আমরা নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)–সংক্রান্ত ছোটখাটো ও শব্দগত পরিবর্তন মিলিয়ে সম্ভবত ১১৭টি সুপারিশ দিয়েছিলাম। তার মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল। যেমন নির্বাচন বাতিলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ক্ষমতা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা, সশস্ত্র বাহিনীকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত করা, ইভিএম বাতিল করা; এগুলো ইসি তাদের সভায় অনুমোদন করেছে। এগুলো ইতিবাচক। বিশেষ করে নির্বাচন বাতিলে ইসির ক্ষমতা ফিরিয়ে আনা এবং সশস্ত্র বাহিনীকে আইনে সংজ্ঞাভুক্ত করা হলে এটা ব্যাপক পরিবর্তন হবে। আরপিও সংশোধনের ক্ষেত্রে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের যেসব সুপারিশ ছিল এবং ইসি যতটুকু গ্রহণ করেছে, তাতে আমি ৮০ শতাংশ সন্তুষ্ট।

সংস্কার কমিশনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব ছিল ‘না’ ভোটের বিধান যুক্ত করা। যতটুকু জেনেছি, ইসি সিদ্ধান্ত নিয়েছে—শুধু যে আসনে একক প্রার্থী থাকবে, সেখানে ‘না’ ভোটের ব্যবস্থা থাকবে। আমার মনে হচ্ছে, এটা একধরনের অসামঞ্জস্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত। কারণ, ধরুন আমি যে আসনের ভোটার, সে আসনে পাঁচজন প্রার্থী থাকতে পারেন। আমার একজনকেও পছন্দ না, তখন আমি ‘না’ ভোট খুঁজব। এটা আমার অধিকার। এদিক থেকে ইসির সিদ্ধান্তটা আমার কাছে মনে হয় অসামঞ্জস্যপূর্ণ। আমার জানামতে এ রকম ‘না’ ভোটের বিধান পৃথিবীর কোথাও নেই। যেখানে ‘না’ ভোট আছে, সেখানে সব ক্ষেত্রেই আছে।

সশস্ত্র বাহিনীকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত করার ফল খুব ইতিবাচক হবে বলে আশা করা যায়। এটা একটি বড় পরিবর্তন হবে। কারণ, সেনাবাহিনীর ওপর মানুষের আস্থা বেশি। সেনাবাহিনীর উপস্থিতিই ভোটারদের মধ্যে একধরনের আস্থা তৈরি করে। এখন নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের বাধ্যবাধকতা নেই। এখন এটা আইনের অংশ হয়ে যাবে। আগামী জাতীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমার কাছে যেটা মনে হয় সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ। এ ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীকে কাজে লাগাতে হবে।

জোটবদ্ধ নির্বাচন করলেও দলগুলোকে নিজ নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিতে হবে, এটা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ছিল। কমিশন এটি গ্রহণ করেছে। ছোট দলের প্রার্থী যখন বড় দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করেন, তখন বড় দলের প্রতীক ব্যবহার করেন। ভোট পাওয়ার জন্য এভাবে অন্য দলের প্রতীক ব্যবহার করাটা অনৈতিক।

সংস্কার কমিশনের আরেকটি প্রস্তাব ছিল, কোনো আসনে ৪০ শতাংশ ভোট না পড়লে সেখানে পুনর্নির্বাচন দিতে হবে। সম্ভবত নির্বাচন কমিশন এটা গ্রহণ করেনি। আমি মনে করি, নির্বাচন কমিশনের এটি পুনর্বিবেচনা করা উচিত।

আবদুল আলীম, সদস্য, সাবেক নির্বাচনব্যবস্থা

সংস্কার কমিশন

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সশস ত র ব হ ন দল র প র ব যবস থ ক ত কর

এছাড়াও পড়ুন:

পর্যটকে পরিপূর্ণ কুয়াকাটা

দুর্গাপূজা ও সাপ্তাহিক ছুটির তৃতীয় দিন শুক্রবার (৩ অক্টোবর) পর্যটকে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে পটুয়াখালীর পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা। ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ সৈকতের তিন নদীর মোহনা, লেম্বুর বন, শুটকি পল্লী, ঝাউবাগান, গঙ্গামতি, চর গঙ্গামতি ও লাল কাঁকড়ার চড়ে এখন পর্যটকদের সরব উপস্থিতি। তাদের নিরাপত্তায় তৎপর রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, আগত পর্যটকরা সৈকতের বালিয়াড়িতে উচ্ছ্বাসে মেতেছেন। তাদের অনেকে সমুদ্রের ঢেউয়ে গা ভিজিয়ে এবং ওয়াটর বাইকে চড়ে আনন্দ করছেন। অনেকে আবার সৈকতের বেঞ্চিতে বসে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। পর্যটকদের কেউ কেউ মোটরসাইকেল কিংবা ঘোড়ায় চরে বিভিন্ন পর্যটন স্পট ঘুরে দেখছিলেন। সব মিলিয়ে সৈকতের উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। 

আরো পড়ুন:

চার দিনের ছুটিতে কক্সবাজার রুটে চলবে ‘ট্যুরিস্ট স্পেশাল’ ট্রেন

১ অক্টোবর থেকেই কেওক্রাডং যেতে পারবেন পর্যটকরা, মানতে হবে ৬ নির্দেশনা

পাবনা থেকে আসা হোসেন শহীদ ও সোনিয়া দম্পতি জানান, পূজা ও সরকারি ছুটি থাকায় তারা কুয়াকাটায় এসেছেন। সমুদ্রের ঢেউ উপভোগ করেছেন তারা। এই দম্পতির অভিযোগ, হোটেল ভাড়া কিছুটা বেশি রাখা হয়েছে।  

বরিশালের কাউনিয়া থেকে আসা সম্রাট বলেন, “কয়েকটি পর্যটন স্পট ঘুরে দেখেছি। বৃহস্পিতবার বিকেলে বৃষ্টির মধ্যে লাল কাকড়ার চড়, গঙ্গামতি ও লেম্বুর বন ঘুরেছি। দারুন এক অনুভূতি হয়েছে।”

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, “পর্যটকদের নিরপত্তা নিশ্চিতে আমরা সচেষ্ট রয়েছি। বিভিন্ন পর্যটন স্পটে ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্য মোতায়েন রয়েছে।”

ঢাকা/ইমরান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ