কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদীর মোহনায় মাছ ধরতে যাওয়া এক নৌকার পাঁচ জেলেকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন রাতে প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, স্থানীয় কোস্টগার্ড ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

ধরে নিয়ে যাওয়া জেলেরা হলেন টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়ার মোহাম্মদ ইলিয়াস (৪১), তাঁর ছেলে মোহাম্মদ নুর হোসেন (১৮) ও আক্কাল আলী (২০), কালু মিয়ার ছেলে সাবের হোসেন (২২) এবং মোহাম্মদ নুর হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম (২৫)।

সাবরাং ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আবদুস সালাম জানান, সকালে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে তাঁরা মাছ ধরতে যান। এ সময় আরাকান আর্মির সদস্যরা স্পিডবোটে এসে তাঁদের ধাওয়া করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নিয়ে যান। পাশের নৌকায় থাকা অন্য জেলেরা ফিরে এসে মালিককে বিষয়টি জানান।

শাহপরীর দ্বীপ ক্ষুদ্র মৎস্য সমিতির সভাপতি আবদুল গনি বলেন, একই পরিবারের তিনজনসহ পাঁচ জেলে ইলিয়াসের মালিকানাধীন নৌকায় মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। তাঁদের মিয়ানমারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জেলেদের স্বজনেরা কোস্টগার্ড ও বিজিবিকে খবর দিয়েছেন।

যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোস্টগার্ড টেকনাফ স্টেশনের কমান্ডারের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে.

কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি, তবে পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি।’

উল্লেখ্য, এর আগে ৫ আগস্ট সকালে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নাজিরপাড়া-সংলগ্ন নাফ নদীর জলসীমা থেকে দুই জেলেকে একইভাবে ধরে নিয়ে যায় আরাকান আর্মি। তাঁদের এখনো ফেরত দেওয়া হয়নি।

এ ছাড়া গত বছরের ডিসেম্বর থেকে এ পর্যন্ত নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে আরাকান আর্মি ২১১ বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে। এর মধ্যে বিজিবির প্রচেষ্টায় কয়েক দফায় ১৮৯ জন জেলে এবং ২৭টি নৌকা ফেরত আনা হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আর ক ন আর ম ম হ ম মদ

এছাড়াও পড়ুন:

ফ্লোটিলা বহরে ভেসে চলা একমাত্র জাহাজ ম্যারিনেট কোথায়

ফিলিস্তিনের গাজা অভিমুখে যাত্রা করা ত্রাণবাহী নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’-এর একটি মাত্র নৌযান এখনো আটক করতে পারেনি ইসরায়েলি বাহিনী। এই নৌযানটি হলো দ্য ম্যারিনেট।

পোল্যান্ডের পতাকাবাহী এই নৌযানে ছয়জন আরোহী রয়েছেন ।

ফ্লোটিলার লাইভ ট্র্যাকার অনুযায়ী, ম্যারিনেট আন্তর্জাতিক জলসীমায় ভেসে চলেছে। এর গতি ঘণ্টায় প্রায় ২.১৬ নট (ঘণ্টায় প্রায় ৪ কিলোমিটার) , গাজার আঞ্চলিক জলসীমা থেকে ম্যারিনেটের দূরত্ব  প্রায় ১০০ কিলোমিটার।

বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে জাহাজটির ক্যাপ্টেন বলেন, ম্যারিনেটের ইঞ্জিনে সমস্যা হচ্ছিল। এটি  এখন সারানো  হয়েছে।

ফ্লোটিলা আয়োজকেরা বলছেন, ম্যারিনেট নৌযান এখনো স্টারলিঙ্কের মাধ্যমে সংযুক্ত। এটি যোগাযোগের আওতার মধ্যেই রয়েছে। লাইভস্ট্রিমও সক্রিয় আছে।  

ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা জানিয়েছে, অন্য জাহাজগুলো আটক করলেও ম্যারিনেট এখনো ভেসে চলছে।

ম্যারিনেট ফিরে যাবে না বলেও ওই পোস্টে জানানো হয়েছে।  পোস্টে বলা হয়েছে, ‘ম্যারিনেট শুধু একটি জাহাজ নয়। ম্যারিনেট হলো ভয়, অবরোধ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে দৃঢ়তা।’

ফ্লোটিলা আয়োজকরা আরও লিখেছেন, ‘গাজা একা নয়।’ ‘ফিলিস্তিনকে কেউ ভুলে যায়নি। আমরা কোথাও যাচ্ছি না।’

ফ্লোটিলা বহরের প্রায় সব নৌযানে থাকা অধিকারকর্মীদের আটক করেছে ইসরায়েল। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সুইডিশ অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। ইসরায়েলের এমন পদক্ষেপকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছে অনেক দেশ। বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভও হয়েছে।

আরও পড়ুনগাজা অভিমুখী নৌবহরে ইসরায়েলি সেনাদের আক্রমণ, ধরে নেওয়া হলো অধিকারকর্মীদের৬ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ