দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউনের পাশাপাশি এবার কারাগারে তাঁর স্ত্রীও
Published: 13th, August 2025 GMT
দক্ষিণ কোরিয়ার কারাবন্দী সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের স্ত্রী কিম কিয়ন হি–কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে শেয়ারবাজারে কারসাজি ও ঘুষ নেওয়াসহ কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার সিউলের আদালতে চার ঘণ্টার শুনানি হয়। এ সময় সাবেক ফার্স্ট লেডি কিম কিয়ন হি তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে তিনি প্রমাণ নষ্ট করে ফেলতে পারেন—এমন আশঙ্কা জানিয়ে আদালত তাঁকে আটক রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
দক্ষিণ কোরিয়ায় সাবেক প্রেসিডেন্টদের বিচার ও কারাদণ্ডের ঘটনা নতুন নয়। তবে দেশটিতে এবারই প্রথম কোনো সাবেক প্রেসিডেন্ট ও তাঁর স্ত্রী দুজনকেই কারাগারে যেতে হলো।
গত বছর প্রেসিডেন্ট থাকাকালে সামরিক আইন জারি করে ক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন ইউন। তাঁর এ পদক্ষেপের বিরুদ্ধে পার্লামেন্ট সদস্যরা সোচ্চার হলে অল্প সময় পরই আদেশ প্রত্যাহার করে নেন তিনি। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরবর্তী সময়ে দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয় এবং তিনি ক্ষমতাচ্যুতও হন। সামরিক আইন জারির ঘটনায় বিচারের মুখোমুখি করতে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইউনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কৌঁসুলিরা বলছেন, ইউনের স্ত্রী ৫২ বছর বয়সী কিম কিয়ন শেয়ারবাজারে কারসাজি করে প্রায় ৮০ কোটি ওন (প্রায় ৫ লাখ ৭৭ হাজার ৯৪০ ডলার) লাভ করেছেন। বিএমডব্লিউর ডয়েচ মোটরস নামের এক পরিবেশকের শেয়ারে এমন কারসাজির ঘটনা ঘটেছে।কৌঁসুলিরা বলছেন, ইউনের স্ত্রী ৫২ বছর বয়সী কিম কিয়ন হি শেয়ারবাজারে কারসাজি করে প্রায় ৮০ কোটি ওন (প্রায় ৫ লাখ ৭৭ হাজার ৯৪০ ডলার) লাভ করেছেন। বিএমডব্লিউর ডয়েচ মোটরস নামের এক পরিবেশকের শেয়ারে এমন কারসাজির ঘটনা ঘটেছে। ওই শেয়ারের দাম কৃত্রিমভাবে বাড়ানো-কমানোর মতো কারসাজিতে তিনি জড়িত ছিলেন।
যেসব বিষয়ে অভিযোগ উঠেছে, তার সব কটিই ঘটেছে কিমের স্বামী ইউন প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে। তবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর পুরো মেয়াদকালেই অভিযোগগুলোর একটি প্রভাব ছিল।
কিমের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, তিনি ব্যবসায়িক সুবিধা দেওয়ার বিনিময়ে বিতর্কিত ইউনিফিকেশন চার্চ থেকে দুটি শ্যানেল ব্যাগ ও একটি হীরার নেকলেস ঘুষ হিসেবে নিয়েছেন। এর বাইরে কিমের বিরুদ্ধে ২০২২ সালের উপনির্বাচন ও গত বছরের সাধারণ নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নে অবৈধ হস্তক্ষেপের অভিযোগও আনা হয়েছে।
ইউন প্রেসিডেন্ট থাকাকালে বিরোধীদের উত্থাপিত তিনটি বিলে ভেটো দিয়েছিলেন। বিলগুলোতে কিমের বিরুদ্ধে বিশেষ তদন্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।মঙ্গলবারের শুনানিতে কিম কালো স্যুট ও স্কার্ট পরে উপস্থিত ছিলেন।
ইউন প্রেসিডেন্ট থাকাকালে বিরোধীদের উত্থাপিত তিনটি বিলে ভেটো দিয়েছিলেন। বিলগুলোতে কিমের বিরুদ্ধে বিশেষ তদন্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।
ইউন সর্বশেষ বিলে ভেটো দিয়েছেন গত বছরের নভেম্বর মাসে, সামরিক আইন জারির এক সপ্তাহ আগে।
চলতি বছরের জুনে ইউনের প্রতিদ্বন্দ্বী লি জে মিউং প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর বিশেষ তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে।
আরও পড়ুনআদালতের হস্তক্ষেপে ক্ষমতাচ্যুত হলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন০৪ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক রস জ ইউন র বছর র র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
ফ্লোটিলা বহরে ভেসে চলা একমাত্র জাহাজ ম্যারিনেট কোথায়
ফিলিস্তিনের গাজা অভিমুখে যাত্রা করা ত্রাণবাহী নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’-এর একটি মাত্র নৌযান এখনো আটক করতে পারেনি ইসরায়েলি বাহিনী। এই নৌযানটি হলো দ্য ম্যারিনেট।
পোল্যান্ডের পতাকাবাহী এই নৌযানে ছয়জন আরোহী রয়েছেন ।
ফ্লোটিলার লাইভ ট্র্যাকার অনুযায়ী, ম্যারিনেট আন্তর্জাতিক জলসীমায় ভেসে চলেছে। এর গতি ঘণ্টায় প্রায় ২.১৬ নট (ঘণ্টায় প্রায় ৪ কিলোমিটার) , গাজার আঞ্চলিক জলসীমা থেকে ম্যারিনেটের দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার।
বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে জাহাজটির ক্যাপ্টেন বলেন, ম্যারিনেটের ইঞ্জিনে সমস্যা হচ্ছিল। এটি এখন সারানো হয়েছে।
ফ্লোটিলা আয়োজকেরা বলছেন, ম্যারিনেট নৌযান এখনো স্টারলিঙ্কের মাধ্যমে সংযুক্ত। এটি যোগাযোগের আওতার মধ্যেই রয়েছে। লাইভস্ট্রিমও সক্রিয় আছে।
ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা জানিয়েছে, অন্য জাহাজগুলো আটক করলেও ম্যারিনেট এখনো ভেসে চলছে।
ম্যারিনেট ফিরে যাবে না বলেও ওই পোস্টে জানানো হয়েছে। পোস্টে বলা হয়েছে, ‘ম্যারিনেট শুধু একটি জাহাজ নয়। ম্যারিনেট হলো ভয়, অবরোধ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে দৃঢ়তা।’
ফ্লোটিলা আয়োজকরা আরও লিখেছেন, ‘গাজা একা নয়।’ ‘ফিলিস্তিনকে কেউ ভুলে যায়নি। আমরা কোথাও যাচ্ছি না।’
ফ্লোটিলা বহরের প্রায় সব নৌযানে থাকা অধিকারকর্মীদের আটক করেছে ইসরায়েল। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সুইডিশ অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। ইসরায়েলের এমন পদক্ষেপকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছে অনেক দেশ। বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভও হয়েছে।
আরও পড়ুনগাজা অভিমুখী নৌবহরে ইসরায়েলি সেনাদের আক্রমণ, ধরে নেওয়া হলো অধিকারকর্মীদের৬ ঘণ্টা আগে