সময়–সুযোগ পেলেই নিজের বাইসাইকেলের পেছনে চারা ও গাছ লাগানোর সরঞ্জাম নিয়ে এখানে-সেখানে ছোটেন বিষ্ণু হাজরা (৪০)। রাস্তার ধার, ফাঁকা মাঠ, চা–বাগানের আনাচকানাচে রোপণ করেন নানা ধরনের গাছ। এতেই তাঁর আনন্দ। এ কাজে নিজের পকেট থেকে টাকা খরচ করতে দ্বিধাবোধ করেন না তিনি। চা–শ্রমিক পরিবারে জন্ম নেওয়া মানুষটি দারিদ্র্য উপেক্ষা করে বেছে নিয়েছেন পরিবেশ রক্ষার কাজ। ১৯৯৭ সাল থেকে তিনি এ কাজ করে আসছেন।

বিষ্ণু হাজরা মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের ভাড়াউড়া চা–বাগানের বাসিন্দা। তিনি পেশায় চা–শ্রমিক। চা–বাগানে কাজের পাশাপাশি সেখানে ঝালমুড়িও বিক্রি করেন। তাঁর পরিবারে মা-বাবা, স্ত্রী ও দুই ছেলে রয়েছে।

সম্প্রতি এক দুপুরে ভাড়াউড়া চা–বাগানের দুর্গামন্দির প্রাঙ্গণে বিষ্ণুর সঙ্গে দেখা হয়। কয়েকজন তরুণ-যুবককে নিয়ে মন্দিরটির চারপাশে ছোট ছোট গর্ত করছিলেন তিনি। একপর্যায়ে সেখানে রোপণ করছেন জাম, নিম, বট আর কাঠগোলাপের চারা।

আলাপকালে বিষ্ণু বলেন, ‘১৯৯৪ সালে ষষ্ঠ শ্রেণিতে শহরের ভিক্টোরিয়া উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তি হই। আমাদের চা–শ্রমিক পরিবারে অভাব–অনটন লেগেই থাকত। তখন পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশনিও করতাম। একদিন মাথায় এলো—যদি কিছু গাছের চারা লাগাই, সেই চারা বড় হলে অনেক টাকায় বেচতে পারব, অর্থকষ্ট কমবে। ১৯৯৭ সালে আমি নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বৃক্ষ’ কবিতাটি পড়ি। সেই কবিতা থেকে বেশ অনুপ্রাণিত হই, গাছের অনেক উপকারিতার কথা জানতে পারি। তখন থেকে টিউশনির টাকার একটি অংশ দিয়ে টুকটাক গাছ লাগানো শুরু করি।’

কয়েকজন তরুণ-যুবককেও সম্পৃক্ত করেছেন বৃক্ষরোপণের কাজে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

‘ভাষা আন্দোলনের তাত্ত্বিক বিষয় আমাকে আকর্ষণ করেছিল’

ছবি: প্রথম আলো

সম্পর্কিত নিবন্ধ