েছি।’

মাধ্যমিকের একটি অংশ ফতেয়াবাদের কেটেছে বলে জানান তুহিন বিশ্বাস। এরপর নগরের সেন্ট প্ল্যাসিডস্ স্কুল অ্যান্ড কলেজে। তিনি বলেন, ‘আসলে অভিভাবক না থাকলে কম বয়সের ছেলেমেয়েরা তো তেমন পড়াশোনা করতে চায় না। জ্যাঠা-জ্যাঠিমা না থাকলে হয়তো আমারও পড়াশোনা হতো না। জ্যাঠা-জ্যাঠিমার হাত ধরেই লেখাপড়ার হাতেখড়ি।’

মেডিকেলে স্বপ্নভঙ্গ, বদলেছেন পথ

উচ্চমাধ্যমিকের গল্প শেষে জানতে চাইলাম, তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের যাত্রা নিয়ে। তবে দেশের বিশ্বের সেরা দুই শতাংশ বিজ্ঞানী ও গবেষকের তালিকায় থাকা এই গবেষক জানালেন, মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হননি। খানিকটা অবাক হয়ে আবার একই প্রশ্ন করলাম। এবার হেসেই বললেন, ‘এটা সত্য, আমি মেডিকেল পরীক্ষায় ডিসকোয়ালিফাই হয়েছিলাম।’

কথা আরও এগিয়ে গেল। তিনি জানালেন, নগরের ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (ইউএসটিসি) থেকে স্নাতক শেষ করেছেন। তবে পাবলিক হেলথ বিভাগে নয়, তাঁর স্নাতকের বিষয় ছিল জৈব রসায়ন ও জৈবপ্রযুক্তি। মূলত স্নাতকের পর তিনি বেছে নিয়েছিলেন জনস্বাস্থ্য বিভাগকে। তবে সেটি ছিল ঢাকার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। 

পরপর তিনবার (২০২৩, ২০২৪ ও ২০২৫) বিশ্বের সেরা দুই শতাংশ বিজ্ঞানী ও গবেষকের তালিকায় স্থান পেয়েছেন

ড. তুহিন বলেন, ‘আমার মেডিকেলে পড়ার খুব ইচ্ছা ছিল। আমাদের বড় হওয়াটা ছিল ক্যারিয়ার... মানে মেডিকেল আর ইঞ্জিনিয়ারিং...। এর বাইরে আর কিছু ছিল না। যখন মেডিকেলে চান্স হয়নি, তখন আসলে মেন্টালি অনেক বেশি ডিস্টার্বড ছিলাম। কিছু একটা পড়তে হবে, তাই বায়োকেমিস্ট্রিতে ভর্তি হয়ে যাই। অবশ্য এরপর নর্থ সাউথ থেকে পাবলিক হেলথে মাস্টার্স করি।’ 

অনুপ্রেরণায় ছিলেন যাঁরা

প্রায় এক ঘণ্টার গল্পে তুহিন বিশ্বাস কয়েকটি নাম বারবার বলেন। তাঁর বাল্যবন্ধু অমিত সরকার, তাঁর জ্যাঠা-জ্যাঠিমা এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক আদনান মান্নান। তাঁর মতে, তাঁর এটুকু পর্যন্ত আসায় এ মানুষগুলোর অবদান সবচেয়ে বেশি। জীবনে যখনই ভেঙে পড়েছেন, তাঁদের অনুপ্রেরণায় আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। 

‘মেডিকেল পরীক্ষার পর ভেঙে পড়েছিলাম। ভেবেছিলাম, বিবিএ-এমবিএ করে ফেলব। কিন্তু অমিত অনেকটা জোর করল সায়েন্সের সাবজেক্টে থাকতে। তার কথাতেই ইউএসটিসিতে ভর্তি হলাম। সেটা ছিল পড়ার জন্য পড়া। মানে পরীক্ষায় পাসের জন্য পড়া,’ বলছিলেন তুহিন বিশ্বাস। 

বায়োকেমিস্ট্রি থেকে পাবলিক হেলথে কীভাবে, এই প্রশ্নের জবাবে তুহিন বিশ্বাস বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বর্ষে এসে সবার চিন্তা থাকে এরপর কোন পথে হাঁটা উচিত, তা নিয়ে। তখন আমি আদনান মান্নান স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনিই পরামর্শ দেন পাবলিক হেলথে শিফট করতে। ঢাকার তিনটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে নর্থ সাউথে ভর্তি হই।’ 

গবেষণার হাতেখড়ি যেভাবে

১০০–এর বেশি গবেষণা; নানা বিষয়ে তিনি তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছেন। তবে জানতে চেয়েছিলাম গবেষণার আগ্রহ ও শুরুর দিকে গবেষণা নিয়ে। উত্তরে তুহিন বিশ্বাস বলেন, ‘ইন্টার্নশিপ করার সময় প্রথম জানলাম, আইসিডিডিআরবি নামে একটি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান আছে। যেখানে দেশি–বিদেশি বিজ্ঞানীরা একসঙ্গে কাজ করেন। যখন প্রথম দিন অফিসের ভেতরে ঢুকি তখন মনে হয়েছিল, আমি যেন বাংলাদেশের মধ্যেই আরেকটি দেশে চলে এসেছি।’

২০১৩ সালের দিকে সেখানে ইন্টার্নশিপ শুরু করেন তুহিন বিশ্বাস। মূলত এখানেই তাঁর গবেষণাজীবনের হাতেখড়ি। এর এক বছরের মাথায় তিনি বিদেশে পাড়ি জমান। 

‘২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের একটা ফেলোশিপ পাই। আইসিডিডিআরবি থেকেই এটা পাই। ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব কুইন্সল্যান্ডে ফুল ফান্ডিং স্কলারশিপে পিএইচডি করতে যাই। তিন বছরের মধ্যে পিএইচডি শেষ হলে পোস্ট ডক্টরেট করার সিদ্ধান্ত নিই। এরপর আমি দেশে ফিরে আসি। ২০২২–এর আগস্ট থেকে শিক্ষকতায় আছি।’ 

গবেষণায় দীর্ঘ পথে চ্যালেঞ্জ

ড. তুহিন বিশ্বাসের গবেষণার পথচলাটা কখনোই সহজ ছিল না। তিনি বলেন, ‘গবেষণা মানেই ধৈর্যের পরীক্ষা। আপনি আজ কাজ শুরু করবেন, কিন্তু ফল পেতে হয়তো বছর লেগে যাবে—তবু থামা যাবে না। গবেষণা ভালোভাবে চালাতে হলে ফান্ডিং (তহবিল) অপরিহার্য, কিন্তু বর্তমানে সব ক্ষেত্রেই দেশের ভেতর সে সুযোগ সীমিত।’

 ‘গবেষণায় আসলে লম্বা সময় নিয়ে কাজ করতে হয়। হতাশার জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়। দেখা যেত, প্রায়ই মাঝরাতে উঠে মোবাইল স্ক্রল করে ই–মেইল পড়ছি। হয়তো রাত তিনটায় মেইল এসেছে যে গবেষণা এক্সেপ্ট হয়েছে বা রিজেক্ট হয়েছে’ যোগ করলেন তুহিন। 

তুহিন বিশ্বাস মূলত নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ, নিউট্রিশন এবং কিশোর–স্বাস্থ্য ব্যবস্থা—এই তিনটি প্রধান ক্ষেত্র নিয়ে কাজ করেন। তাঁর কাজকে শুধু ব্যক্তিগত উন্নতির জন্য প্রকাশনা হিসেবে না দেখে, জনস্বাস্থ্যে এর কন্ট্রিবিউশনকে গুরুত্ব দেন। তাঁর এক গবেষণায় তিনি দেখিয়েছেন, দেশে অসংক্রামক ব্যাধির বোঝা কেমন এবং সরকারের প্রস্তুতি আসলে কতটুকু। 

একটি জরিপের মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীদের ৮ থেকে ১০টি মৌলিক স্বাস্থ্যের অবস্থার তথ্য তুলে ধরেছেন। তাঁর কাজ পলিসি লেভেলের প্রস্তুতি এবং মাঠপর্যায়ে এর বাস্তবায়নের মধ্যে ব্যবধান কতটুকু, তা চিহ্নিত করেছে। তিনি মাতৃমৃত্যু ও শিশুস্বাস্থ্য–সংক্রান্ত একটি উদ্ভাবনী গবেষণামূলক ধারণা নিয়ে কাজ করেছেন, যা বর্তমানে সরকার পুরো বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করছে। ২০১৬ সালের দিকে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটি মূল্যায়ন গবেষণা করেছিলেন।

অর্জনের ঝুলিতে যা যা আছে

গবেষণামূলক কাজের ভিত্তিতে তুহিন বিশ্বাস আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক স্বীকৃতি লাভ করেছেন। তাঁর ১০০টির বেশি প্রকাশনা রয়েছে। পরপর তিনবার (২০২৩, ২০২৪ ও ২০২৫) বিশ্বের সেরা দুই শতাংশ বিজ্ঞানী ও গবেষকের তালিকায় স্থান পেয়েছেন, যা তাঁর বৈশ্বিক গবেষণামূলক অবদান এবং প্রকাশনার ওপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়েছে। তাঁর বেশ কয়েকটি গবেষণামূলক কাজ বিখ্যাত জার্নাল ল্যানসেট–এ প্রকাশিত হয়েছে।

আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তুহিন প্রায় ১৪০টি দেশের ডেটা বিশ্লেষণ করেছেন, যেখানে আত্মহত্যা, বুলিং এবং স্বাস্থ্যের ঝুঁকির কারণগুলো (অস্বাস্থ্যকর খাবার, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা, ধূমপান, অ্যালকোহল, স্থূলতা) দেখানো হয়েছে। এই ডেটাগুলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে অনুমতি নিয়ে সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এ ছাড়া তিনি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাত-আটটি দেশের (বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা) প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে অসংক্রামক রোগের বোঝা এবং ঝুঁকির কারণগুলো নিয়েও গবেষণা করেছেন। 

সম্প্রতি তিনি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে ক্যানসার সচেতনতা, চিকিৎসা ও স্ক্রিনিংয়ের অবস্থা নিয়ে একটি গুণগত (কোয়ালিটেটিভ) গবেষণা করেন, যা ল্যানসেট–এ প্রকাশিত হয়।

জনস্বাস্থ্য দর্শন এবং পেশাগত পরামর্শ

তুহিন বিশ্বাস জনস্বাস্থ্যকে একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি (বহু-বিষয়ক) ক্ষেত্র হিসেবে দেখেন, যেখানে ডাক্তার, অর্থনীতিবিদ, সাংবাদিক এবং অন্যান্য পেশাজীবীর সম্মিলিত অবদান জরুরি। তিনি উল্লেখ করেন যে ডাক্তাররা যেখানে মূলত চিকিৎসা (ট্রিটমেন্ট) নিয়ে কাজ করেন, জনস্বাস্থ্যের মূল লক্ষ্য হলো রোগ প্রতিরোধ (প্রিভেনশন)। 

কোভিড-১৯ মহামারির উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, পাবলিক হেলথই হাত ধোয়া ও মাস্ক পরার মতো বিষয়গুলো প্রয়োগ করে। বর্তমান বাংলাদেশে পাবলিক হেলথ সেক্টরের অবদান অনেক বেশি। যদি সরকারি সমর্থন থাকে, তবে স্বাস্থ্যের সমস্যাগুলো অনেকাংশে কমে আসবে। তবে স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নের জন্য ডাক্তার এবং পাবলিক হেলথ বিশেষজ্ঞদের সমন্বয় করে কাজ করা অপরিহার্য।

নতুন গবেষকদের পরামর্শ দিয়ে তুহিন বিশ্বাস বলেন, সব বিষয়ে মনোযোগ না দিয়ে একটি নির্দিষ্ট এরিয়াতে ফোকাস করতে হবে। গবেষণায় সফল হতে হলে ধৈর্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এখানে প্রাপ্তির চেয়ে হতাশা অনেক বেশি। 

তুহিন বিশ্বাস তাঁর কাজের মাধ্যমে বার্তা দেন, একটি শক্তিশালী অট্টালিকা নির্মাণের জন্য যেমন প্রকৌশলগত নকশা (পলিসি) এবং মজবুত নির্মাণসামগ্রী (মাঠপর্যায়ের ইমপ্লিমেন্টেশন) উভয়েরই প্রয়োজন। 

তেমনি তাঁর গবেষণাগুলো জনস্বাস্থ্য নীতি এবং মাঠপর্যায়ের বাস্তবতার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে একটি টেকসই স্বাস্থ্যসেবা কাঠামো তৈরির প্রমাণ উপস্থাপন করে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাস ধুয়েমুছে চালকের সহকারী ওয়াশরুমে গিয়েছিলেন, ফিরে দেখেন আগুন জ্বলছে
  • ‘বাসটির সঙ্গে একটি ট্রাকের ধাক্কা লাগে, এরপর আর কিছু মনে নেই’
  • রেলের ৭ লাখ টাকার যন্ত্র ২৭ হাজারে বানালেন তিনি
  • কঙ্কনার সঙ্গে বিচ্ছেদ ও সম্পর্ক নিয়ে মুখ খুললেন রণবীর
  • রাতে এক ঘণ্টার ব্যবধানে সাভার-ধামরাইয়ে দুই বাসে আগুন
  • আধুনিক টিভির যত আধুনিক সুবিধা
  • জনস্বাস্থ্য নিয়ে গবেষণাই তাঁর নেশা 
  • রওশন জাহান: বোন, শিক্ষক ও সহযোদ্ধা
  • বিদেশি খেলোয়াড়, দেশি খেলোয়াড় চিন্তা করে বাংলাদেশ জিততে পারবে না—বললেন শমিত
  • দীর্ঘস্থায়ী দাম্পত্য জীবনের মূলমন্ত্র কী? জানালেন ৮৪ বছর ধরে একসঙ্গে থাকা এই দম্পতি