পাথর লুট বন্ধ করে সাদাপাথর রক্ষার দাবিতে ছাত্র-জনতার মানববন্ধন
Published: 11th, August 2025 GMT
সিলেটের গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনকেন্দ্র ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর রক্ষা করতে না পারলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করা হবে বলে মানববন্ধনে ঘোষণা দিয়েছেন পরিবেশ ও পর্যটনপ্রেমী ছাত্র-জনতা। তাঁরা বলেছেন, গণলুটের মাধ্যমে সাদাপাথর ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। জাফলংয়েরও একই অবস্থা। এটা যে করেই হোক ঠেকাতে হবে। ফ্যাসিস্ট পালালেও এখন নব্য ফ্যাসিস্টের উদয় হয়েছে। এই নব্য ফ্যাসিস্টরা সিলেটের পাথর কোয়ারিগুলো ধ্বংস করেছে।
আজ সোমবার বিকেল চারটায় সিলেট নগরের চৌহাট্টা এলাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘সেভ সাদাপাথর’ ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে প্রায় দুই শ ছাত্র-জনতা উপস্থিত ছিলেন। সন্ধ্যা ছয়টায় কর্মসূচি শেষ হয়। পরে পাথর লুট বন্ধে স্থানীয় প্রশাসনকে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান-সংবলিত স্মারকলিপি দিতে একদল ছাত্র-জনতা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন সেভ সিলেটের জেলা গভর্নর তানভীর আহমেদ চৌধুরী, ট্রাভেল সিলেটের সিইও মাহমুদুর রহমান, এনসিপি সিলেট জেলার যুগ্ম সমন্বয়ক ফয়সাল আহমেদ ও আবদুল ওয়াদুদ, জুলাই ২৪ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা সংগঠনের আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম, শিক্ষক মো.
বক্তারা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট–পরবর্তী সময়ে সিলেটের পাথর কোয়ারিগুলো থেকে দেদার পাথর লুটপাট চলে। এতে সিলেটের প্রশাসন ও অনেক রাজনৈতিক নেতা জড়িত। এসব লুণ্ঠনকারীকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি এখনো অবশিষ্ট যা আছে, তা রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসনকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে শিগগির সাদাপাথর অভিমুখে লংমার্চের পাশাপাশি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি দেওয়া হবে। প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হয়।
প্রশাসনের নীরবতার কারণে সাদাপাথর, জাফলং ও ভোলাগঞ্জ এলাকা ধ্বংসের পাশাপাশি পাথরশূন্য হয়েছে দাবি করে বক্তারা বলেন, পাথর লুট বন্ধ করতে হবে। ভোলাগঞ্জ, সাদাপাথর, জাফলং, বিছানাকান্দি সিলেটবাসীর অর্থনৈতিক আয়ের অন্যতম উৎস ছিল। এ উৎস বিনষ্ট করা হয়েছে। সৌন্দর্যের এই অপার লীলাভূমি প্রকাশ্যে ধ্বংস করে ফেলা হলো। সিলেটের প্রকৃতি, পরিবেশ ও সৌন্দর্য রক্ষায় প্রশাসনকে এগিয়ে আসতে হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ছ ত র জনত
এছাড়াও পড়ুন:
সোনারগাঁয়ে বিদ্যালয়ের মালামাল বিক্রির ঘটনায় ঝাড়ু-জুতা মিছিল
সোনারগাঁয়ে পঞ্চমীঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের মালামাল রাতের আধাঁরে গোপনে বিক্রির ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবীতে ঝাড়ু ও জুতা মিছিল করেছেন বিদ্যালয়ের বর্তমান–সাবেক শিক্ষার্থী ও স্থানীয় এলাকাবাসী।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে সাদিপুর ইউনিয়নের পঞ্চমীঘাট স্কুলের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। অভিযুক্ত বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান ভূইয়া, সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান ভূইয়া মাসুম এবং একাধিক অভিযোগের মুখে থাকা প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান তারা।
মানববন্ধনে সাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি তাজুল ইসলাম বলেন, “এ ইউনিয়নকে যেন ব্যক্তিগত সম্পত্তি মনে করে মাসুম ও মনিরুজ্জামান নিজেদের ইচ্ছেমতো সব কিছু সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।
তাদের নেতৃত্বে বিদ্যালয়ের মালামাল রাতের আধাঁরে নিয়মবহির্ভূতভাবে বিক্রি করা হয়। পরে এলাকাবাসী মালামাল ভর্তি গাড়ি আটক করে। কিন্তু এখন উল্টো ভালো মানুষদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ ছড়ানো হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।”
সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান মাসুদ মোল্লা বলেন, “একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মালামাল চুরি করে বিক্রি করার মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা আমাদের ইউনিয়নের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে।
স্কুলের মতো পবিত্র জায়গায় দুর্নীতি ও অনিয়ম কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এলাকাবাসী রাতেই মালামাল আটকে দিয়ে প্রমাণ করেছে—এ এলাকার মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবসময় ঐক্যবদ্ধ। আমরা চাই প্রশাসন যেন বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করে।”
এলাকাবাসীরা জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মালামাল বিক্রির মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে প্রয়োজন কঠোর নজরদারি ও পরিচালনা কমিটিতে সৎ-নিষ্ঠাবান ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তি।
মানববন্ধন শেষে এলাকাবাসী ঝাড়ু ও জুতা প্রদর্শন করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদ জানান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান ভূইয়া মাসুম জানান, একটি কুচক্রী মহল উদ্দেশ্যপ্রণীত ভাবে আমাদের বিতর্কিত করতে বিক্রি করা মালামাল চুরির ঘটনা সাজিয়েছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে গতকাল মিটিং করেছি৷
অভিযুক্ত বর্তমান কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান ভূইয়া জানান, আমরা স্কুলের একটি কমিটি করে বিক্রি করেছি। তবেমাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে কোনো অনুমতি নেই নি। বিক্রি করার পর গাড়িতে উঠাতে রাত হয়ে যায়। এখানে কোনো চুরির ঘটনা ঘটে নি।
উল্লেখ্য, গত (৯ সেপ্টেম্বর) শনিবার স্কুল বন্ধ থাকা সত্ত্বেও সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককের নির্দেশে রাতের আধাঁরে নিয়মবহির্ভূতভাবে পঞ্চমীঘাট স্কুলের মালামাল বিক্রি করা হয়। যা স্থানীয় এক ভাঙ্গারীর পিক-আপ ভ্যানে নেয়ার সময় স্থানীয়রা আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।