৯৮ বছরে থেমে গেল অমরেশ রায়ের সুরেলা জীবন
Published: 12th, August 2025 GMT
বাংলাদেশের উচ্চাঙ্গসংগীত জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, একুশে পদকপ্রাপ্ত পণ্ডিত অমরেশ রায় চৌধুরী আর নেই। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় বার্ধক্যজনিত রোগে রাজশাহী নগরের খানসামার চক মহল্লার নিজ বাসভবনে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন এই মহান সংগীতসাধক। তাঁর বয়স হয়েছিল প্রায় ৯৮ বছর।
পণ্ডিত অমরেশ রায় চৌধুরী দীর্ঘদিন বাংলাদেশের বেতার ও টেলিভিশনে নিয়মিত সংগীত পরিবেশন ও শিক্ষাদানে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। রাজশাহীর মোহিনী নিকেতনে প্রতিষ্ঠিত তাঁর নিজস্ব সংগীতাশ্রম ছিল তরুণ শিল্পীদের এক অধ্যাত্মসন্ধান কেন্দ্র। সম্প্রতি সড়ক সম্প্রসারণের কারণে তাঁর পুরোনো বাসভবন ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় খানসামার চক মহল্লার ফ্ল্যাটে থাকতেন তিনি।
সংগীত সাধনায় পথচলা
অমরেশ রায় চৌধুরীর জন্ম ও শৈশব কাটে ফরিদপুরে। ছোটবেলায় পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াকালীন তাঁর মাতা রাজলক্ষ্মী রায়ের উৎসাহে তিনি উপমহাদেশের বিশিষ্ট উচ্চাঙ্গসংগীতশিল্পী ও সুরকার সুবীর লাল চক্রবর্তীর কাছে হাতেখড়ি লাভ করেন। কিন্তু ছায়া পতনের মতো আকস্মিক মৃত্যুর কারণে তিনি সিরাজগঞ্জের সংগীতজ্ঞ হরিহর শুক্লার কাছে কিছুদিন তালিম নেন। পরে ১৪ বছর ধরে ফরিদপুরের কোটালীপাড়ার সংগীতাচার্য তারাপদ চক্রবর্তীর তত্ত্বাবধানে ধ্রুপদ, খেয়াল ও ঠুমরিতে পারদর্শিতা অর্জন করেন। শাস্ত্রীয় সংগীতের এই দীর্ঘ অনুশীলন ছিল তাঁর জীবনের একমাত্র সাধনা। তিনি সংগীতাচার্য তারাপদ চক্রবর্তীর মতো শ্রেষ্ঠ ওস্তাদ হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। তার পরবর্তী সময়ের সংগীত সাধনায় ময়মনসিংহের বিশিষ্ট শিল্পী ও সুরকার নিখিল চন্দ্র সেনের কাছ থেকে আধুনিক, অতুল প্রসাদী, রাগ প্রধান, নজরুল ও শ্যামা সংগীতের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অমর শ র য় চ ধ র
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের বাসভবনের ফটকে তালা দিলেন ছাত্রদলের সাবেক নেতা
হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের শিক্ষক নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করার অভিযোগ তুলে উপাচার্যের বাসভবনের ফটকে তালা দিয়েছেন ছাত্রদলের সাবেক এক নেতা। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আধা ঘণ্টা পর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল দলের সদস্যরা গেটের তালা খুলে দেন।
বাসভবনে তালা দিয়েছেন বুলবুল রহমান। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও উর্দু বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
বুলবুল রহমানের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে ২০২৫ সালের নতুন সার্কুলারে উর্দু বিভাগে ৩ জন নিয়োগের কথা উল্লেখ করে ৬ জনকে নিয়োগ দেওয়ার কার্যক্রম চলমান রেখেছে। সোমবার সিন্ডিকেট সভায় সেই নতুন নিয়োগকে অনুমোদন দেওয়া হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি উপাচার্য ভবনের ফটকে তালা দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
ছাত্রদল নেতা বুলবুল রহমান বলেন, ‘উর্দু বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিতে তিনজনের কথা বলা হলেও লিখিত পরীক্ষায় ছয়জনকে উত্তীর্ণ করে সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা হয়েছে। ২০২৩ সালের বিজ্ঞপ্তিটিই ২০২৫ সালে পুনরায় প্রকাশ করা হয়েছে এবং বিভাগে কোনো পদ শূন্য নেই। এ বিষয়ে উপাচার্যের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলাম। তিনি বিষয়টিকে গোপনীয় বলে এড়িয়ে যান। এর প্রতিবাদেই উপাচার্যের বাসভবনে তালা দিয়েছি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহ–উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, ২০২৩ এবং ২০২৫ সালের পৃথক দুটি বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে ছয়জনকে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আদালতের নির্দেশনা অক্ষরে অক্ষরে মেনেই নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। উপাচার্য বাসভবনে সোমবার সিন্ডিকেট সভা বসবে। সেখানে বেশ কিছু বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের অনুমোদন দেওয়া হবে। সেই সভাকে বাধা দেওয়ার জন্য তিনি (বুলবুল রহমান) উপাচার্যের বাসভবনে তালা মেরেছেন। একজন সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবে তাঁর এ ধরনের কাজ করা মোটেও সমীচীন হয়নি।’
উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে সিন্ডিকেট সভা শুরু হয়। কয়েকটি বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ চূড়ান্তভাবে অনুমোদন দেওয়ার কথা রয়েছে।