স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই আমি বলেছিলাম, জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা আমার অগ্রাধিকার। তাঁদের মানসম্পন্ন চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। জটিল চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠিয়েছি, সাতটি দেশ থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে চিকিৎসা করিয়েছি। একটি প্রশ্ন উঠেছে যে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা করাতে গিয়ে আমরা দেশের অন্য রোগীদের অবহেলা করেছি কি না। আমি বলতে চাই, আমরা অবহেলা করিনি। কিছু হয়ে থাকলে তা আমাদের অপারগতা। উপযুক্ত বরাদ্দ তো পাই না।

থেমে থাকা কিছু বিষয় আবার শুরু করতে যাচ্ছি। লিভার প্রতিস্থাপন ও বোনম্যারো প্রতিস্থাপন শুরু হয়েছিল, কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় প্রতিস্থাপন হচ্ছে না। এসব চিকিৎসা মূলত বন্ধ আছে। প্রশিক্ষণ ও উপযুক্ত জনবল তৈরি জরুরি। আমরা এমনভাবে শুরু করতে চাই, যেন তা আবারও বন্ধ না হয়।

আরও পড়ুনকাজ হয়েছে কাগজে, উন্নতি নেই স্বাস্থ্যসেবায় ৭ মিনিট আগে

আমরা স্বাস্থ্য প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণ শুরু করেছি। সিভিল সার্জনকে কিছু ক্ষমতা দিয়েছি। তাঁরা জেলা পর্যায়ে কিছু সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। ডিজিটালাইজেশনের যে কাজ হচ্ছে, তাতে অনিয়ম দূর হবে।

এখন সরকারি হাসপাতালগুলো এক পালায় (শিফট) চলে। মানুষ সেবা বেশি চায়। আমরা জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট এবং কুর্মিটোলা হাসপাতালে সীমিত আকারে দুই পালা চালু করেছি। পুরোমাত্রায় দুই পালা সম্ভব। সব হাসপাতালে সম্ভব কি না, তা–ও তো ভেবে দেখার অবকাশ আছে।

ক্ষমতা পরিবর্তনের পরও হাসপাতালের দেয়ালে রাজনৈতিক দলের নেতার ছবি দেখছি, বিজ্ঞাপন দেখছি। দেয়ালে থাকা উচিত ছিল হাসপাতালের সেবার তথ্য বা স্বাস্থ্যবিষয়ক পরামর্শ বা নির্দেশনা। ক্ষমতার বদল হলেও মানসিকতার পরিবর্তন হয়নি। এর জন্য দরকার উপযুক্ত শিক্ষা। স্বাস্থ্যের কোথাও যত্নের বিষয়টি নেই। মানুষের হৃদয়কে স্পর্শ করে, এমন আচরণ হাসপাতালগুলো থেকে পাওয়া যায় না। মেডিকেল কারিকুলামে আচরণশিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করার কথা আমরা বলছি। মানবিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে তোলা কঠিন, কিন্তু জরুরি। আমরা এ বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি।

আইনি কিছু বিষয়ে হাত দিয়েছি। অধ্যাদেশ আকারে পাস করানোর চেষ্টা করব। এর সুফল দেশের মানুষ পাবে। কিছু কাজ শুরু করে দিয়ে যাব, আশা করব আমরা চলে যাওয়ার পরও তার ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক ষমত

এছাড়াও পড়ুন:

শহীদ–আহতদের আত্মত্যাগ ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না: চাকসু ভিপি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) ভিপি মো. ইব্রাহীম হোসেন রনি বলেছেন, “এ বিজয় চাকসু বা আমার নয়; এ বিজয় তাদের, যারা এই দেশের পুনর্গঠনে আহত হয়েছেন, প্রাণ দিয়েছেন। এই আত্মত্যাগ তখনই সফল হবে, যখন আমরা দেশকে সত্যিকারের সুন্দর, সঠিক ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে পারব। তরুণ সমাজকে সেই সোনালী বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখার আহ্বান জানাচ্ছি।”

শনিবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে বাগাতিপাড়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা সর্বস্তরের ছাত্র–জনতার ব্যানারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

আরো পড়ুন:

রাবিতে শিবিরের নবীনবরণে ডাকসুসহ ৩ ছাত্র সংসদের ভিপি

‘সন্ত্রাসী আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে চক্রান্তে লিপ্ত’

রনি বলেন, “আওয়ামী লীগ যদি আবারো ফ্যাসিবাদী রূপে ফিরে আসতে চায়, তবে তাদেরও ফ্যাসিবাদী কায়দায় প্রতিহত করা হবে। দেশের জনগণ আর কখনো তাদের গ্রহণ করবে না। গুম, খুন, হত্যা, দুর্নীতি—এসব করে তারা বাংলাদেশকে ধ্বংস করে দিয়েছে।”

অতীতে ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, “নাটোরে বিশ্ববিদ্যালয় নেই কেন? জেলার ছাত্র–ছাত্রীদের ৭০০ কিলোমিটার দূরে গিয়ে লেখাপড়া করতে হয়—এটাই বা কেন?”

বাগাতিপাড়ার অব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “এই উপজেলায় তিনটি রেলস্টেশন থাকার পরো আন্তঃনগর কোনো ট্রেন থামে না। ঢাকায় যেতে সবাইকে নাটোর স্টেশনে ছুটতে হয়—এটা জনগণের প্রতি অবিচার।”

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও জেলা আমির অধ্যাপক ড. মীর নুরুল ইসলাম। প্রধান বক্তা ছিলেন লালপুর–বাগাতিপাড়া–১ আসনে জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী মাওলানা আবুল কালাম আজাদ।

বাগাতিপাড়া উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা এ কে এম আফজাল হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি জাকির হোসেন মাস্টারের সঞ্চালনায় এ সময় আরো বক্তব্য দেন, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক সাদেকুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি ও বড়াইগ্রাম–গুরুদাসপুর–৪ আসনে এমপি প্রার্থী আব্দুল হাকিম, সহকারী সেক্রেটারি আতিকুল ইসলাম রাসেল, জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মো. জাহিদ হাসান প্রমুখ।

ঢাকা/আরিফুল/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শহীদ–আহতদের আত্মত্যাগ ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না: চাকসু ভিপি