লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম সরকার ও আনোয়ার হোসেনকে দল থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে বিষয়টি জানানো হয়। একই সঙ্গে কেন তাঁদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, তা জানাতে আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।

জেলা বিএনপির সদস্যসচিব সাহাবুদ্দিনের স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, ৮ আগস্ট কেরোয়া ইউনিয়ন বিএনপির প্রতিনিধি নির্বাচনের মনোনয়নপত্র কেনার সময় নজরুল ও আনোয়ার রিটার্নিং কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ বেপারীর ওপর চড়াও হন। এ সময় তাঁরা নির্বাচন পরিচালনায় জড়িতদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ ও চেয়ার ছুড়ে মারেন। এই আচরণ দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

নজরুল ইসলাম সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘বহিষ্কারের চিঠি পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন নেতাদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।’
জেলা বিএনপির সদস্যসচিব সাহাবুদ্দিন বলেন, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাঁদের সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাবের পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

কেরোয়া ইউনিয়ন বিএনপির প্রতিনিধি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মনোনয়নপত্র কেনার সময় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। স্থানীয় নেতাদের অভিযোগ, রায়পুর উপজেলা বিএনপিতে দীর্ঘদিন ধরে চলা অভ্যন্তরীণ বিরোধের জেরেই এ ঘটনা ঘটেছে।

তবে বহিষ্কৃত দুই নেতার অনুসারীদের দাবি, এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের দ্বারা প্রভাবিত। তাঁদের মতে, ঘটনা অতিরঞ্জিত করে উপস্থাপন করা হয়েছে এবং দলের ভেতরে তাঁদের অবস্থান দুর্বল করার চেষ্টা চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রীর শরীরে ভালোবাসার চিহ্ন এঁকে দেওয়ার প্রস্তাব খুবি শিক্ষকের

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) বাংলা ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. রুবেল আনসারের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।

ব্যক্তিগত প্রশ্ন, অশালীন প্রস্তাব, একান্ত সাক্ষাতের চাপ এবং যৌন সম্পর্কের ইঙ্গিত দেওয়ার অভিযোগ করেছেন ওই ডিসিপ্লিনের এক ছাত্রী।

গত বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রের সভাপতির কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ জমা দেন তিনি।

আরো পড়ুন:

উপাচার্যের মায়ের মৃত্যুর কারণে অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা

রাকসুতে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের প্যানেল ঘোষণা

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৭ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রের সভাপতি মোছা. তাসলিমা খাতুনকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে।

অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী ছাত্রী উল্লেখ করেন, দুর্ঘটনার কারণে নির্ধারিত সময়ে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে না পারায় শিক্ষক ড. রুবেল আনসারের সঙ্গে কথা বলতে যান তিনি। এ সময় ওই শিক্ষক তাকে নানা ব্যক্তিগত প্রশ্ন করেন এবং অস্বস্তিকর মন্তব্য করেন। ওই শিক্ষক বলেন ‘তোমার হাত যদি পরীক্ষার আগে ঠিক না হয়, আমি ফু দিয়ে ঠিক করে দেব।’ এছাড়া খুলনায় নতুন হওয়ায় তাকে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাবও দেন।

ভুক্তভোগীর দাবি, ওই শিক্ষক পরবর্তীতে বারবার তাকে মেসেজ দিয়ে একসঙ্গে বাইরে যাওয়ার প্রস্তাব দেন। এক পর্যায়ে নিরালা মোড়ে দেখা করার সময় ওই শিক্ষক তাকে বলেন, ‘আমি তোমাকে চাই… যেমন একজন পুরুষ একজন নারীকে চায়।’ এছাড়া তিনি প্রস্তাব দেন, একটি পরিচিত বাসায় নিয়ে যাবেন, যেখানে অন্য কেউ থাকবে না।

অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী জানান, প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ওই শিক্ষক গাড়ির ভেতর তার হাত চেপে ধরেন এবং বলেন, ‘আজ না হোক কাল তোমার সারা শরীরে আমার ভালোবাসার চিহ্ন এঁকে দেবই।’ এছাড়া তিনি ফলাফল বাড়িয়ে দেওয়ার প্রলোভনও দেন।

এ ঘটনার পর থেকে ছাত্রী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, “ওই শিক্ষক অতীতেও এমন কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। গত ৫ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তদন্ত কমিশন গঠনের ঘোষণা দিলে আমি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করার সাহস পাই।”

অভিযুক্ত শিক্ষক ড. রুবেল আনসার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি, এর সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। ওই ছাত্রী অসুস্থ থাকায় তার বাবা আমাকে একবার কল দিয়েছিলেন। সব শিক্ষার্থীই আমার কাছে সমান।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. নাজমুস সাদাত বলেন, “অভিযোগ ছাত্র বিষয়ক পরিচালকের দপ্তরের মাধ্যমে এসেছে। বিষয়টি তদন্তাধীন, তাই এর বেশি মন্তব্য করা সম্ভব নয়।”

তদন্ত কমিটির প্রধান মোছা. তাসলিমা খাতুন বলেন, “গত ৭ আগস্ট অভিযোগটি ছাত্রবিষয়ক পরিচালকের দপ্তরে দাখিল করা হয় এবং সেখান থেকে ১০ আগস্ট আমাদের যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রে আসে। অভিযোগ পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দ্রুত ৭ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, যার দায়িত্ব আমাকে দেওয়া হয়েছে।”

তিনি বলেন, “আমরা অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত উভয়ের বক্তব্য নেব। প্রমাণ ও সাক্ষ্য যাচাই করব এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী নিরপেক্ষতা ও গোপনীয়তা বজায় রেখে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দাখিল করব।”

ঢাকা/হাসিবুল/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ