দুর্নীতির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ থাকে, সেই অভিযোগ যদি সুনির্দিষ্ট হয়, তাহলে আপনারা (সাংবাদিক) নিয়ে আসেন না কেন।’

আজ মঙ্গলবার সকালে রংপুরে দুদকের সমন্বিত জেলা ও বিভাগীয় কার্যালয়ের ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ আবদুল মোমেন এসব কথা বলেন।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের যে বিধিবদ্ধ আইন, তাতেও ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। একটা ব্যাপার আমাদের নিশ্চিত করতে হবে, আমরা যে অভিযোগ করব, তা যেন সুনির্দিষ্ট হয়। আমরা যদি বলে থাকি, তিনি কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন, কোথা থেকে করেছেন, কীভাবে করেছেন, এই অংশগুলো যদি প্রমাণ করতে না পারি, তাহলে শেষ পর্যন্ত সেই অভিযোগ টিকবে না। এমনকি উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ থাকে, সেই অভিযোগ যদি সুনির্দিষ্ট হয়, তাহলে আপনারা (সাংবাদিক) নিয়ে আসেন না কেন।’

সম্প্রতি রাজধানীতে এক সেমিনারে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তার অভিযোগ করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের আটজন উপদেষ্টার ‘সীমাহীন দুর্নীতি’র প্রমাণ নিজের কাছে রয়েছে। এই উপদেষ্টাদের সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ হয় না, বদলিও হয় না। তবে তিনি উপদেষ্টাদের নাম বলেননি।

তবে এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এক বিবৃতিতে সরকার তাঁর (সাবেক সচিব) কাছে সব প্রমাণ যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে আহ্বান জানিয়েছে।

এ বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, ‘বিষয়টি পত্রিকায় এসেছে। সেটি আমাদের চোখে পড়েছে। এই সরকার সম্পর্কে ধারণা পাওয়া দরকার, এটা রাজনৈতিক সরকার নয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই সরকারের নেতৃত্বে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি একেবারেই দুর্নীতির বিপক্ষে একজন মানুষ। এটা যদি তাঁর উপদেষ্টা পরিষদের কেউ হন, সে ক্ষেত্রেও তিনি বিন্দুমাত্র ছাড় দিতে রাজি নন।’

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুদকের মামলার বিষয়ে প্রশ্ন করেন একজন সাংবাদিক। এ সম্পর্কে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আমাদের এখানে কয়েকটি মামলা চলমান। আরও কয়েকটি বিষয় তদন্তাধীন। তদন্ত করে শেষ পর্যন্ত যদি প্রমাণিত হয়, আমরা মামলা-মোকদ্দমায় চলে যাব।’

সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে দুদকের অভিযান প্রসঙ্গে মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অভিযান করছি। বিশেষ করে সেবা প্রদানকারী যেসব প্রতিষ্ঠানে সেবা প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকে সেবা গ্রহিতাদের। আমরা অভিযান করছি, যাতে এই অভিযোগগুলো না হয়। ‘

পরে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে দুর্নীতি প্রতিরোধ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সরকারি কর্মকর্তাদের ও কর্মচারীদের ভূমিকা শীর্ষক মতবিনিময় সভায় যোগ দেন।

রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল হকের সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল। উপস্থিত আছেন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন, পুলিশের রংপুরের রেঞ্জের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী, পুলিশ সুপার আবু সাইম প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট দ র আম দ র ন বল ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ফিলিপাইনে ৬ দশমিক ৯ তীব্রতার ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৯

ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলে ৬ দশমিক ৯ তীব্রতার শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত হওয়ার সংখ্যা বেড়ে ৬৯ জন হয়েছে। দেশটির দুর্যোগ-সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা আজ বুধবার এ খবর জানান। বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা ও পানি-বিদ্যুতের সংযোগ আবার চালু করার চেষ্টা করছে ফিলিপাইন সরকার।

দেশটির সিভিল ডিফেন্স কর্মকর্তা রাফি আলেজান্দ্রো সাংবাদিকদের বলেন, স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টার আগে সেবু প্রদেশের উত্তরে বোগো শহরের কাছে ভূমিকম্পটির উৎপত্তি হয়। স্থানীয় হাসপাতালগুলো আহত মানুষের ভিড়ে রীতিমতো উপচে পড়ছে।

আঞ্চলিক সিভিল ডিফেন্স দপ্তরের তথ্য কর্মকর্তা জেন আবাপো বলেন, সেবুর প্রাদেশিক দুর্যোগ দপ্তরের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পে নিহত হওয়ার সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৬৯ জন। অন্য একজন কর্মকর্তা জানান, আহত হয়েছেন ১৫০ জনের বেশি।

দেশটির প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের দ্রুত সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি জানান, মন্ত্রিপরিষদ সচিবেরা ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। প্রিয়জন হারানো ব্যক্তিদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি।

সেবু ফিলিপাইনের জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্যগুলোর একটি। সেখানে প্রায় ৩৪ লাখ মানুষের বসবাস। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ম্যাকতান-সেবু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্যক্রম চালু রয়েছে। এটা ফিলিপাইনের দ্বিতীয় ব্যস্ততম বিমানবন্দর।

ভূমিকম্পে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সান রেমিগিও শহরটিও। উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তার জন্য এ শহরে ‘দুর্যোগপূর্ণ অবস্থা’ ঘোষণা করা হয়েছে। শহরের ভাইস মেয়র আলফি রেইনেস বলেন, উদ্ধারকর্মীদের জন্য খাবার ও পানি, সেই সঙ্গে ভারী সরঞ্জাম প্রয়োজন।

স্থানীয় ডিজেডএমএম রেডিওকে আলফি রেইনেস বলেন, ‘ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। বিদ্যুৎ নেই। আমাদের সত্যিই সহায়তা দরকার। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে পানির তীব্র সংকট রয়েছে। ভূমিকম্পে সেখানে সরবরাহ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

আরও পড়ুনফিলিপাইনে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত অন্তত ২৬, চলছে উদ্ধারকাজ৫ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৪০ ঘণ্টা পর এক ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার, নিখোঁজ আরেকজন
  • সিদ্ধিরগঞ্জে ৭ কেজি গাঁজাসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার 
  • গরুর গোবর কুড়ানো থেকে সাত তারকা হোটেলে, জয়দীপের গল্প জানেন কি
  • টর্চলাইট
  • স্বাস্থ্য খাতে আলাদা বেতনকাঠামো হোক
  • গাজীপুরে আট বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে একজন গ্রেপ্তার
  • খাগড়াছড়ির ঘটনায় জাতিসংঘকে যুক্ত করে বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি
  • ডাক্তারদের হাতের লেখা ঠিক করার নির্দেশ দিলো আদালত
  • ‘মোটা জেনারেলদের’ কড়া সমালোচনা করলেন মার্কিন প্রতিরক্ষা হেগসেথ
  • ফিলিপাইনে ৬ দশমিক ৯ তীব্রতার ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৯