২৮ বছর ধরে নিজের টাকায় গাছ লাগান চা-শ্রমিক বিষ্ণু
Published: 12th, August 2025 GMT
সময়–সুযোগ পেলেই নিজের বাইসাইকেলের পেছনে চারা ও গাছ লাগানোর সরঞ্জাম নিয়ে এখানে-সেখানে ছোটেন বিষ্ণু হাজরা (৪০)। রাস্তার ধার, ফাঁকা মাঠ, চা–বাগানের আনাচকানাচে রোপণ করেন নানা ধরনের গাছ। এতেই তাঁর আনন্দ। এ কাজে নিজের পকেট থেকে টাকা খরচ করতে দ্বিধাবোধ করেন না তিনি। চা–শ্রমিক পরিবারে জন্ম নেওয়া মানুষটি দারিদ্র্য উপেক্ষা করে বেছে নিয়েছেন পরিবেশ রক্ষার কাজ। ১৯৯৭ সাল থেকে তিনি এ কাজ করে আসছেন।
বিষ্ণু হাজরা মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের ভাড়াউড়া চা–বাগানের বাসিন্দা। তিনি পেশায় চা–শ্রমিক। চা–বাগানে কাজের পাশাপাশি সেখানে ঝালমুড়িও বিক্রি করেন। তাঁর পরিবারে মা-বাবা, স্ত্রী ও দুই ছেলে রয়েছে।
সম্প্রতি এক দুপুরে ভাড়াউড়া চা–বাগানের দুর্গামন্দির প্রাঙ্গণে বিষ্ণুর সঙ্গে দেখা হয়। কয়েকজন তরুণ-যুবককে নিয়ে মন্দিরটির চারপাশে ছোট ছোট গর্ত করছিলেন তিনি। একপর্যায়ে সেখানে রোপণ করছেন জাম, নিম, বট আর কাঠগোলাপের চারা।
আলাপকালে বিষ্ণু বলেন, ‘১৯৯৪ সালে ষষ্ঠ শ্রেণিতে শহরের ভিক্টোরিয়া উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তি হই। আমাদের চা–শ্রমিক পরিবারে অভাব–অনটন লেগেই থাকত। তখন পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশনিও করতাম। একদিন মাথায় এলো—যদি কিছু গাছের চারা লাগাই, সেই চারা বড় হলে অনেক টাকায় বেচতে পারব, অর্থকষ্ট কমবে। ১৯৯৭ সালে আমি নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বৃক্ষ’ কবিতাটি পড়ি। সেই কবিতা থেকে বেশ অনুপ্রাণিত হই, গাছের অনেক উপকারিতার কথা জানতে পারি। তখন থেকে টিউশনির টাকার একটি অংশ দিয়ে টুকটাক গাছ লাগানো শুরু করি।’
কয়েকজন তরুণ-যুবককেও সম্পৃক্ত করেছেন বৃক্ষরোপণের কাজে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘এটা তো চাপের খেলা’—বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে ভারত কোচ
বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ ঘিরে উত্তাপ, উত্তেজনা নতুন নয়। তবে এবারের লড়াইটা ভারতের জন্য বাড়তি চাপেরও। প্রতিপক্ষের মাঠ, গ্যালারিভর্তি দর্শক আর হামজা-শমিতে উজ্জীবিত বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স—সব মিলিয়ে হয়তো কঠিন পরীক্ষাতেই পড়তে হবে সফরকারীদের। আজ ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে ভারতের কোচের কণ্ঠেও ফুটে উঠল তেমনটাই।
আগামীকাল জাতীয় স্টেডিয়ামে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-ভারত। তার আগে আজ একটি হোটেলে ভারতীয় দলের কোচ খালিদ জামিল বলেন, ‘এটা তো চাপের খেলা’।
এশিয়ান কাপ বাছাইপর্ব থেকে বাংলাদেশ ও ভারত দুই দলেরই বিদায় আগেই নিশ্চিত হয়েছে। তবু বাংলাদেশের দর্শকদের মধ্যে ভারত ম্যাচ নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ। যার বড় প্রমাণ অনলাইনে টিকিট ছাড়ার ৬ মিনিটের মধ্যে সব বিক্রি হয়ে যাওয়া।
এর পাশাপাশি প্রতিপক্ষের মাঠে খেলাটা যে সব সময়ই কঠিন, সেই বাস্তবতা জানেন জামিলও। তাঁর দলের ওপর চাপ আছে কি না প্রশ্নে ভারত কোচ বলেন, ‘হ্যাঁ, চাপ আছে। আমাদের তা মানতে হবে। সবাই জানে এটি একটি চাপের ম্যাচ। তবে সে জন্য আমাদের একটি ইতিবাচক ফলের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।’
গত ২৫ মার্চ শিলংয়ে দুই দলের প্রথম লেগ গোলশূন্য ড্র হয়েছিল। সেই ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক হয়েছিল হামজা চৌধুরীর। ইংলিশ ক্লাব লেস্টার সিটিতে খেলা ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার বাংলাদেশের হয়ে এখন পর্যন্ত ৬ ম্যাচে করেছেন ৪ গোল, যার মধ্যে দুটি করেছেন বৃহস্পতিবার নেপালের বিপক্ষে।
ভারত কোচ অবশ্য একক কোনো খেলোয়াড়কে নিয়ে ভাবতে নারাজ, ‘আমরা শুধু একজন খেলোয়াড়কে বিবেচনায় নিচ্ছি না। বাংলাদেশ দলে অনেক ভালো খেলোয়াড় আছে। এটা খুব সিরিয়াস গেম।’
১৯৭৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৩২ বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-ভারত। এর মধ্যে ভারত জিতেছে ১৬টিতে, বাংলাদেশ ২টিতে। ড্র বাকি ১৪টি (২০০৩ সাফে বাংলাদেশের গোল্ডেন গোলে জয়ের ম্যাচসহ)।