ডলার কাছে নিতেই আর কিছু মনে নেই, ব্যবসায়ীর ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা লুট
Published: 12th, August 2025 GMT
চট্টগ্রামের রাউজানের নোয়াপাড়া পথেরহাটের ভারতেশ্বরী প্লাজা মার্কেটের আবুধাবি স্টোরের দেশের বাইরে থেকে আমদানি করা নানা পণ্য বিক্রি হয়। দোকানের মালিক ওয়াহিদুল আলম নিজেই ব্যবসা দেখাশোনা করেন। আজ মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার দিকে দুই বিদেশি ও বাংলাদেশি ক্রেতা আসেন দোকানে। ৫০ ডলারের একটি নোট দিয়ে বিনিময়ে বাংলাদেশি মুদ্রা চান তাঁরা। ওয়াহিদুল নোট নিয়ে ভালো করে দেখার জন্য চোখের কাছে নেন। এরপর তাঁর আর কিছু মনে নেই। পুরোপুরি যখন চেতনা ফিরে পেলেন, তখন দেখলেন তাঁর দোকানের ক্যাশ বাক্স থেকে লুট হয়েছে ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা।
দোকানের পাশের একটি সিসিটিভি ক্যামেরায় ধারণ করা ফুটেজে দেখা যায়, টাকা নিয়ে খুব দ্রুত চলে যাচ্ছেন দেশি ও বিদেশি দুই প্রতারক। তবে আবুধাবি স্টোর নামের দোকানটিতে সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকায় ভেতরে কী ঘটেছে তা দেখা যায়নি।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর ধারণা, ডলারের মধ্যে ‘শয়তানের নিশ্বাস’ নামের রাসায়নিক ছিল। তার প্রভাবে তিনি সবকিছু ভুলে গেছেন। প্রতারকেরা ওই রাসায়নিক শুকিয়ে তাঁর টাকা লুট করে নিয়ে গেছে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এর আগেও ‘শয়তানের নিশ্বাস’ প্রয়োগ করে প্রতারণার সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সেসব প্রতিবেদন ঘেঁটে জানা যাচ্ছে মূলত স্কোপোলামিন নামের একটি রাসায়নিক প্রয়োগ করে ছিনতাইসহ নানা অপরাধ করে আসছে প্রতারকেরা। এই রাসায়নিকের প্রভাবে ক্ষণিকের জন্য মানুষের স্মৃতি, বিচারশক্তি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা সম্পূর্ণভাবে লোপ পায়। ওয়াহিদুল আলমের ক্ষেত্রেও তা ঘটেছিল।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ওয়াহিদুল আলম বলেন, ৫০ ডলারের একটি নোট ভাঙানোর জন্য তাঁর দোকানে আসেন একজন বিদেশি ক্রেতা। তাঁর সঙ্গে একজন বাংলাদেশিও ছিলেন। নোটটি তিনি তাঁদের কাছ থেকে নিয়ে ভালো করে দেখতে গিয়ে চেতনা হারান। প্রতারকেরা তাঁর ক্যাশ বাক্স থেকে ১ লাখ ৪২ হাজার টাক নিয়ে যায়।
জানতে চাইলে এক কিলোমিটার দূরে থাকা নোয়াপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ওই ধরনের ঘটনার কোনো অভিযোগ তাঁদের কেউ জানায়নি। অভিযোগ দিলে তাঁরা ঘটনাটি খতিয়ে দেখে প্রতারক চক্রকে খুঁজে বের করার জন্য কাজ করবেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ফিলিপাইনে ৬ দশমিক ৯ তীব্রতার ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৯
ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলে ৬ দশমিক ৯ তীব্রতার শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত হওয়ার সংখ্যা বেড়ে ৬৯ জন হয়েছে। দেশটির দুর্যোগ-সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা আজ বুধবার এ খবর জানান। বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা ও পানি-বিদ্যুতের সংযোগ আবার চালু করার চেষ্টা করছে ফিলিপাইন সরকার।
দেশটির সিভিল ডিফেন্স কর্মকর্তা রাফি আলেজান্দ্রো সাংবাদিকদের বলেন, স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টার আগে সেবু প্রদেশের উত্তরে বোগো শহরের কাছে ভূমিকম্পটির উৎপত্তি হয়। স্থানীয় হাসপাতালগুলো আহত মানুষের ভিড়ে রীতিমতো উপচে পড়ছে।
আঞ্চলিক সিভিল ডিফেন্স দপ্তরের তথ্য কর্মকর্তা জেন আবাপো বলেন, সেবুর প্রাদেশিক দুর্যোগ দপ্তরের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পে নিহত হওয়ার সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৬৯ জন। অন্য একজন কর্মকর্তা জানান, আহত হয়েছেন ১৫০ জনের বেশি।
দেশটির প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের দ্রুত সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি জানান, মন্ত্রিপরিষদ সচিবেরা ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। প্রিয়জন হারানো ব্যক্তিদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি।
সেবু ফিলিপাইনের জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্যগুলোর একটি। সেখানে প্রায় ৩৪ লাখ মানুষের বসবাস। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ম্যাকতান-সেবু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্যক্রম চালু রয়েছে। এটা ফিলিপাইনের দ্বিতীয় ব্যস্ততম বিমানবন্দর।
ভূমিকম্পে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সান রেমিগিও শহরটিও। উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তার জন্য এ শহরে ‘দুর্যোগপূর্ণ অবস্থা’ ঘোষণা করা হয়েছে। শহরের ভাইস মেয়র আলফি রেইনেস বলেন, উদ্ধারকর্মীদের জন্য খাবার ও পানি, সেই সঙ্গে ভারী সরঞ্জাম প্রয়োজন।
স্থানীয় ডিজেডএমএম রেডিওকে আলফি রেইনেস বলেন, ‘ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। বিদ্যুৎ নেই। আমাদের সত্যিই সহায়তা দরকার। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে পানির তীব্র সংকট রয়েছে। ভূমিকম্পে সেখানে সরবরাহ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
আরও পড়ুনফিলিপাইনে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত অন্তত ২৬, চলছে উদ্ধারকাজ৫ ঘণ্টা আগে