দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে নিখোঁজ হওয়ার দুই দিন পর এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাড়ির অদূরে একটি জঙ্গল থেকে দেড় বছর বয়সী মেয়েশিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। স্বজনেরা বলছেন, চকলেট খাওয়ানোর কথা বলে মায়ের কোল থেকে ডেকে নিয়ে যান এক স্বজন। পরের দিন শিশুটির পরিবারের কাছে মুক্তিপণও চাওয়া হয়। এ ঘটনায় ছয়জনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন গ্রামবাসী।

নিহত শিশুটির পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি জানান, গত শনিবার বিকেলে শিশুটিকে নিয়ে পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নে এক আত্মীয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে যান তার মা–বাবা। ওই দিন রাত আটটার দিকে এলিজা মার্ডি নামের এক স্বজন শিশুটিকে চকলেট খাওয়ানোর কথা বলে মায়ের কোল থেকে তাকে নিয়ে যান। পরে অনেক রাত হলেও এলিজা মার্ডি বিয়েবাড়িতে আর ফেরেননি। অনেক খোঁজাখুঁজি করে তাঁদের কোথাও পাওয়া যায়নি। পরদিন রোববার সকাল ১০টার দিকে এলিজা মার্ডি একা বাড়ি ফেরেন। এ সময় শিশুটির কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। এদিন বিকেলে এলিজা মার্ডির চাচা শিশুটিকে জীবিত ফেরত পেতে চাইলে ১২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। এ সময় মুক্তিপণের টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান শিশুটির মা–বাবা।

আজ সোমবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে স্থানীয় এক ব্যক্তি কৃষিকাজের জন্য মাঠে গিয়ে বিলের পাশে বাঁশঝাড়সংলগ্ন একটি শুকনা নালার মধ্যে অর্ধগলিত অবস্থায় এক শিশুর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। বিষয়টি তিনি আশপাশের লোকজনকে জানান। এ সময় স্থানীয় লোকজনের পক্ষ থেকে ৯৯৯ নম্বরে কল দেওয়া হলে নবাবগঞ্জ থানা–পুলিশের একটি দল মরদেহটি উদ্ধার করে। খবর পেয়ে নিখোঁজ শিশুর স্বজনেরা ছুটে আসেন এবং লাশ শনাক্ত করেন। এ সময় গ্রামবাসী ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এলিজা মার্ডি, তাঁর চাচা, তিন প্রতিবেশী নারীসহ ছয়জনকে আটক করেন। পরে তাঁদের পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়।

এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল মতিন প্রথম আলোকে বলেন, শিশুটির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে। আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছে। নিহত শিশুর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র মরদ হ স বজন এ সময়

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে যে পাঁচ অভিযোগ

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে।

এই পাঁচ অভিযোগ হলো, উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান; প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের নির্মূল করার নির্দেশ; রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা; রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় আন্দোলনরত ছয়জনকে গুলি করে হত্যা এবং আশুলিয়ায় ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যা করা।

শেখ হাসিনার পাশাপাশি এই মামলার অন্য দুই আসামি হলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তিন আসামির মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান পলাতক। দুজনই এখন ভারতে অবস্থান করছেন।

এই মামলার রায় ঘোষণা করা হচ্ছে আজ সোমবার। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর এজলাস থেকে রায় ঘোষণার কার্যক্রম সরাসরি সম্প্রচার করার কথা রয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানের সময় হত্যাকাণ্ডসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা এটিই প্রথম মামলা, যার রায় হতে যাচ্ছে আজ।

বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই মামলার রায় ঘোষণা করবেন। এই ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে গতকাল রোববার এক ব্রিফিংয়ে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগ তাঁরা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছেন। ন্যায়বিচারের স্বার্থে ট্রাইব্যুনাল যে আদেশ দিক না কেন, প্রসিকিউশন সেটা মেনে নেবে।

এই প্রসিকিউটর বলেন, এ মামলার রায়ের যে অংশটুকু ট্রাইব্যুনাল পড়ে শোনাবেন, সেটুকু ট্রাইব্যুনালের অনুমতি সাপেক্ষে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।

আরও পড়ুনজুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় ট্রাইব্যুনালের প্রথম রায় আজ ১ ঘণ্টা আগে

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ‘রেড নোটিশ’ জারির জন্য আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের কাছে আবেদন করেছিল বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি)।

প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার বলেন, রায়ে যদি ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে শাস্তি প্রদান করেন, তাহলে ইন্টারপোলে আরেকটি ‘কনভিকশন ওয়ারেন্টের’ (দণ্ডাদেশের পরোয়ানা) আবেদন করবে প্রসিকিউশন, তাঁর বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করার জন্য।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হাসিনার বিরুদ্ধে যে পাঁচ অভিযোগ
  • শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে যে পাঁচ অভিযোগ