শিক্ষকেরা সমাজের পথনির্দেশক ও বাতিঘর। তাঁরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তৈরি করে দেওয়ার কাজ করছেন। কিন্তু সেই শিক্ষকেরা যথাযথ মর্যাদা পান না। শিক্ষকদের কষ্টের কথা বলার জায়গা কম, শোনার লোকও নেই।

বগুড়ায় ‘আইপিডিসি-প্রথম আলো প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা ২০২৫’ উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে এ কথা বলেন সরকারি আজিজুল হক কলেজের দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফিরোজ মিয়া। আজ সোমবার বিকেলে শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকার শহীদ আবদুল জব্বার সড়কের একটি হোটেলের কনফারেন্স হলে এ সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বগুড়ার বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কবি-সাহিত্যিক, লেখক, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

সুধী সমাবেশে গুণী শিক্ষক ও কথাসহিত্যিক বজলুল করিম বাহার বলেন, শিক্ষকেরা সমাজ বদলে দেন। নতুন প্রজন্ম তৈরি করেন। শিক্ষকের মর্যাদা শেষ হয় না। শিক্ষকেরাই আগামী শতাব্দীর নতুন প্রেরণা। তিনি আরও বলেন, আগের দিনে শিক্ষকেরা শ্রেণিকক্ষে যে শিক্ষা দিতেন, তা শিক্ষার্থীদের মগজে ও মননে ঢুকে যেত। সমাজে এখন সেই গুণী শিক্ষকের অভাব রয়েছে।

বগুড়ার সরকারি মজিবর রহমান ভান্ডারী মহিলা কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ত্বাইফ মামুন বলেন, মর্যাদাপূর্ণ পেশা হলেও শিক্ষকেরা ক্লাসে লাঞ্ছিত হচ্ছেন। নির্যাতিত হচ্ছেন। শিক্ষকেরা নতুন প্রজন্ম তৈরির কারিগর। কিন্তু ব্যক্তি দোষে সেই মর্যাদার অবক্ষয় ঘটছে। ক্লাসের বদলে শিক্ষার্থীরা টিউশনিতে ঝুঁকছেন। শুধু গতানুগতিক শিক্ষার্থী পড়িয়ে গুণী শিক্ষক হওয়া সম্ভব নয়। পাঠদানের পাশাপাশি নৈতিকতা, সৃজনশীল ও মানবিকতার আলো ছড়ানোর কাজ করতে হবে। গুণী শিক্ষক তৈরি নিশ্চিত করা সম্ভব হলে সমাজ আলোকিত হবে।

সুধী সমাবেশে প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক আবুল কালাম মুহম্মদ আজাদ বলেন, ‘মানুষকে মানুষ হয়ে উঠতে হয়। এ জন্য তাকে মানবিক গুণাবলি অর্জন করতে হয়। এই মানবিক গুণাবলি পাওয়া যায় শিক্ষকের কাছে। প্রত্যেক মানুষের জীবনে একজন প্রিয় শিক্ষক আছেন। যিনি মনে দাগ কাটেন, চলার পথে আলো ফেলে দেন। সেই প্রিয় শিক্ষককে খুঁজতেই আইপিডিসি-প্রথম আলো প্রিয় শিক্ষক সম্মাননার আয়োজন করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘একদিকে মানুষের জন্য দুর্দশা সৃষ্টি করা, লোভ–লালসা, হিংসা-প্রতিহিংসার কাছে পরাজিত মানুষের নেগেটিভ বাংলাদেশ দেখি, অন্যদিকে মেয়েরা ফুটবলে, শিক্ষার্থীরা গণিত অলিম্পিয়াডে, ক্রিকেটাররা বিশ্ব ক্রিকেটে, বিজ্ঞানীরা বিশ্ব বিজ্ঞানের আসরে এক দুর্দান্ত আশাবাদী বাংলাদেশকে তুলে ধরছে। প্রথম আলো পজিটিভ বাংলাদেশকে তুলে ধরতে চায়। এগিয়ে নিতে চায়। তারই অংশ হিসেবে আইপিডিসিকে সঙ্গে নিয়ে প্রথম আলো প্রিয় শিক্ষক সম্মাননার এ উদোগ নিয়েছে।’

আইপিডিসি ফাইন্যান্স (পিএলসি) বগুড়া শাখার ভারপ্রাপ্ত শাখা ব্যবস্থাপক মো.

ফরিদ হাসান বলেন, শিক্ষক জাতির মেরুদণ্ড। সেই শিক্ষকদের সম্মান ও কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্য প্রিয় শিক্ষক সম্মাননার এ আয়োজন। মহান পেশার মানুষদের স্বপ্ন যেন শুধু অন্যদের মাঝেই সীমাবদ্ধ না থাকে, তাই জীবন বদলের কারিগর সব শিক্ষকদের স্বপ্নপূরণে আইপিডিসি নিয়ে এসেছে বিশেষ লোন ‘প্রজ্ঞা’।

প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে অতিথিরা। আজ সোমবার সন্ধ্যায় বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকার একটি হোটেলে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ক ষকদ র প রথম আল আইপ ড স

এছাড়াও পড়ুন:

দিনাজপুরে মেতেছে বিজয়া দশমীর সিঁদুর খেলা

দিনাজপুরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে বিজয়া দশমীতে অনুষ্ঠিত হলো ঐতিহ্যবাহী সিঁদুর খেলা। 

বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দুপুর থেকে শহরের বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ও প্রতিমা বিসর্জন কেন্দ্রে হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণী, শিশু ও প্রবীণ সবাই অংশ নেন এই আনন্দঘন উৎসবে।

আরো পড়ুন:

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে উৎসবমুখর পরিবেশে প্রতিমা বিসর্জন

বুড়িগঙ্গায় প্রতিমা বিসর্জন, সদরঘাটে ভক্তদের ঢল

শঙ্খধ্বনি, ঢাক-ঢোলের তালে প্রতিমার সামনে একে অপরের মুখে, কপালে ও গালে সিঁদুর লেপন করে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন ভক্তরা। লাল রঙে রঙিন হয়ে ওঠে চারপাশ, সৃষ্টি হয় এক অনিন্দ্যসুন্দর পরিবেশ। সিঁদুর খেলাকে কেন্দ্র করে শহরে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে।

দিনাজপুর শহরের বড় মণ্ডপ থেকে শুরু করে বিভিন্ন পূজা মণ্ডপে একই দৃশ্য দেখা গেছে। প্রতিমা বিসর্জনের আগে এভাবেই মা দুর্গাকে বিদায় জানান ভক্তরা।

পণ্ডিতদের মতে, বিজয়া দশমীর সিঁদুর খেলা মূলত মা দুর্গাকে বিদায়ের আগে তাকে শুভকামনা ও আশীর্বাদ জানানোর একটি প্রতীকী রীতি। বিশেষত বিবাহিত নারীরা একে অপরকে সিঁদুর পরিয়ে স্বামীর দীর্ঘায়ু ও পরিবারের মঙ্গল কামনা করেন।

দিনাজপুর শহরের রাজবাটি, কালীতলা, বড় মণ্ডপসহ বিভিন্ন পূজামণ্ডপে ছিল এই উৎসবের প্রাণবন্ত আয়োজন। ছোট-বড় সবাই লাল সিঁদুরে রঙিন হয়ে একে অপরকে আলিঙ্গন করে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

শেষ বিকেলে ঢাক-ঢোলের বাদ্য, শঙ্খধ্বনি ও উলুধ্বনির মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার প্রতিমা বিসর্জনের প্রস্তুতি শুরু হয়। দিনাজপুরে সিঁদুর খেলার এ উৎসব শুধু ধর্মীয় আবেগ নয়, বরং বাঙালি সংস্কৃতির প্রাণের এক রঙিন প্রকাশ।

স্থানীয় পূজারী সুবর্ণা রায় বলেন, “মা দুর্গাকে বিদায় জানাতে মন খারাপ লাগে। তবে সিঁদুর খেলা আনন্দের মধ্য দিয়ে সেই বিষাদকে কিছুটা কমিয়ে দেয়।”

অর্পিতা এক কলেজ ছাত্রী জানান, সারা বছর অপেক্ষা করি দুর্গাপূজার জন্য। আজকের দিনটা আবেগের, আবার আনন্দেরও। মা-কে বিদায় জানালেও সিঁদুর খেলায় মন ভরে যায়।

দিনাজপুর পৌর এলাকার বাসিন্দা শান্তনু চক্রবর্তী বলেন, “সিঁদুর খেলা আমাদের সংস্কৃতির অংশ। এই খেলায় আমরা শুধু আনন্দই পাই না, বরং ঐক্যের বার্তাও ছড়িয়ে যায়।”

আরেক তরুণ ভক্ত রুবেল দেবনাথ বলেন, “সিঁদুর খেলা শুধু একটি আচার নয়, এটি আমাদের মাঝে ভ্রাতৃত্ব ও আনন্দ ভাগাভাগি করার এক বিশেষ উপলক্ষ।”

ঢাকা/মোসলেম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নারায়ণগঞ্জে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব
  • দিনাজপুরে মেতেছে বিজয়া দশমীর সিঁদুর খেলা
  • বুড়িগঙ্গায় প্রতিমা বিসর্জন শুরু, সদরঘাটে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা
  • দেবী দুর্গা শক্তি ও সাহসের মূর্ত প্রতীক: মির্জা ফখরুল 
  • আওয়ামী লীগের ঘাপটি মেরে থাকা অনুচরেরা এখনো তৎপর: মির্জা ফখরুল
  • সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে সব রাজনৈতিক দলের সদিচ্ছা সদিচ্ছা অপরিহার্য: নিসচা
  • ‎চার দিনের ছুটিতে পুঁজিবাজার
  • ব্যাংক টানা ৪ দিন বন্ধ থাকবে, প্রয়োজনে টাকা তুলবেন কীভাবে
  • পূজার ছুটিতে খোলা থাকবে কাস্টম হাউস ও শুল্ক স্টেশন
  • চার দিনের ছুটিতে কক্সবাজার রুটে চলবে ‘ট্যুরিস্ট স্পেশাল’ ট্রেন