মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার ‘সিন্ডিকেটের’ (চক্র) সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ না পাওয়ার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অভিবাসন নিয়ে কাজ করা ২৩টি সংগঠনের মোর্চা বাংলাদেশ সিভিল সোসাইটি ফর মাইগ্রেন্টস (বিসিএসএম)। তারা বলেছে, অতীতে সিন্ডিকেটসহ যেসব কারণে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হয়েছিল সেগুলোর যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে। উন্মুক্ত ও স্বচ্ছভাবে কর্মী পাঠানোর দাবি জানিয়েছে বিসিএসএম।

মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এসব কথা বলেছে বিসিএসএম। এতে বলা হয়, অতীতে সিন্ডিকেটের সঙ্গে যারা জড়িত ছিল, তাদের বিচার করতে হবে এবং কোনোভাবেই যেন তারা নতুন করে কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত হতে না পারে।

বিবৃতিতে বলা হয়, মালয়েশিয়ায় সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত সাবেক সংসদ সদস্য লোটাস কামালের (সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল) পরিবারসহ সাবেক তিন সংসদ সদস্যকে অভিযোগ থেকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম মালয়েশিয়াকিনি সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানায়, মালয়েশিয়াগামী বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকদের শোষণে জড়িত প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত স্থগিত করার মালয়েশিয়ার অনুরোধে বাংলাদেশ রাজি হয়েছে।

এসব খবরে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতিতে বিসিএসএম বলেছে, মালয়েশিয়ার সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দায়মুক্তি না দেওয়া এবং অভিযোগের পুনঃ তদন্ত এবং বিচারিক তদন্তের দাবি জানাচ্ছে তারা। তা ছাড়া এই সিন্ডিকেটের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের যে অভিযোগ আছে, সেই অগ্রগতি সম্পর্কেও সাধারণ নাগরিকদের অবহিত করার জোর দাবি জানাচ্ছে বিসিএসএম। মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার উন্মুক্তকরণের প্রেক্ষাপটে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্ত স্থগিত করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না এবং বিসিএসএম এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
সরকারের অর্থনীতিবিষয়ক শ্বেতপত্রে, গণমাধ্যমে গত এক বছরে প্রকাশিত বিভিন্ন খবর এবং দুদকের অভিযোগ থেকে জানা যাচ্ছে, মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর নামে ২০২২, ২০২৩ ও ২০২৪ সালে একেকজন কর্মীর কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত খরচের চেয়ে পাঁচ থেকে ছয় গুণ বেশি টাকা নেওয়া হয়েছে এবং কয়েক হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে, যার সঙ্গে মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশ দুই দেশেরই সিন্ডিকেট জড়িত। এর আগে ২০১৭ ও ২০১৮ সালে দশজনের সিন্ডিকেট হয়েছিল এবং মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারকে ঘিরে নানা অনিয়মের খবর নতুন নয়। কিন্তু কখনোই তাদের বিচার হয়নি।

বিসিএসএমের চেয়ার তাসনিম সিদ্দিকী ও কো–চেয়ার সৈয়দ সাইফুল হকের স্বাক্ষরে পাঠানো বিবৃতিতে আরও বলা হয়, তারা আশঙ্কা করছেন, এখন এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা যদি জবাবদিহি ও দুর্নীতির অভিযোগ থেকে রেহাই পায়, তবে একই ধরনের সিন্ডিকেট আবারও গড়ে উঠবে। বিসিএসএম আহ্বান জানাচ্ছে, ১১ থেকে ১৩ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার মালয়েশিয়া সফরে শ্রমবাজার উন্মোচন করতে গিয়ে সিন্ডিকেট নির্মূল করার বিষয়টি যেন গুরুত্ব না হারায়।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অভিবাসন নিয়ে কাজ করা ২৩টি নাগরিক সংগঠনের জোট বিসিএসএম অতীতেও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল। এর আগে ২০২২ সালের ২৭ এপ্রিল আরেক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছিল, মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের কর্মী নেওয়ার প্রক্রিয়া এলেই স্বচ্ছতার বদলে নানা অনিয়মের ঘটনা ঘটে। অতীতে সিন্ডিকেটসহ যেসব কারণে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হয়েছিল আবার যেন ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।

২৩ সংগঠন হচ্ছে রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (রামরু), ওয়্যারবী ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, ব্র্যাক, অভিবাসী কর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রাম (ওকাপ), বাস্তব, আইন ও সালিশ কেন্দ্র, বাসুগ-ডায়াসপোরা অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, রাইট যশোর, ইন্টারন্যাশনাল নেটওয়ার্ক অব অলটারনেটিভ ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন (ইনাফি), মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশি অভিবাসী মহিলা শ্রমিক অ্যাসোসিয়েশন (বমসা), ইমা রিসার্চ ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড উড ওয়ার্কার্স ফেডারেশন (বিসিডব্লিউডব্লিউএফ), ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশন (ইপসা), বোয়াফ, সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট কমিউনিকেশন (ডেভকম) লিমিটেড, ফিল্মস ফর পিস ফাউন্ডেশন, চেঞ্জ মেকারস, অ্যাসোসিয়েশন ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট (এসিডি), সেন্টার ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিস্ট্যান্স (সিসিডিএ), কর্মজীবী নারী, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস), বাংলাদেশ নারী শ্রমিক কেন্দ্র (বিএনএসকে)।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ড ভ লপম ন ট ব স এসএম প রক শ স গঠন তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

লোপেজ বললেন, ‘বিচ্ছেদ জীবনের সেরা ঘটনা’

তাঁদের জীবনের গল্প সিনেমার চিত্রনাট্যের মতোই। তুমুল প্রেম, বাগ্‌দানের পর সবাই যখন বিয়ের অপেক্ষায়; তখন হঠাৎই আসে বিচ্ছেদের ঘোষণা। এরপর দীর্ঘ সময় গড়িয়েছে, দুজনই ভিন্ন সম্পর্কে থিতু হয়েছেন। তবে নিয়তি বোধ হয় চেয়েছিল তাঁদের পুনর্মিলন, শেষ পর্যন্ত সেটাও হয়। কিন্তু দুই বছর গড়াতেই সম্পর্ক ভাঙে, সম্পর্কের দ্বিতীয় সুযোগও কাজে লাগাতে পারেননি হলিউডের তারকা দম্পতি বেন অ্যাফ্লেক ও জেনিফার লোপেজ। বিচ্ছেদের পর বছর পার হয়েছে কিন্তু এ বিষয়ে দুই তারকার কেউই তেমন কথা বলেননি। এবার সিবিএস নিউজ সানডে মর্নিং অনুষ্ঠানে এসে বিচ্ছেদ নিয়ে প্রথমবার সবিস্তার কথা বললেন লোপেজ।

একনজরে বেন-লোপেজের সম্পর্ক
প্রথম পরিচয়: ১৯৯৮ সালে, ‘আর্মাগেডন’ ছবির প্রিমিয়ারে।
প্রেম: ২০০২ সালে, ‘গিগলি’ সিনেমার সেটে।
প্রথম বাগ্‌দান: ২০০২ সালে, ২০০৩ সালে বিয়ে করার ঘোষণা।
প্রথম বিচ্ছেদ: ২০০৪ সালে বাগ্‌দান ভেঙে দিয়ে বিচ্ছেদের ঘোষণা।
পুনর্মিলন: ২০২১ সালে আবার প্রেম শুরু করেন বেন ও লোপেজ।
দ্বিতীয় বাগ্‌দান: ২০২২ সালে এপ্রিলে দ্বিতীয়বার বাগ্‌দান সারেন।
অবশেষে বিয়ে: ২০২২ সালের ১৬ জুলাই বিয়ে করেন এই তারকা জুটি।
বিচ্ছেদের আবেদন: ২০২৪ সালের ২০ আগস্ট বিচ্ছেদের আবেদন করেন লোপেজ।

২৮ সেপ্টেম্বর প্রচারিত অনুষ্ঠানে লোপেজ বলেন, বেনের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর পর তাঁর উপলব্ধি ছিল, এটা তাঁর জীবনের ঘটে যাওয়া সেরা ঘটনা। বিচ্ছেদকে ‘সেরা ঘটনা’ বলার পেছনের কারণ ব্যাখ্যা করে এই গায়িকা-অভিনেত্রী বলেন, ‘এটা আমাকে বদলে দিয়েছে। এটা আমাকে এমনভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করেছে, যেটা আমার জন্য দরকার ছিল।’

অ্যাফ্লেকের প্রতি কৃতজ্ঞতা
২০২৪ সালের আগস্টে লোপেজ বিচ্ছেদের আবেদন করেন; চূড়ান্ত হয় ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে। ডিভোর্সের সময়ে লোপেজ শুটিং করছিলেন নতুন ছবি ‘কিস অব দ্য স্পাইডার ওমেন’-এর। এ সিনেমায় তাঁর সঙ্গে আরও অভিনয় করেছেন দিয়েগো লুনা ও টোনাটিউ। এটি ১৯৯৩ সালের ব্রডওয়ে মিউজিক্যাল থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মিত হয়েছে সিনেমাটি, যা মানুয়েল পুইগের ১৯৭৬ সালের উপন্যাসের ওপর ভিত্তি করে তৈরি। এই গল্প আগেও ১৯৮৫ সালে সিনেমার পর্দায় এসেছে, যেখানে অভিনয় করেছিলেন উইলিয়াম হার্ট, রাউল জুলিয়া ও সোনিয়া ব্রাগা। নতুন সংস্করণে জেনিফার লোপেজ প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন, যা তাঁর প্রথম মিউজিক্যাল চলচ্চিত্রও বটে।

বেন অ্যাফ্লেক ও জেনিফার লোপেজ। রয়টার্স

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শহর ও গ্রামে সাবানের চাহিদার ভিন্নতা
  • তিন বছর ধরে অবৈধভাবে বগুড়ায় কঙ্গোর নাগরিক, জিম্মি-প্রতারণার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
  • লোপেজ বললেন, ‘বিচ্ছেদ জীবনের সেরা ঘটনা’
  • ‘বিশেষ বিবেচনায়’ হলে থাকেন শিবির সভাপতি, হয়েছেন ভিপি প্রার্থী
  • শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগে ২৫ শিক্ষার্থীর সাজা