শিক্ষকদের কষ্টের কথা বলার জায়গা কম, শোনার লোকও নেই
Published: 11th, August 2025 GMT
শিক্ষকেরা সমাজের পথনির্দেশক ও বাতিঘর। তাঁরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তৈরি করে দেওয়ার কাজ করছেন। কিন্তু সেই শিক্ষকেরা যথাযথ মর্যাদা পান না। শিক্ষকদের কষ্টের কথা বলার জায়গা কম, শোনার লোকও নেই।
বগুড়ায় ‘আইপিডিসি-প্রথম আলো প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা ২০২৫’ উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে এ কথা বলেন সরকারি আজিজুল হক কলেজের দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফিরোজ মিয়া। আজ সোমবার বিকেলে শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকার শহীদ আবদুল জব্বার সড়কের একটি হোটেলের কনফারেন্স হলে এ সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বগুড়ার বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কবি-সাহিত্যিক, লেখক, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
সুধী সমাবেশে গুণী শিক্ষক ও কথাসহিত্যিক বজলুল করিম বাহার বলেন, শিক্ষকেরা সমাজ বদলে দেন। নতুন প্রজন্ম তৈরি করেন। শিক্ষকের মর্যাদা শেষ হয় না। শিক্ষকেরাই আগামী শতাব্দীর নতুন প্রেরণা। তিনি আরও বলেন, আগের দিনে শিক্ষকেরা শ্রেণিকক্ষে যে শিক্ষা দিতেন, তা শিক্ষার্থীদের মগজে ও মননে ঢুকে যেত। সমাজে এখন সেই গুণী শিক্ষকের অভাব রয়েছে।
বগুড়ার সরকারি মজিবর রহমান ভান্ডারী মহিলা কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ত্বাইফ মামুন বলেন, মর্যাদাপূর্ণ পেশা হলেও শিক্ষকেরা ক্লাসে লাঞ্ছিত হচ্ছেন। নির্যাতিত হচ্ছেন। শিক্ষকেরা নতুন প্রজন্ম তৈরির কারিগর। কিন্তু ব্যক্তি দোষে সেই মর্যাদার অবক্ষয় ঘটছে। ক্লাসের বদলে শিক্ষার্থীরা টিউশনিতে ঝুঁকছেন। শুধু গতানুগতিক শিক্ষার্থী পড়িয়ে গুণী শিক্ষক হওয়া সম্ভব নয়। পাঠদানের পাশাপাশি নৈতিকতা, সৃজনশীল ও মানবিকতার আলো ছড়ানোর কাজ করতে হবে। গুণী শিক্ষক তৈরি নিশ্চিত করা সম্ভব হলে সমাজ আলোকিত হবে।
সুধী সমাবেশে প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক আবুল কালাম মুহম্মদ আজাদ বলেন, ‘মানুষকে মানুষ হয়ে উঠতে হয়। এ জন্য তাকে মানবিক গুণাবলি অর্জন করতে হয়। এই মানবিক গুণাবলি পাওয়া যায় শিক্ষকের কাছে। প্রত্যেক মানুষের জীবনে একজন প্রিয় শিক্ষক আছেন। যিনি মনে দাগ কাটেন, চলার পথে আলো ফেলে দেন। সেই প্রিয় শিক্ষককে খুঁজতেই আইপিডিসি-প্রথম আলো প্রিয় শিক্ষক সম্মাননার আয়োজন করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘একদিকে মানুষের জন্য দুর্দশা সৃষ্টি করা, লোভ–লালসা, হিংসা-প্রতিহিংসার কাছে পরাজিত মানুষের নেগেটিভ বাংলাদেশ দেখি, অন্যদিকে মেয়েরা ফুটবলে, শিক্ষার্থীরা গণিত অলিম্পিয়াডে, ক্রিকেটাররা বিশ্ব ক্রিকেটে, বিজ্ঞানীরা বিশ্ব বিজ্ঞানের আসরে এক দুর্দান্ত আশাবাদী বাংলাদেশকে তুলে ধরছে। প্রথম আলো পজিটিভ বাংলাদেশকে তুলে ধরতে চায়। এগিয়ে নিতে চায়। তারই অংশ হিসেবে আইপিডিসিকে সঙ্গে নিয়ে প্রথম আলো প্রিয় শিক্ষক সম্মাননার এ উদোগ নিয়েছে।’
আইপিডিসি ফাইন্যান্স (পিএলসি) বগুড়া শাখার ভারপ্রাপ্ত শাখা ব্যবস্থাপক মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ক ষকদ র প রথম আল আইপ ড স
এছাড়াও পড়ুন:
দেশে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের ভবিষৎ এখনো অনিশ্চয়তা, শঙ্কায় ভরা: সন্তু লারমা
আজকের এ বাংলাদেশে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের ভবিষৎ এখনো অনিশ্চয়তা ও শঙ্কায় ভরা বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় (সন্তু) লারমা।
সন্তু লারমা বলেছেন, ‘দেশের পাহাড় ও সমতলের অধিকাংশ জনগণ এখনো অস্তিত্ব হুমকির মধ্যে দিন যাপন করছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর চলমান সংস্কার কার্যক্রমে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর কার্যকর কোনো সংগঠন বা নেতৃত্বের সঙ্গে সংলাপের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেনি অন্তর্বর্তী সরকার।’
আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস ২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় লিখিত বক্তব্যে সন্তু লারমা এসব কথা বলেন। আজ শনিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম।
অসুস্থতার কারণে সন্তু লারমা সভায় উপস্থিত থাকতে পারেননি। তাঁর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আদিবাসী ফোরামের নির্বাহী সদস্য পল্লব চাকমা।
লিখিত বক্তব্যে সন্তু লারমা বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন হওয়া দেশে তাঁরা ক্রমশ ভূমিহীন ও দেশান্তরি হচ্ছেন। পাহাড়ের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সমস্যা সমাধানে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি ২৮ বছরেও কার্যকর করছে না এ রাষ্ট্র। ফলে পাহাড়ে বিদ্যমান সমস্যার নানা রূপ প্রতিফলিত হচ্ছে।
সমতলের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের পরিস্থিতি আরও বেশি নাজুক উল্লেখ করে সন্তু লারমা বলেন, ‘ভূমি থেকে উচ্ছেদ, নারী নিপীড়ন, বৈষম্য, বিচারহীনতা—এসবের মাধ্যমে প্রান্তিক থেকে আরও প্রান্তিক হচ্ছেন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষেরা।’
এমন বাস্তবতায় প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক চিন্তাধারার বাংলাদেশের আপামর নাগরিক সমাজ, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী, রাজনৈতিক নেতাসহ সবাইকে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম জোরদারে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান সন্তু লারমা।
দেশে বসবাসকারী ৪০ লাখের বেশি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের টিকে থাকার লড়াইকে শাণিত এবং তাঁদের ঐক্য ও সংহতি সুদৃঢ় করতে তরুণদের অধিকতর ভূমিকা নিয়ে এগিয়ে আসারও আহ্বান জানান সন্তু লারমা।
সন্তু লারমা বলেন, আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকারের লড়াই ও সংগ্রাম বেগবান করা এবং গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক ও শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রগতিশীল আদর্শের কোনো বিকল্প নেই।
আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে সন্তু লারমা বলেন, এ দিবস প্রতিবছরের মতো তাঁদের তরুণ সমাজ ও জনগণকে নবতর সংগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য অনুপ্রেরণা জোগাবে।
আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস ২০২৫ উপলক্ষে আজ শনিবার রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে একটি মিছিল বের করেন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর লোকজন