অস্ট্রিয়ায় উচ্চগতির একটি ট্রেন যাত্রাবিরতিতে স্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিল, এক যাত্রী ভাবলেন এই ফাঁকে স্টেশনে নেমে একটু ধূমপান করা যাক। যেমন ভাবনা তেমন কাজ—ওই যাত্রী স্টেশনে দাঁড়িয়ে সিগারেট ফুঁকছিলেন। এদিকে যাত্রাবিরতি শেষে নির্ধারিত সময়ে চলতে শুরু করেছে ট্রেন।

স্টেশনে নেমে যাওয়া ওই যাত্রী যতক্ষণে ট্রেন ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি টের পান, ততক্ষণে অনেকটা দেরি হয়ে গেছে। ট্রেনটি স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম প্রায় পেরিয়ে যাচ্ছিল। ওই ব্যক্তি ট্রেনের পেছনে ছুটতে শুরু করেন, লাফিয়ে উঠে পড়েন দুই বগির মাঝখানের ফাঁকা জায়গায়!

ঘটনাটি ঘটেছে রাজধানী ভিয়েনা থেকে ৬৪ কিলোমিটার দূরে সেন্ট পোল্টেন স্টেশনে। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, এ কাণ্ড ঘটিয়েছেন আলজেরীয় এক তরুণ, বয়স ২৪ বছর। তিনি যে ট্রেনটিতে লাফিয়ে ওঠেন, সেটি ইউরোপে চলাচল করা উচ্চগতির ‘রেলজেট’ ট্রেন। এই ট্রেন সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ২৩০ কিলোমিটার গতিতে ছোটে। ট্রেনটি সুইজারল্যান্ডের জুরিখ থেকে ভিয়েনা যাচ্ছিল।

স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার সময় ওই ব্যক্তি যখন ট্রেনে লাফিয়ে ওঠেন, তখন সেটি কত কিলোমিটার গতিতে চলছিল, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

আলজেরীয় ওই তরুণ লাফিয়ে দুই বগির মাঝের জায়গায় উঠেই অন্য যাত্রীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হাত দিয়ে জোরে জোরে ট্রেনের জানালায় বাড়ি দিতে শুরু করেন। পরে জরুরি ব্রেক চেপে ট্রেন থামিয়ে ওই ব্যক্তিকে সেখান থেকে বের করে ট্রেনের ভেতরে নেওয়া হয়। অস্ট্রিয়ার একটি পত্রিকা বলেছে, ওই তরুণকে ভেতরে নেওয়ার পর তাঁর সঙ্গে ট্রেনের কর্মীর তীব্র বাগ্‌বিতণ্ডা হয়।

অস্ট্রিয়ান রেলের (ওবিবি) একজন মুখপাত্র বলেন, এ কাণ্ডের কারণে ট্রেনটি নির্ধারিত সময়ের চেয়ে সাত মিনিট বিলম্বে ভিয়েনা পৌঁছায়।

ওই মুখপাত্র এএফপিকে আরও বলেন, ‘এটি দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ; এ ধরনের ঘটনা সাধারণত মৃত্যুর মধ্য দিয়েই শেষ হয়। আর আপনি এতে শুধু নিজেকেই বিপদে ফেলছেন না; যদি ট্রেনের নিচে চলে যান, তখন উদ্ধারকর্মী, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস—সবাইকে আসতে হবে।’

সৌভাগ্যক্রমে ওই তরুণ প্রাণে বেঁচে গেলেও গ্রেপ্তার এড়াতে পারেননি। পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ট র নট

এছাড়াও পড়ুন:

যাত্রীবেশে উঠে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের চেষ্টা, চালককে গলা কেটে খুন

ফেনীর সোনাগাজীতে গলা কেটে এক অটোরিকশাচালককে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল রোববার রাতে উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের পশ্চিম চরদরবেশ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির নাম মনোরঞ্জন ভূঞা (৬৫)। তিনি চরচান্দিয়া ইউনিয়নের ভূঞা বাজার-সংলগ্ন কলাবাগান এলাকার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।

পুলিশ ও নিহত মনোরঞ্জনের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার রাত ৯টার দিকে সোনাগাজী পৌর শহর থেকে ছোট ফেনী নদীর সাহেবের ঘাট সেতুর ওপর যাওয়ার কথা বলে কয়েকজন যুবক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাটি ভাড়া করেন। অটোরিকশা সাহেবের ঘাট সেতু পার হলে রিকশায় থাকা যুবকেরা গাড়ি থামিয়ে চালককে মারধর করে গাড়িটি ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেন। এতে চালক মনোরঞ্জন ছিনতাইকারীদের বাধা দিলে তাঁকে ধারালো ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে খালের পাশে গাড়িসহ ফেলে পালিয়ে যান তাঁরা।

রাতে স্থানীয় লোকজন খালের পাশে রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।

নিহত ব্যক্তির প্রতিবেশী মহিন উদ্দিন বলেন, মনোরঞ্জন দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। সপ্তাহখানেক আগে কিস্তিতে নতুন একটি অটোরিকশা কেনেন। ধারণা করা হচ্ছে, নতুন অটোরিকশাটি ছিনতাই করতে ব্যর্থ হয়ে তাঁকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।

সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম বলেন, মরদেহটি ফেনীর সোনাগাজী-কোম্পানীগঞ্জ সীমান্তের খালের মধ্যে পাওয়া যাওয়ায় দুই থানার পুলিশ যৌথভাবে ঘটনাস্থলে কাজ করছে। হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটনে পুলিশের একাধিক দল মাঠে কাজ করছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ