স্লোগাননির্ভর রাজনীতির যুগ শেষ: তারেক রহমান
Published: 12th, August 2025 GMT
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, প্রচলিত স্লোগাননির্ভর রাজনীতির যুগ শেষ। জনগণ এখন বাস্তবায়নযোগ্য পরিকল্পনা ও পরিবর্তনের রাজনীতি চায়। এ জন্য বিএনপি দেশের প্রতিটি খাতে সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করছে এবং ক্ষমতায় গেলে তা বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করছে।
আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল আয়োজিত যুব সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এ কথা বলেন। আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এই যুব সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
তরুণদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, জনগণের মানোন্নয়নের সব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিএনপির প্রতি জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন প্রয়োজন। জনগণের শক্তি প্রতিষ্ঠা করার জন্য আগামী জাতীয় নির্বাচনে জনগণের সহযোগিতা ও সমর্থন চেয়েছেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার এবং নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে ফ্যাসিবাদের দেড় দশক পর ফ্যাসিস্ট মুক্ত বাংলাদেশে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দেশের সকল দেশের সকল নারী-পুরুষ, ছাত্র-তরুণ-যুব সমাজসহ দেশের সর্বস্তরের জনগণের কাছে আমার আহ্বান আগামী নির্বাচনে ধানের শীষে ভোট ভোট দিন।’
তারেক রহমান মনে করেন, প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও আন্তর্জাতিক মানের দক্ষতা অর্জন ছাড়া দেশের তরুণ প্রজন্মকে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। তরুণ উদ্যোক্তাদের বৈদেশিক আয় দেশে আনার জন্য পেপ্যাল, স্ট্রাইপ, ওয়াইজের মতো আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ে চালুর উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। এ জন্য উদ্যোক্তা, নীতিনির্ধারক ও সংশ্লিষ্ট পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, স্টার্টআপ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে হাইটেক পার্ক, ইনকিউবেশন সেন্টার এবং সহজ শর্তে আর্থিক সহায়তা প্রদানের পরিকল্পনা বিএনপির রয়েছে। একই সঙ্গে খেলাধুলাকে পেশা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে ক্রীড়া শিক্ষাকে মূল কারিকুলামে অন্তর্ভুক্ত করার কথা ভাবছেন তারা। বিদেশি ভাষা শিক্ষার ওপরও গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, কারিগরি দক্ষতার পাশাপাশি একাধিক বিদেশি ভাষা জানা কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াবে।
তারেক রহমান আরও বলেন, ‘দেশের বর্তমান কর্মক্ষম জনসংখ্যা ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড হিসেবে বিশাল সম্ভাবনা তৈরি করেছে। এই জনশক্তিকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর করতে পারলেই তা জাতীয় উন্নয়নের অন্যতম চালিকা শক্তি হবে। এ জন্য প্লাম্বিং, ইলেকট্রিশিয়ান, মেকানিক, ডেন্টাল হাইজিনিস্ট ও মেডিকেল টেকনিশিয়ান-এ ধরনের চাহিদাসম্পন্ন স্বল্পমেয়াদি কোর্স চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে।’ তিনি বলেন, ‘জনগণ এখন প্রচলিত রাজনীতির একটি পরিবর্তন চাইছে। জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে প্রতিশ্রুতি নয়, বরং তার বাস্তবায়নই বিএনপির লক্ষ্য।’
যুব সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানীর সভাপতিত্বে এবং যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীনের সঞ্চালনায় যুব সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত র ক রহম ন ব এনপ র জনগণ র র র জন র জন ত
এছাড়াও পড়ুন:
নার্সদের অমর্যাদাকর অবস্থানে রাখা হয়েছে: ফরহাদ মজহার
বাংলাদেশে জনগণের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিশ্চিত করাটা অত্যন্ত জরুরি হলেও এখানে পেশা হিসেবে নার্সদের অমর্যাদাসম্পন্ন একটা অবস্থানে রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার।
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘নার্সদের ডাক্তারি ব্যবস্থার অধীন একটা পেশা হিসেবে যে দেখা হয়, আমরা মনে করি এটা ভুল। এখান থেকে মুক্ত হতে হবে। নার্স সেবাটা স্বাস্থ্যসেবার একটা মৌলিক দিক। ফলে তাঁদের স্বাধীনভাবে এই পেশাকে চর্চা করবার সুযোগ–সুবিধা দিতে হবে।’
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ফরহাদ মজহার। সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএনএ) ও স্বাস্থ্য আন্দোলন। স্বাস্থ্য আন্দোলনের পক্ষে বক্তব্য দেন ফরহাদ মজহার।
সরকার স্বাস্থ্যকে এখন আর জনগণের অধিকার হিসেবে স্বীকার করছে না বলে অভিযোগ করেন ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, ‘এখন স্বাস্থ্যকে অধিকার নয়, বাজারজাত পণ্য বানানো হয়েছে। টাকা থাকলে চিকিৎসা পাবেন, টাকা না থাকলে নয়।’
নার্সদের স্বাধীন পেশাগত চর্চা, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ, ন্যায্য বেতন ও মর্যাদা নিশ্চিতের জন্য জাতীয় নার্সিং কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে ফরহাদ মজহার বলেন, নার্সদেরকে ডাক্তারদের হুকুমমতো চলতে হবে—এই ধারণা ভাঙতে হবে। স্বাস্থ্য মানে শুধু প্রেসক্রিপশন নয়, প্রতিরোধও একটি বড় দিক। নার্সদের মর্যাদা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত হলে জনগণ প্রকৃত স্বাস্থ্যসেবা পাবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরহাদ মজহার বলেন, নার্সিং স্বাস্থ্যসেবার এক মৌলিক দিক। কিন্তু আমাদের সমাজে চিকিৎসাকে ডাক্তারিকরণ বা মেডিক্যালাইজেশন করা হয়েছে। অনেক রোগে ডাক্তার কিংবা ওষুধের প্রয়োজনই হয় না। এ জায়গায় নার্সরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএনএ) সভাপতি মো. শরিফুল ইসলাম। এক মাসের মধ্যে নার্সিং কমিশন গঠনের এক দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনের সঞ্চালনা করেন বিএনএর সহসভাপতি মাহমুদ হোসেন তমাল। এতে উপস্থিত ছিলেন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারপারসন জরিনা খাতুন, সহসভাপতি মনির হোসেন ভূঁইয়া এবং সংগঠনের অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতা-কর্মী।