মুরাদনগরের একটি মামলার ঘটনায় কুমিল্লার পুলিশ সুপারকে (এসপি) হাইকোর্ট বলেছেন, সেনসেটিভ ম্যাটার (স্পর্শকাতর বিষয়)। অভিযোগপত্র হয়নি। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে তদন্তের সময়সীমা উল্লেখ আছে। দ্রুত যেন হয় মনিটরিং (তদারকি) করবেন। কমপ্লায়েন্স (অগ্রগতি প্রতিবেদন) দেবেন।

মুরাদনগরের ঘটনায় ভুক্তভোগী নারীর নিরাপত্তা–সুরক্ষা নিশ্চিতে পদক্ষেপ এবং মামলার তদন্তের অগ্রগতিবিষয়ক শুনানিতে মঙ্গলবার আদালত এ কথা বলেন। শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আগামী ২২ অক্টোবর পরবর্তী কমপ্লায়েন্স দিতে বলেছেন।

ওই ঘটনা নিয়ে ‘দরজা ভেঙে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ, মামলা’ শিরোনামে গত ২৯ জুন প্রথম আলোতে প্রতিবেদন ছাপা হয়। এটিসহ এ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মীর এ কে এম নূরুন্নবী রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ২৯ জুন হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন।

আদেশে ভুক্তভোগী নারীর নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং সব ধরনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইন থেকে ভুক্তভোগীর ভিডিও ও ছবি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরাতে নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে কোনো ধরনের ব্যর্থতা ছাড়াই বিবাদীদের ১৪ জুলাই আদালতে প্রতিবেদন (হলফনামা আকারে কমপ্লায়েন্স) দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। ধার্য তারিখে প্রতিবেদন জমা পড়েনি। এর ধারাবাহিকতায় গত ২২ জুলাই আদালত কমপ্লায়েন্স বিষয়ে অবস্থান জানাতে কুমিল্লার পুলিশ সুপারকে ১২ আগস্ট বেলা ১১টায় আদালতে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেন।

মঙ্গলবার সকালে আদালতে হাজির হন কুমিল্লার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খান। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান শুনানিতে পুলিশ সুপারের নেওয়া পদক্ষেপ ও কার্যক্রমসংক্রান্ত তথ্যাদি–সংবলিত প্রতিবেদন তুলে ধরেন। শফিকুর রহমানের সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির। রিটের পক্ষে আইনজীবী মীর এ কে এম নূরুন্নবী নিজেই শুনানিতে অংশ নেন। শুনানি নিয়ে আদালত কুমিল্লার পুলিশ সুপারকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন। পরবর্তী কমপ্লায়েন্স দাখিলের জন্য আগামী ২২ অক্টোবর তারিখ ধার্য করেন।

ডিএনএ পরীক্ষা, তদন্তসহ মামলা–সম্পর্কিত পরবর্তী অগ্রগতির তথ্যাদি দিতে বলা হয়েছে বলে জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এখনো অভিযোগপত্র হয়নি। যত দ্রুত সম্ভব কাজগুলো শেষ করতে বলেছেন আদালত। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের নির্দিষ্ট সময়সীমা যেন কোনোভাবেই অতিক্রম না করে। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে কাজগুলো করে আগামী ২২ অক্টোবর অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

পুলিশ সুপারের পক্ষে মঙ্গলবার আদালতে তুলে ধরা প্রতিবেদনের বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, মামলার পর ভুক্তভোগী নারীর নিরাপত্তার জন্য সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) বলা হয়। বিষয়টি ওসি দেখভাল করছেন। ভুক্তভোগীর জন্য সার্বক্ষণিক যেন নিরাপত্তা থাকে এবং সময়ে সময়ে এসপি ওসিকে এবং ওসি এসপিকে ফলোআপ ও হালনাগাদ তথ্য জানিয়েছে।
গত ২৯ জুন প্রথম আলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, কুমিল্লার মুরাদনগরের একটি গ্রামে বসতঘরের দরজা ভেঙে এক নারীকে (২৫) ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মুরাদনগর থানায় মামলা করেছেন ওই নারী।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কমপ ল য় ন স ম র দনগর ম হ ম মদ তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

পণ্ডিত অমরেশ রায় চৌধুরী আর নেই

উপমহাদেশে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব পণ্ডিত অমরেশ রায় চৌধুরী আর নেই। 

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টায় রাজশাহী মহানগরীর রানীবাজার এলাকার নিজ বাসভবন ‘মোহিনী নিকেতন’-এ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। মৃত্যুকালে তিনি দুই ছেলে এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

অমরেশ রায় চৌধুরী বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারের শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী ছিলেন। মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় রাজশাহীর পঞ্চবটি শ্মশানে তাকে দাহ করা হবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।

১৯২৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ফরিদপুর জেলার চৌদ্দরশি গ্রামে সম্ভ্রান্ত জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন অমরেশ রায় চৌধুরী। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াকালীন তার মা রাজলক্ষ্মী রায় চৌধুরীর আগ্রহে উপমহাদেশের প্রখ্যাত উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী ও সুরকার ফরিদপুরের সুধীর লাল চক্রবর্তীর কাছে তার প্রথম হাতেখড়ি হয়। গুরু সুধীর লালের মৃত্যুর পর তিনি সিরাজগঞ্জের উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতবিদ হরিহর শুক্লার কাছে কয়েক বছর তালিম নেন।

পরবর্তীতে ফরিদপুরের কোটালীপাড়ার সঙ্গীতাচার্য তারাপদ চক্রবর্তীর কাছে ধ্রুপদ, খেয়াল ও ঠুমরিতে দীর্ঘদিন প্রশিক্ষণ নেন। নেত্রকোনার বিশিষ্ট শিল্পী ও সুরকার নিখিলচন্দ্র সেনের কাছে আধুনিক, রাগপ্রধান, অতুলপ্রসাদী, নজরুল সঙ্গীত ও শ্যামা সঙ্গীত শেখেন। পরবর্তীতে সঙ্গীতাচার্য তারাপদ চক্রবর্তীর ছেলে প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী মানস চক্রবর্তীর কাছেও উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে তালিম নেন অমরেশ রায় চৌধুরী।

১৯৪৫ সালে বাইশরশি শিবসুন্দরী একাডেমি থেকে ম্যাট্রিক পাসের পর উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি নিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গীত চর্চা চালিয়ে যান অমরেশ রায় চৌধুরী। ছোটবেলা থেকেই রাগসঙ্গীতের প্রতি গভীর অনুরাগ ছিল তার।

১৯৬১ সাল থেকে রাজশাহী মহানগরীর রানীবাজার এলাকায় ‘মোহিনী নিকেতন’-এ বাস করতেন অমরেশ রায় চৌধুরী। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে অবদানের জন্য তিনি ২০১৪ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পদক এবং ২০১৬ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন।

ঢাকা/কেয়া/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দেশে কিছু ভুয়া সমন্বয়ক সৃষ্টি হয়েছে: দুদক চেয়ারম্যান
  • পণ্ডিত অমরেশ রায় চৌধুরী আর নেই
  • নটর ডেম কলেজে ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, মৌখিক বুধবার, সঙ্গে যা আনতে হবে
  • এলডিসি থেকে উত্তরণ পেছানো সম্ভব, বলছেন বিশেষজ্ঞরা
  • মুরাদনগরে দুই সন্তানসহ নারী হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার আতঙ্ক, হয়রানি বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন
  • চীনকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চার গুণ সয়াবিন কেনার আহ্বান ট্রাম্পের
  • একাদশে ভর্তিতে প্রথম ধাপে আবেদনের সময় বাড়ল
  • ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা দিয়ে সাড়ে ৪ ঘণ্টা পর বরিশালে মহাসড়ক ছাড়লেন আন্দোলনকারীরা
  • চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনারে তেজস্ক্রিয়তা শনাক্ত